অন্য দেশ সংস্কারে আর যুদ্ধে যাবে না যুক্তরাষ্ট্র, ঘোষণা বাইডেনের

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১২:৪০:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 159
আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘটনাকে বেশ জোরালোভাবে সমর্থন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে অন্য দেশগুলোকে সংস্কার করতে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালানোর যুগেরও সমাপ্তি হলো।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার আফগানিস্তান থেকে দেশে ফিরেন মার্কিন সেনা বাহিনীর সদস্যরা। এর পরই হোয়াইট হাউস থেকে তিনি মার্কিন টেলিভিশনে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যটি সরাসরি সম্প্রচার করে সিএনএনসহ আন্তর্জাতিক বেশ কিছু গণমাধ্যম।

বক্তব্যে জো বাইডেন আফগানিস্তান যুদ্ধ নিয়ে বেশ কিছু ব্যতিক্রম কথা বলেছেন, যা তার আগে কখনো কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হয়তো বলেননি। বাইডেন জানান, দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকা আফগান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে তার জন্য সেনা প্রত্যাহারের চেয়ে ভালো কোনো পথ তার সামনে খোলা ছিল না।

বাইডেন বলেন, ‘আমি এ যুদ্ধকে চিরকাল চালিয়ে যেতে চাই না। সেইসঙ্গে চিরদিন ধরে সেনা সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়ায়ও থাকতে চাই না।’

তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে যা করার জন্য আমরা গিয়েছিলাম, এক দশক আগে তা আমরা করতে পেরেছি। তারপর আমরা আরও একটি দশক সেখানে থেকেছি। এখন যুদ্ধ শেষ করার সময় এসেছে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আফগানিস্তান নিয়ে সিদ্ধান্ত কেবল আফগানিস্তান নিয়েই নয়। এ সিদ্ধান্ত অন্য দেশগুলোকে সংস্কার করতে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের যুদ্ধ না করা নিয়েও।’ বাইডেন স্পষ্ট করেন, যুক্তরাষ্ট্র আর অন্য দেশগুলোর সংস্কারে বড় ধরনের যুদ্ধ করতে যাবে না।

গত ১৫ আগস্ট কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। এর পর থেকে হাজার হাজার আফগান দেশ ছাড়তে বিমানবন্দরে জড়ো হন। এর পর থেকে টানা ১৫ দিন উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে মার্কিন ও ন্যাটো সেনাদের পাশাপাশি এক লাখের বেশি আফগানকে অন্য দেশে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

এ উদ্ধার অভিযান ছিল কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ। বাইডেন বলেন, ‘১ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেবার মাধ্যমে আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিমান পরিবহন সম্পন্ন করেছি। কখনোই কোনো দেশ এ রকম কিছু করেনি।’

বাইডেন বলেন, ‘সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের সব দায়-দায়িত্ব নিচ্ছি। অনেকেই বলছেন, তাড়াহুড়োর কারণেই কী এতোটা অরাজকতা? তাদের বলবো, জুন-জুলাই এর দিকে লাখো মানুষকে সরানো হলেও একই চিত্র দেখতে হতো। এটাই সর্বোত্তম সময় ফিরে আসার।’

তবে শত্রুদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বাইডেন বলেছেন, ‘যারা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে লড়তে আমরা বিশ্রাম নেব না। আমরা তাদের ক্ষমা করবো না, কখনোই ভুলবো না। পৃথিবীর শেষ প্রান্তে গিয়ে হলেও আমরা তাদের শিকার করবো। যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুদের অবশ্যই চূড়ান্ত মূল্য দিতে হবে।’

সোমবার মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ধারকারী শেষ বিমান কাবুল ত্যাগ করে। এরপরই বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। তারা আফগানিস্তানকে স্বাধীন ঘোষণা দিয়ে আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়ে ও আতশবাজি ফুটিয়ে বিজয় উদযাপন করে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

অন্য দেশ সংস্কারে আর যুদ্ধে যাবে না যুক্তরাষ্ট্র, ঘোষণা বাইডেনের

আপডেট : ১২:৪০:৩৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ সেপ্টেম্বর ২০২১
আফগানিস্তান থেকে সেনা প্রত্যাহারের ঘটনাকে বেশ জোরালোভাবে সমর্থন করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। তিনি বলেন, এর মধ্য দিয়ে অন্য দেশগুলোকে সংস্কার করতে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের সামরিক অভিযান চালানোর যুগেরও সমাপ্তি হলো।

