এবার ‘রাজনীতিমুক্ত’ হেফাজত গঠনে বাবুনগরী

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১০:৫৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমাবার, ৩১ মে ২০২১
  • / 191

জুনায়েদ বাবুনগরী। ফাইল ছবি।

::নিজস্ব প্রতিবেদক::

নানান প্রতিকূলতা পেরিয়ে জুনায়েদ বাবুনগরী পন্থিরা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশকে রাজনৈতিক দলের প্রভাবমুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছেন। হেফাজতে যারা সক্রিয় রাজনীতি করে তাদেরকে বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আনতে চলেছেন হেফাজতের আমির ও হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক জুনায়েদ বাবুনগরী।

হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ পর্যায়ের কমপক্ষে ৩০ নেতা আটক হয়েছেন গত একমাসে। রাজনৈতিক পদে আছেন এমন নেতাদের বাদ দিয়ে খসড়া একটি কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। রোববার এ কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা আর হয়নি। বাবুনগরীর তৈরি করা খসড়া কমিটি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না কোনো নেতা।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জুনায়েদ বাবুনগরীর অনুসারী এক নেতা বলেন, বিতর্কিত নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ৩০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়। দলীয় পদে আছেন এমন কাউকে খসড়া কমিটিতে রাখা হয়নি।

জানা গেছে, ইসলামী দলগুলোর বলয়ে থাকা হেফাজতে ইসলামকে রাজনৈতিক রাহুমুক্ত করতে দীর্ঘদিন ধরে নানামুখী চাপ ছিল। সংকটে থাকা হেফাজতে ইসলামকে ফের রাজনৈতিক মুক্ত করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলে চাপে পড়ে তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটিকে ভেঙে আংশিক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেন বাবুনগরী অনুসারীরা।

৩০ সদস্যের খসড়া কমিটিতে জুনায়েদ বাবুনগরী আমির, মাওলানা নুর ইসলাম জিহাদীকে মহাসচিব এবং আল্লামা মহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রাখা হয়। কমিটিতে মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, মুফতি মোবারক উল্লাহ (বি-বাড়িয়া), মাওলানা আনাসসহ (ভোলা) কয়েকজনকে নায়েবে আমির হিসেবে রাখা হয়।

ওই কমিটি থেকে বাদ যাচ্ছেন সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মানুনুল হক, নাছির উদ্দিন মুনির, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, কেন্দ্রীয় নেতা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, মীর ইদ্রিস, মুফতি হারুন ইজহারসহ নানা ইস্যুতে বিতর্কে জড়িয়ে পড়া হেফাজতের নেতারা। একইভাবে বাদ যাচ্ছেন আল্লামা আহমদ শফীর হত্যা মামলার অভিযুক্ত নেতারাও।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হেফাজতে ইসলামের এক নেতা বলেন, সর্বশেষ কমিটি নিয়ে বাবুনগরী বেশ বেকায়দায় ছিলেন। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে ওই কমিটি বিলুপ্ত করে। নতুন কমিটি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে নানামুখী চাপে রয়েছেন বাবুনগরী। তাই রাজনৈতিক পদধারী নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করছেন হেফাজতের বাবুনগরী অনুসারীরা।

নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন এর আমির জুনাইদ বাবুনগরী। ২৫ এপ্রিল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের পরামর্শক্রমে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হইল। নতুন একটি আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলেও সেসময় জানান তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

এবার ‘রাজনীতিমুক্ত’ হেফাজত গঠনে বাবুনগরী

আপডেট : ১০:৫৩:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমাবার, ৩১ মে ২০২১

::নিজস্ব প্রতিবেদক::

নানান প্রতিকূলতা পেরিয়ে জুনায়েদ বাবুনগরী পন্থিরা হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশকে রাজনৈতিক দলের প্রভাবমুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করতে যাচ্ছেন। হেফাজতে যারা সক্রিয় রাজনীতি করে তাদেরকে বাদ দিয়ে নতুন নেতৃত্ব আনতে চলেছেন হেফাজতের আমির ও হাটহাজারী মাদ্রাসার শিক্ষা পরিচালক জুনায়েদ বাবুনগরী।

