ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ‘আর্থিক সঙ্কটে’ বিআরটি প্রকল্পে ধীরগতি

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০২:৩০:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুন ২০২১
  • / 193
::গাজীপুর প্রতিনিধি::

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক বলেছেন, আমি যতটুকু জেনেছি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিআরটি প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক সঙ্কটে আছে। তারা টাকা-পয়সা ঠিতমতো দিতে পারছে না। তাই এ প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে চলছে।

তিনি আরো বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি চাইনিজ। বিষয়টি আমি অ্যাম্বাসিকে জানিয়েছি, তাদের সরকার যাতে এ ব্যাপারে একটু নজর দেয়। আমরাও এটাকে সিরিয়াসলি দেখবো।

শনিবার সকালে গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক বিআরটি প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এ সময় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমসহ বিআরটি এবং গাজীপুর মেট্রোপলিটনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

সচিব যানজটের কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার সকাল ১০টায় গাজীপুরে আসার কথা থাকলেও যানজটের কারণে সেখানে তিনি দুপুর সাড়ে ১২টায় পৌঁছান। তিনি বলেন, বিকল্প সড়ক না থাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কটিতে যানজটসহ বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। অতি দ্রুত বিকল্প সড়ক ব্যবস্থা করে মহাসড়কের উন্নয়নের কাজ করতে হবে।

সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, যে কোনভাবেই হোক এ জনদুর্ভোগ অতি দ্রুত দূর করতে হবে। সেজন্য আজকে আমি দুই ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি, দুইদিনের মধ্যে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করে মহাসড়কের সমস্ত রিপিয়ারিং কাজ শেষ করতে। এজন্য দুইজন ঠিকাদারকে বলেছি, এ কাজ ১০ দিনে করতে ৫০ জন করে যদি ৫০০ জনবল লাগে, আপনারা দুইদিনে ওই জনবল লাগিয়ে এ কাজ শেষ করবেন। এতে তারা রাজি হয়েছেন। এ সময়ে তারা অতিরিক্ত লোক লাগিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাটিকে সলিং বা হেরিং বন্ড করে দেবে।

গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল গত বুধবার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছিলেন, গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত রাস্তাটিকে যানজটমুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিআরটি প্রজেক্ট আমাদের উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু ঠিকাদারদের ক্রমাগত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে অনেক বছর ধরে ধীরগতিতে কাজ করায় মানুষের দুর্ভোগের কোনো সীমা নেই, আবার যখন বর্ষাকাল আসে এই দুর্ভোগ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়।

বিআরটি প্রকল্প পরিচালক এএসএম ইলিয়াস শাহ জানান, ২০১২ সালে গাজীপুর থেকে রাজধানীর বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কে গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের আওতায় দেশের প্রথম বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটিএ) প্রকল্প অনুদেন হয়।

সকল প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর ২০১৭ সালে ফিজিক্যালি প্রকল্পের কাজটি শুরু হয়। তখন প্রকল্প ব্যয় ২ হাজার ৪০ কোটি টাকা এবং মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু নানা কারণে ওই সময়ে প্রকল্পটির কাজ শেষ না হওয়ায় তার মেয়াদ ও খরচ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ প্রকল্পটির মেয়াদ হলো ২০২২ সালের জুন মাস। বর্তমানে কাজের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৬০ ভাগ। সব ঠিকঠাক থাকলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন বিআরটি প্রকল্প পরিচালক।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের ‘আর্থিক সঙ্কটে’ বিআরটি প্রকল্পে ধীরগতি

আপডেট : ০২:৩০:০৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৯ জুন ২০২১
::গাজীপুর প্রতিনিধি::

সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ের সেতু বিভাগের সচিব মো. আবু বকর ছিদ্দীক বলেছেন, আমি যতটুকু জেনেছি ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে বিআরটি প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি আর্থিক সঙ্কটে আছে। তারা টাকা-পয়সা ঠিতমতো দিতে পারছে না। তাই এ প্রকল্পের কাজ ধীরগতিতে চলছে।