আল জাজিরার খবরে বলা হয়, স্থানীয় সময় গত মঙ্গলবার আফগানিস্তান থেকে দেশে ফিরেন মার্কিন সেনা বাহিনীর সদস্যরা। এর পরই হোয়াইট হাউস থেকে তিনি মার্কিন টেলিভিশনে বক্তব্য রাখেন। বক্তব্যটি সরাসরি সম্প্রচার করে সিএনএনসহ আন্তর্জাতিক বেশ কিছু গণমাধ্যম।

বক্তব্যে জো বাইডেন আফগানিস্তান যুদ্ধ নিয়ে বেশ কিছু ব্যতিক্রম কথা বলেছেন, যা তার আগে কখনো কোনো মার্কিন প্রেসিডেন্ট হয়তো বলেননি। বাইডেন জানান, দীর্ঘ সময় ধরে চলতে থাকা আফগান যুদ্ধের অবসান ঘটাতে তার জন্য সেনা প্রত্যাহারের চেয়ে ভালো কোনো পথ তার সামনে খোলা ছিল না।

বাইডেন বলেন, ‘আমি এ যুদ্ধকে চিরকাল চালিয়ে যেতে চাই না। সেইসঙ্গে চিরদিন ধরে সেনা সরিয়ে নেয়ার প্রক্রিয়ায়ও থাকতে চাই না।’

তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানে যা করার জন্য আমরা গিয়েছিলাম, এক দশক আগে তা আমরা করতে পেরেছি। তারপর আমরা আরও একটি দশক সেখানে থেকেছি। এখন যুদ্ধ শেষ করার সময় এসেছে।’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘আফগানিস্তান নিয়ে সিদ্ধান্ত কেবল আফগানিস্তান নিয়েই নয়। এ সিদ্ধান্ত অন্য দেশগুলোকে সংস্কার করতে যুক্তরাষ্ট্রের বড় ধরনের যুদ্ধ না করা নিয়েও।’ বাইডেন স্পষ্ট করেন, যুক্তরাষ্ট্র আর অন্য দেশগুলোর সংস্কারে বড় ধরনের যুদ্ধ করতে যাবে না।

গত ১৫ আগস্ট কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। এর পর থেকে হাজার হাজার আফগান দেশ ছাড়তে বিমানবন্দরে জড়ো হন। এর পর থেকে টানা ১৫ দিন উদ্ধার অভিযান পরিচালনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এতে মার্কিন ও ন্যাটো সেনাদের পাশাপাশি এক লাখের বেশি আফগানকে অন্য দেশে সরিয়ে নেয়া হয়েছে।

এ উদ্ধার অভিযান ছিল কঠিন ও ঝুঁকিপূর্ণ। বাইডেন বলেন, ‘১ লাখ ২০ হাজারের বেশি মানুষকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেবার মাধ্যমে আমরা ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিমান পরিবহন সম্পন্ন করেছি। কখনোই কোনো দেশ এ রকম কিছু করেনি।’

বাইডেন বলেন, ‘সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের সব দায়-দায়িত্ব নিচ্ছি। অনেকেই বলছেন, তাড়াহুড়োর কারণেই কী এতোটা অরাজকতা? তাদের বলবো, জুন-জুলাই এর দিকে লাখো মানুষকে সরানো হলেও একই চিত্র দেখতে হতো। এটাই সর্বোত্তম সময় ফিরে আসার।’

তবে শত্রুদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বাইডেন বলেছেন, ‘যারা যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষতি করতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে লড়তে আমরা বিশ্রাম নেব না। আমরা তাদের ক্ষমা করবো না, কখনোই ভুলবো না। পৃথিবীর শেষ প্রান্তে গিয়ে হলেও আমরা তাদের শিকার করবো। যুক্তরাষ্ট্রের শত্রুদের অবশ্যই চূড়ান্ত মূল্য দিতে হবে।’

সোমবার মধ্যরাতে যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ধারকারী শেষ বিমান কাবুল ত্যাগ করে। এরপরই বিমানবন্দরের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। তারা আফগানিস্তানকে স্বাধীন ঘোষণা দিয়ে আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়ে ও আতশবাজি ফুটিয়ে বিজয় উদযাপন করে।