হেফাজতে ইসলামের শীর্ষ পর্যায়ের কমপক্ষে ৩০ নেতা আটক হয়েছেন গত একমাসে। রাজনৈতিক পদে আছেন এমন নেতাদের বাদ দিয়ে খসড়া একটি কমিটিও তৈরি করা হয়েছে। রোববার এ কমিটি ঘোষণার কথা থাকলেও শেষ মুহূর্তে তা আর হয়নি। বাবুনগরীর তৈরি করা খসড়া কমিটি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে চান না কোনো নেতা।

তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জুনায়েদ বাবুনগরীর অনুসারী এক নেতা বলেন, বিতর্কিত নেতাদের বাদ দিয়ে কমিটি গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ৩০ সদস্যবিশিষ্ট কমিটির খসড়া তালিকা তৈরি করা হয়। দলীয় পদে আছেন এমন কাউকে খসড়া কমিটিতে রাখা হয়নি।

জানা গেছে, ইসলামী দলগুলোর বলয়ে থাকা হেফাজতে ইসলামকে রাজনৈতিক রাহুমুক্ত করতে দীর্ঘদিন ধরে নানামুখী চাপ ছিল। সংকটে থাকা হেফাজতে ইসলামকে ফের রাজনৈতিক মুক্ত করার জন্য সরকারের পক্ষ থেকে বলা হলে চাপে পড়ে তা বাস্তবায়নে উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে বর্তমান আহ্বায়ক কমিটিকে ভেঙে আংশিক কমিটি গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করেন বাবুনগরী অনুসারীরা।

৩০ সদস্যের খসড়া কমিটিতে জুনায়েদ বাবুনগরী আমির, মাওলানা নুর ইসলাম জিহাদীকে মহাসচিব এবং আল্লামা মহিবুল্লাহ বাবুনগরীকে প্রধান উপদেষ্টা হিসেবে রাখা হয়। কমিটিতে মাওলানা সালাউদ্দিন নানুপুরী, অধ্যক্ষ মিজানুর রহমান, মুফতি মোবারক উল্লাহ (বি-বাড়িয়া), মাওলানা আনাসসহ (ভোলা) কয়েকজনকে নায়েবে আমির হিসেবে রাখা হয়।

ওই কমিটি থেকে বাদ যাচ্ছেন সদ্য বিলুপ্ত কমিটির যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মানুনুল হক, নাছির উদ্দিন মুনির, সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী, কেন্দ্রীয় নেতা জাকারিয়া নোমান ফয়জী, মীর ইদ্রিস, মুফতি হারুন ইজহারসহ নানা ইস্যুতে বিতর্কে জড়িয়ে পড়া হেফাজতের নেতারা। একইভাবে বাদ যাচ্ছেন আল্লামা আহমদ শফীর হত্যা মামলার অভিযুক্ত নেতারাও।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হেফাজতে ইসলামের এক নেতা বলেন, সর্বশেষ কমিটি নিয়ে বাবুনগরী বেশ বেকায়দায় ছিলেন। একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে ওই কমিটি বিলুপ্ত করে। নতুন কমিটি রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রাখতে নানামুখী চাপে রয়েছেন বাবুনগরী। তাই রাজনৈতিক পদধারী নেতাদের বাদ দিয়ে নতুন কমিটি গঠন করছেন হেফাজতের বাবুনগরী অনুসারীরা।

নানা আলোচনা-সমালোচনার মধ্যে হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করেন এর আমির জুনাইদ বাবুনগরী। ২৫ এপ্রিল এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশ-এর কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গের পরামর্শক্রমে বর্তমান কেন্দ্রীয় কমিটি বিলুপ্ত ঘোষণা করা হইল। নতুন একটি আহ্বায়ক কমিটির মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালিত হবে বলেও সেসময় জানান তিনি।