সুস্থ জাতি গঠনে প্রয়োজন তামাক ও মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ : তথ্যমন্ত্রী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০১:২৩:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১
  • / 333
::নিজস্ব প্রতিবেদক::
‘সুস্থ জাতি গঠনে তামাক ও মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ একান্ত প্রয়োজন’ বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউ মিলনায়তনে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা’ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী একথা বলেন। 
 
আজীবন অধূমপায়ী ড. হাছান বলেন, ‘আমি জীবনে একটি সিগারেটও খাইনি এমনকি একটি টানও দেইনি। আজকে বাংলাদেশে ধূমপানের বিরুদ্ধে সামাজিক ক্যাম্পেইন ও সরকারের আইন প্রণয়নের কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ধূমপায়ীর মোট সংখ্যা বেশি না কমলেও আনুুপাতিক হারে অনেক কমেছে। জনসংখ্যার মাত্র ৩৫ শতাংশ ধূমপানের সাথে যুক্ত, এটি একসময় ৭০ শতাংশের ওপরে ছিল। এটি খুব ভালো দিক। সরকারও এ বিষয়ে আইন করার ফলে আগের মতো প্রকাশ্য স্থানে ধূমপান হয় না। বিমানে, বাসে এবং অনেক অফিসেও যেকোনো জায়গায় ধূমপান নিষিদ্ধ।’ 
 
সাংবাদিক ফোরামগুলো এরকম সামাজিক জনসচেতনতা তৈরিতে এগিয়ে এলে সমাজ উপকৃত হবে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০৪০ সাল নাগাদ দেশকে ধূমপানমুক্ত করার জন্য তামাকবিরোধী আন্দোলনকে আরো বেগবান করা প্রয়োজন। একইসাথে যদি আইনের সংস্কার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রেও আমাদেরকে চিন্তাভাবনা করতে হবে। সুস্থ জাতি গড়ে তুলতে ধূমপান এবং মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। কারণ একজন ধূমপায়ী যেমন তিলে তিলে নিজেকে ধ্বংস করে, একজন মাদকাসক্ত পুরো পরিবারকে ধ্বংস করে। সুতরাং এই ক্যাম্পেইনকে আরো জোরদার করা প্রয়োজন।’
 
ড. হাছান বলেন, ‘এছাড়া, এখনকার আধুনিক আসক্তি হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আসক্তি। আমরা যারা রাজনীতি করি, তাদের সাথে সবাই ছবি তুলতে চায়, ছবির উদ্দেশ্য হচ্ছে এটি ফেইসবুকে দেবে। আমি মনে করি এই সমস্ত বিষয় নিয়েও ক্যাম্পেইন হওয়া প্রয়োজন।’ 
 
এসময় সাংবাদিকতার উৎকর্ষ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শুধুমাত্র দায়িত্বশীল বা ক্ষমতায় যারা আছে তাদের সমালোচনা নয়, সবার সমালোচনা হতে হবে। বিত্ত যখন রাষ্ট্রকে চোখ রাঙ্গায় বা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়,  সেই বিত্ত তখন দুবৃত্ত হয়ে যায়। সেটির বিরুদ্ধেও লিখতে হবে।’ 
 
ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট মাশহুদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইয়াসিনের সঞ্চালনায় সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ডিআরইউ সভাপতি মোরসালিন নোমানী, সাধারণ সম্পাদক মো: মশিউর রহমান, তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ড. সোহেল রেজা চৌধুরী, আহমেদ স্বপন মাহমুদ, জায়েদ সিদ্দিকী, হাসান শাহরিয়ার, আব্দুস সালাম মিয়া, আতাউর রহমান, সাদিয়া রহমান প্রমুখ কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন। 
 
এদিন বিকেলে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু আশার আলো-বীমা দাবি পরিশোধের প্রয়াস’ অনুষ্ঠানে সচিবালয় থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। এসময় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বীমা শিল্পের ভূমিকাকে অগ্রগণ্য বর্ণনা করে মন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও বীমা বিশেষ করে স্বাস্থ্যবীমার ব্যাপকতর প্রসার ঘটা প্রয়োজন। 
 
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. এম. মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব শেখ কবির হোসেন এবং আলোচক হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিবৃন্দ, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্যগণ, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের সভাপতি ও বিভিন্ন বীমা কোম্পানির প্রতিনিধিবৃন্দ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

সুস্থ জাতি গঠনে প্রয়োজন তামাক ও মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ : তথ্যমন্ত্রী

আপডেট : ০১:২৩:৩১ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৬ জুন ২০২১
::নিজস্ব প্রতিবেদক::
‘সুস্থ জাতি গঠনে তামাক ও মাদকমুক্ত সমাজ বিনির্মাণ একান্ত প্রয়োজন’ বলেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। বুধবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি-ডিআরইউ মিলনায়তনে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত ‘তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন সংশোধনের প্রয়োজনীয়তা’ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় মন্ত্রী একথা বলেন। 
 
