২৫ মার্কিন ধনীর বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০২:৩২:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুন ২০২১
  • / 276
::যুগের কন্ঠ ডেস্ক::

মাস্ক, বাফেট, ব্লুমবার্গ ও বেজোসসহ ২৫ শীর্ষ মার্কিন ধনী কর ফাঁকি দেন বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন নিউজ ওয়েবসাইট প্রপাবলিকা। প্রপাবলিকা ওই অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগের গোপন নথিপত্রকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে শীর্ষ ২৫ মার্কিন ধনী একজন সাধারণ কর্মীর তুলনায় কম কর দেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বছরে যেসব মার্কিন নাগরিক গড়ে ৭০ হাজার ডলার আয় করেন তারা তাদের আয়ের ১৪ শতাংশ কর দিয়ে থাকেন।

প্রপাবলিকার অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত কোনো আয়কর নাকি দেননি অ্যামাজনের মালিক জেফ বেজোস। বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা এলন মাস্ক আয়কর দেননি ২০১৮ সালে। ২০১৫ সালে ৬৮ হাজার ও ২০১৭ সালে ৬৫ হাজার ডলার কর দিয়েছেন মাস্ক।

সাম্প্রতিক সময়ে আয়কর দেননি ব্লুমবার্গের প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল ব্লুমবার্গও। প্রোপাব্লিকা জানিয়েছে, আইআরএসের এক কর্মকর্তার কাছ থেকে এই তথ্য তারা পেয়েছে। যদিও তথ্যদাতার নাম জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি। এই অভিযোগ সামনে আসার পরেই ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে।

আইআরএসের কমিশনার চার্লস রেটিগ বলেছেন, কীভাবে এই তথ্য বাইরে এল সেই বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হবে। কারণ প্রত্যেক মার্কিন নাগরিকের তথ্য গোপন থাকার কথা। এই তথ্য বাইরে আসা সংস্থার পক্ষে ক্ষতিকারক।

এদিকে ওয়ারেন বাফেট ও মাইকেল ব্লুমবার্গ জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট আয়কর দিয়েছেন তারা। তবে বেজোস বা মাস্ক কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে রেটিগ বলেছেন, আইআরএস দাপ্তরিকভাবে ও স্বাধীনভাবেও ওই অনুসন্ধানের ওপর তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।

একই সঙ্গে সিনেটের ফিন্যান্স কমিটির শুনানিতে চার্লস রেটিগ বলেন অনেক মার্কিন কোটিপতি গত কয়েক বছর ধরে কোনো কর দেন না। সিনেট ফিন্যান্স কমিটির চেয়ার ডেমোক্রেট রন ওয়াইডেন বলেছেন এধরনের অনুসন্ধান ধনীদের ব্যাপারে নতুন তথ্য উঠে এসেছে। বাৎসরিক ভিত্তিতে তাদের বিনিয়োগের ওপর একটি কর ধার্য করা উচিত।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেছেন কর নিয়ে এধরনের অনুসন্ধান প্রতিবেদন অবৈধ ও এর তদন্ত চলছে। আমরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি কারণ কোনও ব্যক্তির গোপনীয় সরকারি তথ্যের অননুমোদিত প্রকাশ অবৈধ।

অনুসন্ধান প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে শীর্ষ মার্কিন বিনিয়োগকারী জর্জ সরোস ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল তিন বছর কোনো কর দেননি। আরেক শীর্ষ বিনিয়োগকারী কার্ল আইকান ২০১৬ ও ২০১৭ সালে কোনো কর দেননি। বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের সিইও ওয়ারেন বাফেটের সম্পদ ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে ২৪.৩ বিলিয়ন ডলার কিন্তু তিনি কর দিয়েছেন ২৩.৭ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ওই সময়ে বাফেট কর হিসাবে দিয়েছেন আয়ের মাত্র ০.১ শতাংশ। অ্যামাজন মালিক বেজোসের একই সময়ে সম্পদ বেড়েছে ৯৯ বিলিয়ন ডলার কিন্তু কর দিয়েছে ৯৭৩ মিলিয়ন যা তার আয়ের ০.৯৮ শতাংশ।

প্রতিবেদন বলা হয়, যেসব মার্কিন নাগরিক বছরে ২ থেকে ৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেন তারা গড়ে সাড়ে ২৭ শতাংশ কর দেন। ১৪শ মার্কিন নাগরিক যাদের বছরে আয় ৬৯ মিলিয়ন ডলার তারা তাদের আয়ের ২৩ শতাংশ পর্যন্ত কর দিয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

২৫ মার্কিন ধনীর বিরুদ্ধে কর ফাঁকির অভিযোগ

আপডেট : ০২:৩২:৫১ অপরাহ্ন, বুধবার, ৯ জুন ২০২১
::যুগের কন্ঠ ডেস্ক::

