অনলাইন ডেস্ক:
এক কাজ বার-বার করতে থাকা, মন ছটফট করা এগুলো শুচিবাইয়ের লক্ষণ। চিকিৎসকদের ভাষায় একে বলে অবসেসিভ কম্পালশিভ ডিসঅর্ডার বা ওসিডি। বহু মানুষের শুচিবাই এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যেখান থেকে তিনি প্রবল উদ্বেগ ও অবসাদ বা ডিপ্রেশনে ভুগতে থাকেন।
ওসিডি নানা রকমের হতে পারে। কখনো মনে হয় হাতটা ভাল করে ধোয়া হলো না, বাড়ির কাজের লোক ঘর মোছা ভাল হয়নি, টাকা ভাল করে গোনা হলো না। এগুলো নিয়ে তার ভিতরে এক ধরনের উদ্বেগ তৈরি হয়। অবসেশনগুলো মাথায় গেঁথে যাওয়া অসিডি রোগের লক্ষণ।
এখানে ময়লার চিন্তাটি হলো অবসেশন আর হাত ধোয়াকে বলা হবে কম্পালশান। এ দুটি মিলিয়েই রোগের নাম অবসেসিভ কমপালসিভ ডিজঅর্ডার যাকে বাংলায় শুচিবায়ু বলা হয়।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেব অনুযায়ী, ওসিডি পৃথিবীর দশটা রোগের মধ্যে তৃতীয় স্থানে আছে। ওসিডি মানুষকে এতটাই যন্ত্রণা দেয় যে, তার ফলে মানুষের মধ্যে আত্মহত্যা করার প্রবণতা জন্ম হয়।
চিকিৎসা বিজ্ঞান বলছে, শতকরা ৪৫ থেকে ৬৫ শতাংশ ক্ষেত্রে জিনগত কারণে এই রোগ হয়। পরিবেশগত কারণ তো রয়েছেই। তবে আধুনিক চিকিৎসায় এ থেকে বের হওয়ার অনেক পথ আছে।
কগনিটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি এ ক্ষেত্রে ভাল কাজ দেয়। অনেক ওষুধও রয়েছে। মস্তিষ্কের যে অংশ রোগীকে একই কাজ বার বার করায় ওষুধ সেই অংশে কাজ করে। রোগী সুস্থ হয়ে ওঠেন। রোগ আরও বেড়ে গেলে ইলেকট্রো কনভালসিভ থেরাপি, সার্জিক্যাল থেরাপি দেয়া হয়। শেষের দুটির জন্য রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হয়।
অসিডি বা বাতিক নিয়ে কিছু তথ্য
ওসিডি-র ফলে মানুষের মনের ধারণা শেষ পর্যন্ত অভ্যাসে পরিণত হয়।
রোগী নিজে জানেন যে, এমন আচরণ সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয় কিন্তু নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন না।
বাতিকের লক্ষণগুলো বেশ জটিল এবং এর বহিঃপ্রকাশ এক-এক জনের ক্ষেত্রে এক এক রকম হয়।
সব কিছুর মধ্য দিয়ে দূষণ দূর করার জন্য বারবার ধোয়া-মোছার প্রবণতা ওসিডি-র পূর্বাভাস।
ওসিডি-র আরেকটি লক্ষণ হলো, নিজের প্রতিদিনের কাজে সন্দেহ করা ও ক্রমাগত পরীক্ষা করা।
শিশুদের মধ্যেও ওসিডি-র সমস্যা হতে পারে এবং তার প্রভাব তার যৌবনকাল পর্যন্ত স্থায়ী থাকতে পারে। ১০০ জন শিশুর মধ্যে ১ জনের মধ্যে ওসিডি-র লক্ষণ প্রকাশ পেয়েছে।লেখক
মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, সুপর্ণা রায়