মাথাপিছু আয়ে বঙ্গবন্ধুকে ছুঁয়েছেন শেখ হাসিনা
- আপডেট : ১২:৫৮:৩২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২ সেপ্টেম্বর ২০২১
- / 179
মঙ্গলবার রাতে মাথাপিছু আয়ে বঙ্গবন্ধুর যুগান্তকারী অর্জন নিয়ে গবেষণা ফলাফল প্রকাশ করে আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা উপ-কমিটি।
উপ-কমিটি আয়োজিত ‘মাথাপিছু আয়ে বঙ্গবন্ধু সরকারের যুগান্তকারী সাফল্য: গবেষণা ফলাফল প্রকাশনা’ শীর্ষক ওয়েবিনারে ৯ পৃষ্ঠার গবেষণা ফলাফল তুলে ধরা হয়। গবেষণাপত্র তুলে ধরেন আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ।
গবেষণায় বলা হয়, মুক্তিযুদ্ধের পর ১৯৭২ সালে মাথাপিছু আয় ছিল মাত্র ৯৪ মার্কিন ডলার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালে মাথাপিছু আয় ২৭৮ ডলারে উন্নীত করেছিলেন। মাত্র সাড়ে ৩ বছরে কোনো দেশের মাথাপিছু আয় তিন গুণবৃদ্ধি পাওয়ার নজীর পৃথিবীতে বিরল।
গবেষণায় দেখা যায়, ১৯৭৩ সালে মাথাপিছু আয় বৃদ্ধির হার ছিল ২৬.৬৮%। ১৯৭২ সালের ২৯.৩৩% ঋণাত্মক হার বিবেচনায় ১৯৭৩ সালে প্রকৃতপক্ষে এই বৃদ্ধির হার ছিল ৫৬.৬৮%। ১৯৭৪ সালে বৃদ্ধির হার ছিল ৫২.২৪% এবং ১৯৭৫ সালে বৃদ্ধির হার ছিল ৫২.৪৯%।
বঙ্গবন্ধু সরকারের ১৯৭৫ সালের ২৭৮ ডলার মাথাপিছু আয়ের বেঞ্চমার্ক ২০২১ সালের পূর্বে বাংলাদেশের কোনো সরকার অতিক্রম করতে পারেনি। বরং জিয়াউর রহমান, হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং খালেদা জিয়ার দুই মেয়াদে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয়ের প্রবৃদ্ধি ভারত ও পাকিস্তান থেকে কম ছিল। ২০২১ সালের পূর্বে একমাত্র বঙ্গবন্ধু সরকারের মাথাপিছু আয় প্রবৃদ্ধি দক্ষিণ এশিয়ায় সর্বোচ্চ ছিল।
গবেষণায় আরো বলা হয়, ২০২১ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তীর উদযাপনের মধ্যে বঙ্গবন্ধু সরকারের ১৯৭৫ সালের ২৭৮ ডলারের বেঞ্চমার্ক ছুঁতে পেরেছিলেন তারই কন্যা শেখ হাসিনা। ১৯৭৫ সালে মাথাপিছু আয়ের ভিত্তিতে বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশের অর্থনীতিকে দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ অর্থনীতিতে পরিণত করেছিলেন। ২০২১ সালে তারই কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে আবার দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ অর্থনীতি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন।
গবেষণা অনুযায়ী, বাংলাদেশের ইতিহাসে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার একবারই ৯ শতাংশ অতিক্রম করেছিল, ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু সরকারের সময়। সেবছর প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৯.৫৯%। বঙ্গবন্ধুর পর বাংলাদেশের ইতিহাসে জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৮ শতাংশ অতিক্রম করেছিল ২০১৯ সালে তারই কন্যা শেখ হাসিনার সরকারের সময়ে। ওই বছর জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৮.১৫%।
গবেষণা আরো বলছে, খালেদা জিয়ার সরকারের প্রথম মেয়াদ শেষে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৩২৯ ডলার। এটি প্রথম মেয়াদের সর্বোচ্চ মাথাপিছু আয় ছিল। খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় মেয়াদ শেষে ২০০৬ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ছিল ৫১০ ডলার। এটি তার দ্বিতীয় মেয়াদের সর্বোচ্চ মাথাপিছু আয় ছিল। ১৯৭৫ সালের বঙ্গবন্ধুর ২৭৮ ডলারের বেঞ্চমার্ক অনুযায়ী ২০০৬ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় থাকা উচিত ছিল ১০৫৪ ডলার। এরসঙ্গে বঙ্গবন্ধু সরকারের মাথাপিছু আয়ের বৃদ্ধির হারের (৫৩.৮০%) দশ ভাগের এক ভাগ অর্থাৎ ৫% বৃদ্ধির হার ধরলে ২০০৬ সালে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় থাকা উচিত ছিল ১৪৮৫ ডলার। বঙ্গবন্ধুর মাথাপিছু আয়ের বেঞ্চমার্ক থেকে খালেদা জিয়ার দ্বিতীয় সরকারের মাথাপিছু আয় ৯৭৫ ডলার কম ছিল।
প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মসিউর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান আলোচক ছিলেন- আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক। সভায় অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলীকুজ্জামান, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক প্রফেসর হেলাল উদ্দিন নিজামী, ইউএনডিপির কান্ট্রি ইকোনোমিস্ট ড. নাজনীন আহমেদ প্রমুখ বক্তব্য দেন।