তিনি আরো বলেন, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি চাইনিজ। বিষয়টি আমি অ্যাম্বাসিকে জানিয়েছি, তাদের সরকার যাতে এ ব্যাপারে একটু নজর দেয়। আমরাও এটাকে সিরিয়াসলি দেখবো।

শনিবার সকালে গাজীপুরে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক বিআরটি প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পরিদর্শনকালে তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

এ সময় গাজীপুর সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমসহ বিআরটি এবং গাজীপুর মেট্রোপলিটনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।

সচিব যানজটের কথা স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, শনিবার সকাল ১০টায় গাজীপুরে আসার কথা থাকলেও যানজটের কারণে সেখানে তিনি দুপুর সাড়ে ১২টায় পৌঁছান। তিনি বলেন, বিকল্প সড়ক না থাকায় ঢাকা-ময়মনসিংহ সড়কটিতে যানজটসহ বিভিন্ন সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। অতি দ্রুত বিকল্প সড়ক ব্যবস্থা করে মহাসড়কের উন্নয়নের কাজ করতে হবে।

সচিব বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদেরকে নির্দেশ দিয়েছেন, যে কোনভাবেই হোক এ জনদুর্ভোগ অতি দ্রুত দূর করতে হবে। সেজন্য আজকে আমি দুই ঠিকাদারকে নির্দেশ দিয়েছি, দুইদিনের মধ্যে দিনরাত ২৪ ঘণ্টা কাজ করে মহাসড়কের সমস্ত রিপিয়ারিং কাজ শেষ করতে। এজন্য দুইজন ঠিকাদারকে বলেছি, এ কাজ ১০ দিনে করতে ৫০ জন করে যদি ৫০০ জনবল লাগে, আপনারা দুইদিনে ওই জনবল লাগিয়ে এ কাজ শেষ করবেন। এতে তারা রাজি হয়েছেন। এ সময়ে তারা অতিরিক্ত লোক লাগিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত রাস্তাটিকে সলিং বা হেরিং বন্ড করে দেবে।

গাজীপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল গত বুধবার তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে বলেছিলেন, গাজীপুর চৌরাস্তা থেকে এয়ারপোর্ট পর্যন্ত রাস্তাটিকে যানজটমুক্ত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিআরটি প্রজেক্ট আমাদের উপহার দিয়েছিলেন। কিন্তু ঠিকাদারদের ক্রমাগত দায়িত্বজ্ঞানহীনতার কারণে অনেক বছর ধরে ধীরগতিতে কাজ করায় মানুষের দুর্ভোগের কোনো সীমা নেই, আবার যখন বর্ষাকাল আসে এই দুর্ভোগ কয়েকগুণ বৃদ্ধি পায়।

বিআরটি প্রকল্প পরিচালক এএসএম ইলিয়াস শাহ জানান, ২০১২ সালে গাজীপুর থেকে রাজধানীর বিমানবন্দর পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার সড়কে গ্রেটার ঢাকা সাসটেইনেবল আরবান ট্রান্সপোর্ট প্রজেক্টের আওতায় দেশের প্রথম বাস র‍্যাপিড ট্রানজিট (বিআরটিএ) প্রকল্প অনুদেন হয়।

সকল প্রক্রিয়া সম্পন্নের পর ২০১৭ সালে ফিজিক্যালি প্রকল্পের কাজটি শুরু হয়। তখন প্রকল্প ব্যয় ২ হাজার ৪০ কোটি টাকা এবং মেয়াদ ধরা হয়েছিল ২০১৬ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। কিন্তু নানা কারণে ওই সময়ে প্রকল্পটির কাজ শেষ না হওয়ায় তার মেয়াদ ও খরচ বাড়ানো হয়। সর্বশেষ প্রকল্পটির মেয়াদ হলো ২০২২ সালের জুন মাস। বর্তমানে কাজের অগ্রগতি হয়েছে প্রায় ৬০ ভাগ। সব ঠিকঠাক থাকলে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কাজ শেষ হবে বলে আশা করছেন বিআরটি প্রকল্প পরিচালক।