শনিবার, ১৮ই অক্টোবর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ২রা কার্তিক, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

পুরুষদের পেলভিক ব্যথার চিকিৎসা ও করণীয়

অনলাইন ডেস্ক
অক্টোবর ১৭, ২০২৫ ৩:৪৩ অপরাহ্ণ
Link Copied!

পুরুষদের পেলভিক ব্যথা— যেটা পেটের নিচ, কুঁচকি বা যৌনাঙ্গের আশপাশে অনুভূত হয়— হলেই যে ভয় পাওয়ার কিছু আছে তা নয়। অনেক সময় এটা সামান্য কারণেও হতে পারে, তবে মাঝে মাঝে এটা ভেতরে লুকিয়ে থাকা গুরুতর কোনো সমস্যার ইঙ্গিত দেয়।

তাই সময়মতো কারণ জানা এবং চিকিৎসা নেওয়া খুবই জরুরি।

আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
যদি হঠাৎ ব্যথা শুরু হয়, বা এর সঙ্গে জ্বর, বমি, প্রস্রাবে জ্বালা বা রক্ত আসে— তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যান। নিজে নিজে ওষুধ না খেয়ে সঠিক কারণটা জানা খুব জরুরি।

রোগ ধরা পড়ার উপায় (ডায়াগনোসিস)
ডাক্তার নিচের কয়েকটি পরীক্ষা করতে পারেন:

শারীরিক পরীক্ষা – পেট ও কুঁচকিতে চাপ দিয়ে দেখা হয় ব্যথা বা ফোলাভাব আছে কি না

প্রস্রাব পরীক্ষা – ইনফেকশন, রক্ত বা অন্য সমস্যা আছে কিনা দেখতে

রক্ত পরীক্ষা – সংক্রমণ, কিডনি সমস্যা বা শরীরের অন্য অস্বাভাবিকতা চিহ্নিত করতে

ইমেজিং (সোনোগ্রাফি/CT/MRI) – পেটের ভেতর কোথায় সমস্যা সেটা বিস্তারিত বুঝতে

ঘরোয়া কিছু সহজ উপায়
গরম সেঁক (Hot Compress) – পেটের নিচে হালকা গরম পানি দিয়ে সেঁক দিলে ব্যথা কমতে পারে

হালকা ব্যথার ওষুধ (OTC Painkiller) – যেমন প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন সাময়িক আরাম দিতে পারে

চিকিৎসা নির্ভর করে কোন রোগ হয়েছে তার উপর
অ্যান্টিবায়োটিক – যদি ব্যথার কারণ হয় ইনফেকশন (যেমন UTI, STI বা প্রোস্টেট ইনফেকশন), তখন ডাক্তার অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে থাকেন

প্রেসক্রিপশন ব্যথার ওষুধ – হালকা ওষুধে কাজ না হলে, শক্তিশালী ব্যথানাশক দেওয়া হয়

আলফা-ব্লকার ওষুধ – প্রস্টেট বড় হলে বা প্রস্রাব আটকে গেলে এই ওষুধ সাহায্য করে

কখন অস্ত্রোপচার দরকার হতে পারে?
নিচের সমস্যাগুলোর জন্য অপারেশন লাগতে পারে :

– কিডনি বা ব্লাডার স্টোন

– হার্নিয়া

– অ্যাপেন্ডিসাইটিস

– ইউরেথ্রার ব্লক বা সংকোচন

– ভ্যাসেকটমির পর দীর্ঘমেয়াদি ব্যথা (PVPS)

– পেটের ভেতরের দাগ বা জোড়া (Adhesion)

বিশেষ থেরাপি
পেলভিক ফ্লোর ফিজিওথেরাপি – যারা দীর্ঘদিন ধরে ব্যথায় ভুগছেন বা নার্ভ সংক্রান্ত সমস্যা আছে, তাদের জন্য উপকারী হতে পারে

নার্ভ ব্লক থেরাপি – পুডেন্ডাল নার্ভে চাপ পড়লে বা ব্যথা থাকলে এটা কাজে দেয়

জীবনযাত্রার কিছু পরিবর্তন আনুন
– অনেকক্ষণ একভাবে বসে না থাকা

– প্রচুর পানি খাওয়া

– সুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক বজায় রাখা

– মানসিক চাপ কমানো

– স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা

কখন দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাবেন?
নিচের যে কোনো একটি লক্ষণ থাকলে দেরি না করে চিকিৎসকের কাছে যান :

– ব্যথা হঠাৎ অনেক বেড়ে গেলে

– জ্বর, ঠান্ডা লাগা বা বমি

– প্রস্রাব আটকে গেলে

– প্রস্রাবে বা বীর্যে রক্ত দেখা দিলে

পুরুষদের পেলভিক ব্যথা অনেক সময়ই ছোটখাটো কারণে হয়, কিন্তু এটাকে অবহেলা করা উচিত নয়। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে বড় কোনো জটিলতা বা অসুবিধা সহজেই এড়ানো যায়। তাই ব্যথা হলে দেরি না করে একজন অভিজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।

সূত্র : হেলথলাইন