স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে মন্ত্রীর কোনো কর্তৃত্বই নেই, সংসদে কাজী ফিরোজ
- আপডেট : ১১:২৬:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমাবার, ৭ জুন ২০২১
- / 186
জাতীয় সংসদে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে জাতীয় পার্টির সাংসদ কাজী ফিরোজ রশীদ বলেছেন, আপনি “স্বাস্থ্যমন্ত্রী’ একজন সজ্জন ব্যক্তি। আপনার বাবা আমার সঙ্গে মন্ত্রী ছিলেন। আপনাকে আমি চিনি। অত্যন্ত ধনাঢ্য পরিবারের ছেলে আপনি। কিন্তু স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যা হচ্ছে, আপনার সেখানে কোনো কর্তৃত্বই নেই।
সোমবার জাতীয় সংসদে ২০২০-২১ অর্থবছরের সম্পূরক বাজেটে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মঞ্জুরি দাবি ও ছাঁটাই প্রস্তাবের আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন। এ আলোচনায় অংশ নিয়ে আরও কয়েকজন সাংসদ স্বাস্থ্য খাতের সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, হাসপাতালে অক্সিজেন নেই। এখন দরকার অক্সিজেন। সেটা না এনে আনা হচ্ছে এমআরআই, সিটিস্ক্যান মেশিন। পাঠানো হচ্ছে উপজেলায়। তারা সব সাজিয়ে রেখে দিয়েছে। চালাতে পারে না। লাখো কোটি টাকা যাচ্ছ। কিন্তু জনগণ সেবা পাচ্ছে না।
ফিরোজ রশীদ বলেন, আসলে কথা বলে লাভ কী। কার কথা কে শুনে। আর আমাদের কথা কেউ বিশ্বাসও করে না। এ জন্য কথা বলতেও চাই না।
বিএনপির সংরক্ষিত নারী আসনের সাংসদ রুমিন ফারহানা বলেন, স্বাস্থ্য খাতে অবহেলার মাশুল দিতে হচ্ছে। জিডিপির অন্তত ৫ শতাংশ এই খাতে বরাদ্দ দেয়া উচিত ছিল। দক্ষিণ এশিয়ায় সব দেশে বরাদ্দ বাংলাদেশের চেয়ে অনেক বেশি। ভারত করোনাকালে স্বাস্থ্য খাতে আগের বছরের তুলনায় ১৩৭ শতাংশ বেশি বরাদ্দ দিয়েছে। আর বাংলাদেশে মাত্র ১২ শতাংশ বেড়েছে। আবার যেটুকু বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, তাও ব্যবহার হয়নি।
তিনি বলেন, ১০ মাসে স্বাস্থ্য খাতে এডিপির মাত্র ২৫ শতাংশ ব্যয় হয়েছে। এখন আবার নতুন বরাদ্দ চাইছে। কেন ৭৫ শতাংশ অব্যবহৃত রয়ে গেছে, তার জবাব স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে দিতে হবে।
রুমিন ফারহানা বলেন, প্রধানমন্ত্রী একাধিকবার জেলায় জেলায় আইসিইউ স্থাপন করতে বলেছেন। কিন্তু দেড় বছরে মাত্র ৫টি জেলায় নতুন আইসিইউ স্থাপন করা হয়েছে।
সাংসদদের সমালোচনার জবাবে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক বলেন, স্বাস্থ্যসেবা একটি ব্যাপক কর্মযজ্ঞ। দেড় বছর যাবৎ করোনা চলছে। তারা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ওষুধের কোনো ঘাটতি হয়নি। অক্সিজেনের অভাব কখনোই হয়নি। আমেরিকায় যে চিকিৎসা, এখানেও একই চিকিৎসা হয়েছে। টিকা কার্যক্রম চলমান। এসব কারণে মৃত্যুর হার দেড় শতাংশ। পৃথিবীতে এই হার আড়াই শতাংশ।
তিনি বলেন, ভারতে করোনা বেড়ে যাওয়ায় সেরাম ইনস্টিটিউট টিকা সরবরাহ করতে পারছে না। চীন, রাশিয়া, আমেরিকা থেকে ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইতিমধ্যে চুক্তিও হয়েছে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আরও অনেক টিকা কিনতে হবে। প্রতিটা ব্যক্তির ক্ষেত্রে টিকার জন্য প্রায় ৩ হাজার টাকা করে লাগবে। করোনার সময়ও প্রতিটি ব্যক্তির জন্য সাধারণ শয্যায় চিকিৎসা নিতে ১৫ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে। এটা সরকার বহন করেছে। যারা আইসিইউতে ছিল, তাদের জন্য ৫০ হাজার টাকা করে খরচ করেছে।
করোনা মোকাবিলায় বাংলাদেশ খুবই সফলতা দেখিয়েছে দাবি করে তিনি বলেন, এ কারণে জীবনযাত্রা প্রায় স্বাভাবিক।