ঢাকা ০৪:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

জাতিসংঘে গৃহীত হলো রোহিঙ্গা রেজুলেশন

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১২:০১:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২১
  • / 90
প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা রেজুলেশনটি জাতিসংঘে গৃহীত হয়েছে। বুধবার জাতিসংঘে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রসায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক রেজুলেশনটি গৃহীত হয়েছে। রেজুলেশনটি যৌথভাবে উত্থাপন করেছে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, রেজুলেশনটিতে আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দেয়াসহ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের জাতীয় কর্মসূচিতেও রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভূক্ত করায় বাংলাদেশের উদারতা ও মানবিকতার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।

কক্সবাজারের জনাকীর্ণ আশ্রয় ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের একটি অংশকে ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য অবকাঠামোসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার জন্য বাংলাদেশের বিনিয়োগ ও প্রচেষ্টারও স্বীকৃতি দেয়া হয়। এতে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মধ্যকার সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরকেও স্বাগত জানানো হয়।

প্রাথমিকভাবে রেজুলেশনটিতে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং চল‌তি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের জরুরি অবস্থা জারির প্রেক্ষাপটের মতো বিষয়গুলোর উপর দৃষ্টি দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও এবারের রেজুলেশনে রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করা, বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণ করা এবং মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতসহ জাতিসংঘের সব মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা করার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। চলমান বিচার ও দায়বদ্ধতা নিরূপণ প্রক্রিয়ার ওপর রেজুলেশনটিতে সজাগ দৃষ্টি বজায় রাখার কথাও বলা হয়।

রেজুলেশনটিতে মিয়ানমারে নবনিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতকে স্বাগত জানানো হয়েছে এবং মিয়ানমারকে সম্পৃক্ত করে তার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণের কথাও বলা হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির ক্ষেত্রে মিয়ানমার, ইউএনএইচসিআর ও ইউএনডিপির মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রি-পাক্ষিক সমঝোতা স্মারকটি নবায় ও এর কার্যকর বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘রোহিঙ্গা রেজুলেশন এ সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন ‘

তিনি বলেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের জন্য স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশে জন্য দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যাবাসনের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় রোহিঙ্গাদের হতাশা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে, যা এ অঞ্চলে নানা ধরনের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ওআইসি ছাড়াও রেজুলেশনটিতে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ মোট ১০৭টি দেশ সমর্থন দিচ্ছে এবং সহ-পৃষ্ঠপোষকতা করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

জাতিসংঘে গৃহীত হলো রোহিঙ্গা রেজুলেশন

আপডেট : ১২:০১:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ নভেম্বর ২০২১
প্রথমবারের মতো রোহিঙ্গা রেজুলেশনটি জাতিসংঘে গৃহীত হয়েছে। বুধবার জাতিসংঘে ‘মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিমসহ অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রসায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি’ শীর্ষক রেজুলেশনটি গৃহীত হয়েছে। রেজুলেশনটি যৌথভাবে উত্থাপন করেছে ইসলামিক সহযোগিতা সংস্থা (ওআইসি) ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, রেজুলেশনটিতে আশ্রয় ও মানবিক সহায়তা দেয়াসহ কোভিড-১৯ ভ্যাকসিনের জাতীয় কর্মসূচিতেও রোহিঙ্গাদের অন্তর্ভূক্ত করায় বাংলাদেশের উদারতা ও মানবিকতার ভূয়সী প্রশংসা করা হয়েছে।

কক্সবাজারের জনাকীর্ণ আশ্রয় ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের একটি অংশকে ভাসানচরে স্থানান্তরের জন্য অবকাঠামোসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার জন্য বাংলাদেশের বিনিয়োগ ও প্রচেষ্টারও স্বীকৃতি দেয়া হয়। এতে বাংলাদেশ ও জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনের মধ্যকার সমঝোতা চুক্তি স্বাক্ষরকেও স্বাগত জানানো হয়।

প্রাথমিকভাবে রেজুলেশনটিতে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা মুসলিম ও অন্যান্য সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের মানবাধিকার পরিস্থিতি এবং চল‌তি বছরের ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারের জরুরি অবস্থা জারির প্রেক্ষাপটের মতো বিষয়গুলোর উপর দৃষ্টি দেয়া হয়েছে।

এছাড়াও এবারের রেজুলেশনে রোহিঙ্গা সমস্যার মূল কারণ খুঁজে বের করা, বাংলাদেশের সঙ্গে স্বাক্ষরিত দ্বি-পাক্ষিক চুক্তির বাধ্যবাধকতাগুলো পূরণ করা এবং মিয়ানমারে নিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতসহ জাতিসংঘের সব মানবাধিকার ব্যবস্থাপনাকে পূর্ণ সহযোগিতা করার জন্য মিয়ানমারের প্রতি আহ্বান জানানো হয়। চলমান বিচার ও দায়বদ্ধতা নিরূপণ প্রক্রিয়ার ওপর রেজুলেশনটিতে সজাগ দৃষ্টি বজায় রাখার কথাও বলা হয়।

রেজুলেশনটিতে মিয়ানমারে নবনিযুক্ত জাতিসংঘ মহাসচিবের বিশেষ দূতকে স্বাগত জানানো হয়েছে এবং মিয়ানমারকে সম্পৃক্ত করে তার জন্য একটি কর্মপরিকল্পনা নির্ধারণের কথাও বলা হয়েছে। রাখাইন রাজ্যে বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টির ক্ষেত্রে মিয়ানমার, ইউএনএইচসিআর ও ইউএনডিপির মধ্যে স্বাক্ষরিত ত্রি-পাক্ষিক সমঝোতা স্মারকটি নবায় ও এর কার্যকর বাস্তবায়নের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।

জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘রোহিঙ্গা রেজুলেশন এ সংকট সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দৃঢ় প্রতিশ্রুতিরই প্রতিফলন ‘

তিনি বলেন, মিয়ানমার রোহিঙ্গাদের জন্য স্বপ্রণোদিত, নিরাপদ ও টেকসই প্রত্যাবর্তনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি করতে ব্যর্থ হওয়ায় বাংলাদেশে জন্য দীর্ঘমেয়াদী সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। প্রত্যাবাসনের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় রোহিঙ্গাদের হতাশা ক্রমশ তীব্র হচ্ছে, যা এ অঞ্চলে নানা ধরনের নিরাপত্তাজনিত উদ্বেগ ও অস্থিতিশীল পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে।

ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ওআইসি ছাড়াও রেজুলেশনটিতে যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা, মেক্সিকো, আর্জেন্টিনা, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, সুইজারল্যান্ড, জাপান, দক্ষিণ কোরিয়াসহ মোট ১০৭টি দেশ সমর্থন দিচ্ছে এবং সহ-পৃষ্ঠপোষকতা করছে।