ওসি প্রদীপের স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১২:৫৬:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 173
টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় তার জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রদীপের স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক।

এর আগে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের প্রদীপকে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম আদালতে আনা হয়। গত ২৬ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম ২ এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক জানান, সাবেক ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জন ও অন্যকে হস্তান্তর ও ৪৯ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৭ টাকা অর্জিত সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে আদালতে। শুনানি শেষে অভিযোগপত্র গ্রহণের আদেশ দেন আদালত। ওসি প্রদীপের পক্ষ থেকে জামিন আবেদন করা হয়েছে। আদালত প্রদীপের জামিন নামঞ্জুর করেছেন।

গত ২৯ জুন দুপুরে চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ ও মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি প্রদীপ কুমার দাশের অবৈধ সম্পদ দেখভালের দায়িত্ব কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে দেন।

গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রদীপ-চুমকির মালিকানায় থাকা চার কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে চার কোটি ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৭৯ টাকার সম্পদ অর্জন করে স্ত্রীর নামে হস্তান্তর ও স্থানান্তরের অভিযোগে দুদক তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় তার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজারের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রদীপসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এরপর অসুস্থতার কথা বলে থানা থেকে ছুটি নিয়ে চলে যান প্রদীপ। তিনি চট্টগ্রামে আত্মগোপনে থাকেন। সেখান থেকে ৬ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। তারপর থেকে প্রদীপ কারাগারে আছেন।

সিনহা হত্যা মামলায় প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে রোববার অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের নির্দেশে প্রদীপ, তার স্ত্রী, কক্সবাজারের পুলিশ সুপারসহ আটজনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে।

গত ২৩ আগস্ট দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এজাহারে বলা হয়, প্রদীপের বাবা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) একজন নিরাপত্তাপ্রহরী ছিলেন। ১৯৯৫ সালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে যোগ দেন প্রদীপ। ২০০২ সাল থেকে তার সম্পদগুলো দৃশ্যমান হতে থাকে। নানা কারণে তিনি আলোচিত হতে থাকেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ওসি প্রদীপের স্ত্রীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি

আপডেট : ১২:৫৬:০৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১
টেকনাফ মডেল থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশের বিরুদ্ধে অবৈধ সম্পদ অর্জনে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলায় তার জামিন নামঞ্জুর করেছেন আদালত। একইসঙ্গে প্রদীপের স্ত্রী চুমকির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।

বুধবার দুপুরে চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত এই আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক।

এর আগে দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটের প্রদীপকে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রাম আদালতে আনা হয়। গত ২৬ জুলাই দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সমন্বিত জেলা কার্যালয় চট্টগ্রাম ২ এর সহকারী পরিচালক মো. রিয়াজ উদ্দিন অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

দুদকের আইনজীবী মাহমুদুল হক জানান, সাবেক ওসি প্রদীপ ও তার স্ত্রী চুমকি বিরুদ্ধে ২ কোটি ৩৫ লাখ ৯৮ হাজার ৪১৭ টাকার জ্ঞাত আয়বর্হিভূত সম্পদ অর্জন ও অন্যকে হস্তান্তর ও ৪৯ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৭ টাকা অর্জিত সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে আদালতে। শুনানি শেষে অভিযোগপত্র গ্রহণের আদেশ দেন আদালত। ওসি প্রদীপের পক্ষ থেকে জামিন আবেদন করা হয়েছে। আদালত প্রদীপের জামিন নামঞ্জুর করেছেন।

গত ২৯ জুন দুপুরে চট্টগ্রামের সিনিয়র স্পেশাল জজ ও মহানগর দায়রা জজ শেখ আশফাকুর রহমানের আদালত অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার আসামি প্রদীপ কুমার দাশের অবৈধ সম্পদ দেখভালের দায়িত্ব কক্সবাজার ও চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসককে দেন।

গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আবেদনের প্রেক্ষিতে প্রদীপ-চুমকির মালিকানায় থাকা চার কোটি টাকার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ অবরুদ্ধ করার আদেশ দেন আদালত। প্রদীপ ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে চার কোটি ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৭৯ টাকার সম্পদ অর্জন করে স্ত্রীর নামে হস্তান্তর ও স্থানান্তরের অভিযোগে দুদক তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছিল।

উল্লেখ্য, গত বছরের ৩১ জুলাই টেকনাফের বাহারছড়া তল্লাশি চৌকিতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান। এ ঘটনায় তার বোন শারমিন শাহরিয়া ফেরদৌস বাদী হয়ে কক্সবাজারের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে প্রদীপসহ ৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এরপর অসুস্থতার কথা বলে থানা থেকে ছুটি নিয়ে চলে যান প্রদীপ। তিনি চট্টগ্রামে আত্মগোপনে থাকেন। সেখান থেকে ৬ আগস্ট কক্সবাজার আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন তিনি। তারপর থেকে প্রদীপ কারাগারে আছেন।

সিনহা হত্যা মামলায় প্রদীপসহ ১৫ আসামির বিরুদ্ধে রোববার অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দিয়েছেন আদালত। বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের নির্দেশে প্রদীপ, তার স্ত্রী, কক্সবাজারের পুলিশ সুপারসহ আটজনের ব্যাংক হিসাব স্থগিত করা হয়েছে।

গত ২৩ আগস্ট দুদক চট্টগ্রামের সহকারী পরিচালক রিয়াজ উদ্দিন বাদী হয়ে প্রদীপ ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে মামলা করেন।

এজাহারে বলা হয়, প্রদীপের বাবা চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (চউক) একজন নিরাপত্তাপ্রহরী ছিলেন। ১৯৯৫ সালে উপ-পরিদর্শক (এসআই) পদে যোগ দেন প্রদীপ। ২০০২ সাল থেকে তার সম্পদগুলো দৃশ্যমান হতে থাকে। নানা কারণে তিনি আলোচিত হতে থাকেন।