মাস্ক, বাফেট, ব্লুমবার্গ ও বেজোসসহ ২৫ শীর্ষ মার্কিন ধনী কর ফাঁকি দেন বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে মার্কিন নিউজ ওয়েবসাইট প্রপাবলিকা। প্রপাবলিকা ওই অনুসন্ধানে যুক্তরাষ্ট্রের রাজস্ব বিভাগের গোপন নথিপত্রকে সূত্র হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

অনুসন্ধানে দেখা গেছে শীর্ষ ২৫ মার্কিন ধনী একজন সাধারণ কর্মীর তুলনায় কম কর দেন। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বছরে যেসব মার্কিন নাগরিক গড়ে ৭০ হাজার ডলার আয় করেন তারা তাদের আয়ের ১৪ শতাংশ কর দিয়ে থাকেন।

প্রপাবলিকার অনুসন্ধান প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০০৭ থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত কোনো আয়কর নাকি দেননি অ্যামাজনের মালিক জেফ বেজোস। বৈদ্যুতিক গাড়ি নির্মাতা এলন মাস্ক আয়কর দেননি ২০১৮ সালে। ২০১৫ সালে ৬৮ হাজার ও ২০১৭ সালে ৬৫ হাজার ডলার কর দিয়েছেন মাস্ক।

সাম্প্রতিক সময়ে আয়কর দেননি ব্লুমবার্গের প্রতিষ্ঠাতা মাইকেল ব্লুমবার্গও। প্রোপাব্লিকা জানিয়েছে, আইআরএসের এক কর্মকর্তার কাছ থেকে এই তথ্য তারা পেয়েছে। যদিও তথ্যদাতার নাম জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি। এই অভিযোগ সামনে আসার পরেই ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে।

আইআরএসের কমিশনার চার্লস রেটিগ বলেছেন, কীভাবে এই তথ্য বাইরে এল সেই বিষয়ে তদন্ত করে দেখা হবে। কারণ প্রত্যেক মার্কিন নাগরিকের তথ্য গোপন থাকার কথা। এই তথ্য বাইরে আসা সংস্থার পক্ষে ক্ষতিকারক।

এদিকে ওয়ারেন বাফেট ও মাইকেল ব্লুমবার্গ জানিয়েছেন, নির্দিষ্ট আয়কর দিয়েছেন তারা। তবে বেজোস বা মাস্ক কোনো মন্তব্য করতে চাননি। তবে রেটিগ বলেছেন, আইআরএস দাপ্তরিকভাবে ও স্বাধীনভাবেও ওই অনুসন্ধানের ওপর তদন্তের কাজ শুরু হয়েছে। দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা করা হবে বলেও জানান তিনি।

একই সঙ্গে সিনেটের ফিন্যান্স কমিটির শুনানিতে চার্লস রেটিগ বলেন অনেক মার্কিন কোটিপতি গত কয়েক বছর ধরে কোনো কর দেন না। সিনেট ফিন্যান্স কমিটির চেয়ার ডেমোক্রেট রন ওয়াইডেন বলেছেন এধরনের অনুসন্ধান ধনীদের ব্যাপারে নতুন তথ্য উঠে এসেছে। বাৎসরিক ভিত্তিতে তাদের বিনিয়োগের ওপর একটি কর ধার্য করা উচিত।

হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র জেন সাকি বলেছেন কর নিয়ে এধরনের অনুসন্ধান প্রতিবেদন অবৈধ ও এর তদন্ত চলছে। আমরা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছি কারণ কোনও ব্যক্তির গোপনীয় সরকারি তথ্যের অননুমোদিত প্রকাশ অবৈধ।

অনুসন্ধান প্রতিবেদনটিতে আরো বলা হয়েছে শীর্ষ মার্কিন বিনিয়োগকারী জর্জ সরোস ২০১৬ থেকে ২০১৮ সাল তিন বছর কোনো কর দেননি। আরেক শীর্ষ বিনিয়োগকারী কার্ল আইকান ২০১৬ ও ২০১৭ সালে কোনো কর দেননি। বার্কশায়ার হ্যাথওয়ের সিইও ওয়ারেন বাফেটের সম্পদ ২০১৪ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বৃদ্ধি পেয়েছে ২৪.৩ বিলিয়ন ডলার কিন্তু তিনি কর দিয়েছেন ২৩.৭ মিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ ওই সময়ে বাফেট কর হিসাবে দিয়েছেন আয়ের মাত্র ০.১ শতাংশ। অ্যামাজন মালিক বেজোসের একই সময়ে সম্পদ বেড়েছে ৯৯ বিলিয়ন ডলার কিন্তু কর দিয়েছে ৯৭৩ মিলিয়ন যা তার আয়ের ০.৯৮ শতাংশ।

প্রতিবেদন বলা হয়, যেসব মার্কিন নাগরিক বছরে ২ থেকে ৫ মিলিয়ন ডলার আয় করেন তারা গড়ে সাড়ে ২৭ শতাংশ কর দেন। ১৪শ মার্কিন নাগরিক যাদের বছরে আয় ৬৯ মিলিয়ন ডলার তারা তাদের আয়ের ২৩ শতাংশ পর্যন্ত কর দিয়েছেন।