আজীবন অধূমপায়ী ড. হাছান বলেন, ‘আমি জীবনে একটি সিগারেটও খাইনি এমনকি একটি টানও দেইনি। আজকে বাংলাদেশে ধূমপানের বিরুদ্ধে সামাজিক ক্যাম্পেইন ও সরকারের আইন প্রণয়নের কারণে জনসংখ্যা বৃদ্ধির ফলে ধূমপায়ীর মোট সংখ্যা বেশি না কমলেও আনুুপাতিক হারে অনেক কমেছে। জনসংখ্যার মাত্র ৩৫ শতাংশ ধূমপানের সাথে যুক্ত, এটি একসময় ৭০ শতাংশের ওপরে ছিল। এটি খুব ভালো দিক। সরকারও এ বিষয়ে আইন করার ফলে আগের মতো প্রকাশ্য স্থানে ধূমপান হয় না। বিমানে, বাসে এবং অনেক অফিসেও যেকোনো জায়গায় ধূমপান নিষিদ্ধ।’ 
 
সাংবাদিক ফোরামগুলো এরকম সামাজিক জনসচেতনতা তৈরিতে এগিয়ে এলে সমাজ উপকৃত হবে উল্লেখ করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘২০৪০ সাল নাগাদ দেশকে ধূমপানমুক্ত করার জন্য তামাকবিরোধী আন্দোলনকে আরো বেগবান করা প্রয়োজন। একইসাথে যদি আইনের সংস্কার প্রয়োজন হয়, সেক্ষেত্রেও আমাদেরকে চিন্তাভাবনা করতে হবে। সুস্থ জাতি গড়ে তুলতে ধূমপান এবং মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। কারণ একজন ধূমপায়ী যেমন তিলে তিলে নিজেকে ধ্বংস করে, একজন মাদকাসক্ত পুরো পরিবারকে ধ্বংস করে। সুতরাং এই ক্যাম্পেইনকে আরো জোরদার করা প্রয়োজন।’
 
ড. হাছান বলেন, ‘এছাড়া, এখনকার আধুনিক আসক্তি হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের আসক্তি। আমরা যারা রাজনীতি করি, তাদের সাথে সবাই ছবি তুলতে চায়, ছবির উদ্দেশ্য হচ্ছে এটি ফেইসবুকে দেবে। আমি মনে করি এই সমস্ত বিষয় নিয়েও ক্যাম্পেইন হওয়া প্রয়োজন।’ 
 
এসময় সাংবাদিকতার উৎকর্ষ বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘শুধুমাত্র দায়িত্বশীল বা ক্ষমতায় যারা আছে তাদের সমালোচনা নয়, সবার সমালোচনা হতে হবে। বিত্ত যখন রাষ্ট্রকে চোখ রাঙ্গায় বা আইনকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখায়,  সেই বিত্ত তখন দুবৃত্ত হয়ে যায়। সেটির বিরুদ্ধেও লিখতে হবে।’ 
 
ল’ রিপোর্টার্স ফোরামের প্রেসিডেন্ট মাশহুদুর রহমানের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ ইয়াসিনের সঞ্চালনায় সিনিয়র সাংবাদিক মঞ্জুরুল আহসান বুলবুল, ডিআরইউ সভাপতি মোরসালিন নোমানী, সাধারণ সম্পাদক মো: মশিউর রহমান, তামাক নিয়ন্ত্রণ গবেষক মো. মোস্তাফিজুর রহমান, অধ্যাপক ড. সোহেল রেজা চৌধুরী, আহমেদ স্বপন মাহমুদ, জায়েদ সিদ্দিকী, হাসান শাহরিয়ার, আব্দুস সালাম মিয়া, আতাউর রহমান, সাদিয়া রহমান প্রমুখ কর্মশালায় বক্তব্য রাখেন। 
 
এদিন বিকেলে মুজিববর্ষ উপলক্ষে বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু আশার আলো-বীমা দাবি পরিশোধের প্রয়াস’ অনুষ্ঠানে সচিবালয় থেকে অনলাইনে সংযুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির বক্তৃতা করেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী। এসময় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বীমা শিল্পের ভূমিকাকে অগ্রগণ্য বর্ণনা করে মন্ত্রী বলেন, উন্নত দেশের মতো আমাদের দেশেও বীমা বিশেষ করে স্বাস্থ্যবীমার ব্যাপকতর প্রসার ঘটা প্রয়োজন। 
 
বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান ড. এম. মোশাররফ হোসেনের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স এসোসিয়েশনের সভাপতি জনাব শেখ কবির হোসেন এবং আলোচক হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিবৃন্দ, বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্যগণ, বাংলাদেশ ইন্স্যুরেন্স ফোরামের সভাপতি ও বিভিন্ন বীমা কোম্পানির প্রতিনিধিবৃন্দ অনুষ্ঠানে অংশ নেন।