মঙ্গলবার, ১৬ই ডিসেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ | ১লা পৌষ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

প্রতারনা মামলায় সুমাইয়ার বাবা কারাগারে

নিজস্ব প্রতিবেদক,ঢাকা
ডিসেম্বর ১০, ২০২৫ ৯:১৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

প্রেমের ফাঁদে ফেলে বিভিন্ন কৌশলে ৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেছে নওগাঁ জেলা, মান্দা থানা এলাকার প্রতারক চক্র। এই ঘটনায় প্রতারণার অভিযোগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোহাম্মদ আমিন বাদী হয়ে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলার মূল হোতা সুমাইয়ার বাবা বাবুল হোসেনকে গ্রেফতার করেছে মুগদা থানা পুলিশ।

আটক করে ৫ দিনের রিমান্ড চেয়ে গত ৭ নভেম্বর আদালতে প্রেরণ করেন। ১২ নভেম্বর শুনানি শেষে ১ দিনের পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদে আদেশ দেন আদালত। রিমান্ড শেষে ১৩ নভেম্বর আসামি বাবুলকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়।

গত ৬ নভেম্বর এজাহার ভুক্ত আসামীদের গ্রেফতার অভিযানে নওগাঁ জেলা মান্দা থানার সহায়তায়, এনায়েতপুর জোয়ারদারপাড়া তার নিজ বাসভবন থেকে বাবুল হোসেনকে গ্রেফতার করা হয়। প্রধান আসামী রাশেদ পলাতক ছিল।

এর আগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর চিফ জুডিশিয়াল ঢাকা মেট্রোপলিটন ৩৬ নং আদালতে নওগাঁ জেলা আত্রাই থানা বাদী হয়ে মামলার দায়ের করেন। বাদির করা এজাহারে দেখা যায় প্রথম আসামী মোহাম্মদ রাশেদ, পিতা, জোয়ারদার, গ্রাম, পূজাঘাটি জেলা নওগা। ২নং আসামি বাবুল হোসেনের মেয়ে সুমাইয়া এবং প্রধান আসামি রাশেদ তারা পরস্পর যোগশাজসে ফেসবুক মেসেঞ্জারের মাধ্যমে বাদীর সাথে প্রতারণা করে ৮ লাখ ৮৪ হাজার টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।

২০২১ হতে ২০২৩ সাল পর্যন্ত দুটি বিকাশ নাম্বারের মাধ্যমে এই টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ এনে তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন মোহাম্মদ আমিন।সুমাইয়া আক্তারের বিকাশ

নাম্বার০১৭৩৪৩৮৮৫৫০-০১৩১৬৮৪৯৭৩। মামলার বাদীর বিকাশ নাম্বার ০১৭১১৬৩৪৯৬২ থেকে আসামির বিকাশে বিভিন্ন সময় তার চাহিদা মোতাবেক টাকা পাঠায়। মামলা হওয়ার আগে সুমাইয়া আক্তারের বাবা দুই নাম্বার আসামি বাবুল হোসেন ১ নং আসামি রাশেদ বাদীর সাথে ঢাকা কমলাপুর রেল স্টেশনে এবং পরে আরেক দফা পিজি হাসপাতালে সাক্ষাৎ করেন।

২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে সুমাইয়া মায়ের মৃত্যুর ছবি ফেসবুকে পোস্ট করে। তার দুই মাস পর মার্চ মাসে সুমাইয়ার একমাত্র ভাই রানা নওগাঁ শহরে ট্রাকের সাথে দুর্ঘটনায় নিহত হয়। আসামি  তার কিছু দিন পর বাদির নিকট ভোটার আইডি কার্ড চায়। তার চাহিদা মোতাবেক বাদী তার ভোটার আইডি কার্ডের ছবি মেসেঞ্জারে দেয়। কিছুদিন পর আসামি বাদীকে জানায় দুনিয়াতে আমার আর কেউ নাই। তাই তার বাবা-মায়ের স্থাবর-অস্থাবর সকল সম্পত্তি বাদীর নামে দলিল করে দেয়া হয়েছে বলে জানায় সুমাইয়া। এই ঘটনার জেড় ধরে আসামির চাচাতো ভাইয়ের সাথে পারিবারিক দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। ঘটনার একপর্যায়ে সুমাইয়ার চাচাতো ভাই বাঁশ নিয়ে মারতে যায়।

সুমাইয়া তার খালাতো ভাই রাশেদকে ফোন দিয়ে জানালে রাশেদ ঘটনাস্থলে আসে প্রতিবাদ করলে সুমাইয়ার চাচাতো ভাই রাশেদকে লাঠি দিয়ে সজোরে আঘাত করে। রাশেদ চোখে আঘাতপ্রাপ্ত হলে দ্রুত রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুমাইয়ার প্রাইভেটকারে চিকিৎসার জন্য নিয়ে যায়।

রাজশাহী মেডিকেল কর্তৃপক্ষ জানান, রাশেদের চক্ষু অপারেশন করতে হবে এই অপারেশন রাজশাহী সম্ভব নয় দেশের বাইরে নিয়ে যেতে হবে। পরের দিন সুমাইয়ার খালাতো ভাই রাশেদকে নিয়ে চিকিৎসার জন্য ইন্ডিয়া যায়। সুমাইয়া ইন্ডিয়া গেলে বাদি তার ভারতীয় টেলিফোন নাম্বার চায়। আসামি সুমাইয়া ওরূপে রাশেদ জানায় তাদেরকে ভারতীয় ল্যান্ড ফোন ব্যবহার করতে দেয়া হয়েছে। ওই নাম্বার থেকে সরাসরি কোন ফোন দেয়া যায় না বলে বাঁদিকে জানায়। কনফারেন্সের মাধ্যমে বাদী- বিবাদীর যোগাযোগ হয়। সুমাইয়ার বাবা দুই নাম্বার আসামি বাবুল হোসেন ছিলেন মামা শফিকুলের অভিনয়ে। সুমাইয়ার মামা রফিকুল ২০২৩ সালে আমেরিকা যায়। যাওয়ার চার মাস পর স্টক করে মৃত্যু বরণ করে। তার মামার মৃতদেহ নেয়ার জন্য সুমাইয়া ইন্ডিয়া থেকে ২৭ মার্চ আমেরিকায় যায়।

সুমাইয়া আমেরিকা যাওয়ার দেড় মাস পর সে দেশের নাগরিক এলেক্সের নিকট থেকে ৬০০ ডলার ধার নেয়া হয়েছে বলে জানায় প্রিয়জন আমিনকে। সে সময় বাদী আমিন চিকিৎসার জন্য ইন্ডিয়া সি এম সি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।

আসামি সুমাইয়া জানায় এলেক্সের ৬০০ ডলার পরিষদ না করলে দেশে যেতে দিবে না। তার মহাবিপদের সময় বাদী ইন্ডিয়া থেকে ধার কর্জ করে ২০২৩ সালের ২৬ এবং ২৭ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশী টিপুর মাধ্যমে ৬০ হাজার টাকা প্রদান করা হয়।

প্রতারক চক্র বাদের নিকট থেকে বিকাশের মাধ্যমে দেওয়া টাকার সকল নথিপত্র সংরক্ষণ রয়েছে মামলা তদন্ত কর্মকর্তা এবং বাদীর নিকট।