সাবেক ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে হত্যার প্রতিবাদে উত্তাল জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়
- আপডেট : ০৬:৪১:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪
- / 35
এছাড়া শামীম মোল্লাকে মারধরে মৃত্যুকে বিচারবহির্ভূত হত্যা উল্লেখ করে বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিক্ষোভ করেছেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বিক্ষোভ করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। বেলা ১১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মহুয়া মঞ্চ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি বের করা হয়। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক ঘুরে নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এরপর সেখানে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে বুধবার দিবাগত রাত ২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বটতলা এলাকা থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন শিক্ষার্থীরা। মিছিলটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। এছাড়াও বৃহষ্পতিবার সকাল থেকেই মব কিলিং বন্ধে একুশের পদদেশে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করে শিক্ষার্থীরা।
বিক্ষোভ মিছিলে শিক্ষার্থীদের ‘মব কিলিং মানি না, মানব না’, ‘বিচারবহির্ভূত হত্যা, মানি না মানব না’, ‘আমার ক্যাম্পাসে হত্যা কেন, প্রশাসন জবাব চাই’, ‘মব জাস্টিসে মৃত্যু হয়, মরার পরে বিচার নাই’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৪৭ ব্যাচের শিক্ষার্থী প্রাপ্তি তাপসী বলেন, আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা স্পষ্টভাবে বলতে চাই, আমরা বিচারবহির্ভূত যেকোনো হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে। কেউ যদি অপরাধ করে, তাহলে তাকে রাষ্ট্রীয় আইনে শাস্তি দেয়া হোক, কিন্তু কাউকে বিচারবহির্ভূতভাবে পিটিয়ে মেরে ফেলাকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সমর্থন করে না।’
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘আমাদের ক্যাম্পাসে যে ঘটনাটি ঘটল, ছাত্রলীগের একজন সাবেক নেতাকে দুই দফায় গণপিটুনি দেয়া হলো এবং এর ফলে তার মৃত্যু হলো। এটা কখনওই কাম্য নয়।
জানা গেছে, ১৮ সেপ্টেম্বর বুধবার রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের জয় বাংলা ফটকের কাছ থেকে শামীম আহমেদ মোল্লাকে ধরে গণপিটুনি দেয় একদল শিক্ষার্থী। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়, গত ১৫ জুলাই রাতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় শামীম মোল্লা জড়িত ছিল।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক শামীম আহমেদ ওরফে শামীম মোল্লাকে ওখানে মারধর করার পর তাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল বডির হাতে তুলে দেয়া হয়। এ সময়ও শামীমকে আরেক দফা মারধোরের অভিযোগ রয়েছে। এরপরে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন তাকে আশুলিয়া থানার পুলিশের কাছে সোপর্দ করে দেয়। রাত ৯টার দিকে তাকে সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক শামীম মোল্লাকে মৃত ঘোষণা করেন।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানায় ভুক্তভোগী পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়েছে শুনা গেলেও আশুলিয়া থানার ডিউটি অফিসার জানান, এসআই অলক সাহেব লাশের সুরতহাল করেছেন। তবে, মামলা হয়েছে মর্মে থানায় কোন তথ্য নেই।
আশুলিয়া থানার এসআই অলক ও ওসি আবু বকর সিদ্দিকীকে মুঠো ফোনে কল করেও এ ব্যাপারে কোন কথা যায়নি।
প্রসঙ্গত, নিহত শামীম মোল্লা আশুলিয়া ইউনিয়নের কাঠগড়া মোল্লাবাড়ীর ইয়াজ উদ্দিন মোল্লার ছেলে। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৯ ব্যাচের সাবেক শিক্ষার্থী ও শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ছিলেন বলে জানা গেছে।