টিভি সাংবাদিকের গলায় জুতার মালা পড়িয়ে দিলেন এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা
২২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ১৩:৫৬

::মো. আবু রায়হান চৌধুরী::
কুমিল্লা জেলা প্রতিনিধি। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে চাঁদাবাজি করতে গিয়ে জনতার হাতে ধরা খাওয়ার পর এশিয়ান টিভির সাংবাদিককে গণপিটুনি দিয়ে জুতার মালা পড়িয়ে দেয় এলাকার বিক্ষুব্ধ জনতা।
গতকাল শনিবার রাত নয়টার দিকে বাঞ্ছারামপুর উপজেলা সদরের প্রতাপগঞ্জ বাজারের সোনালী ব্যাংকের পেছনে আনোয়ার মিয়ার বাড়িতে এই ঘটনা ঘটে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ার মিয়ার ভাড়াটিয়ার কাছে চাঁদার টাকা নিতে গেলে ধরা পড়েন বাঞ্ছারামপুর-হোমনা সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি উপজেলায় এশিয়ান টিভির প্রতিনিধি হিসেবে ভূয়া পরিচয় দানকারী সাংবাদিক আশিকুর রহমান জামাল।
আানোয়ার মিয়ার ভাড়াটিয়া মৃত শাব মিয়ার স্ত্রী হাসিনা বেগমের মেয়েকে বাল্যবিয়ে দেওয়ায় অভিযোগে পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে ৫০ হাজার টাকা দাবি করে সাংবাদিক আশিক। তার মধ্যে ২০ হাজার টাকা আগেই নিয়েছিলো। বাকি ৩০ হাজার টাকা নিতে গিয়েই গণপিটুনির শিকার হয় আশিকুর রহমান জামাল।
পরে ক্ষমা চেয়ে সেখান থেকে দেড় ঘন্টা পর ছাড়া পায় সে। আশিক দীর্ঘদিন ধরেই এশিয়ান টিভির নাম পরিচয় ব্যবহার করে বিভিন্ন জায়গায় সাধারণ মানুষকে ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিলো বলে অভিযোগ রয়েছে। এক সময়ের নামকরা ফ্রিজ মেকানিক আশিক এখন সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দিয়ে বেড়ায়। তবে বর্তমানেও স্বল্প পরিষরে উপজেলা সদরের সামনে দোকান পরিচালনা করলেও, নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে বিভিন্ন জায়গায় পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজি করতো সে।
মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের গন্ডি পেড় হতে (এসএসসি) পাশ না হলেও নিজেকে ডিগ্রি (বিএ) পাশ বলে দাবি করে সে। তার বাড়ি উপজেলার আইয়ূবপুর হলেও নিজেকে বাঞ্ছারামপুর পৌর এলাকার দূর্গারামপুর গ্রামের বাসিন্দা পরিচয় দেয়। বিএনপির ছাত্রদলের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ফ্রিজ জামালের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা অভিযোগ।
এশিয়ান টিভির বাঞ্ছারামপুর উপজেলা প্রতিনিধি হওয়ার পর থেকে পাশ্ববর্তী হোমনা উপজেলা সহ আশেপাশের বেশ কিছু উপজেলার প্রতিনিধিত্ব তার দখলে রয়েছে বলে বিভিন্ন জায়গায় বলে বেড়ায়। শুধু তাই নয় সাংবাদিকতা পেশার আড়ালে অবৈধ গ্যাস সংযোগের ব্যবসাও করে আসছে জামাল।
তাছাড়াও উপজেলার সকল ফার্সেসী, বেকারিসহ বিভিন্ন জায়গা থেকে নিউজ করার ভয়ভীতি দেখিয়ে চাঁদাবাজি করে আসছিলো। বিভিন্ন কুকর্মের কারণে গত সেপ্টেম্বরে তাকে বাঞ্ছারামপুর প্রেসক্লাব থেকে বহিস্কার করা হয়েছে। আশিক দাবি করেন, তাকে আনোয়ার মিয়ার ভাড়াটিয়া এক হাজার টাকা দিয়েছিল। সেই টাকা ফেরত দিতে গিয়েছিলেন তিনি।
ভুক্তভোগী কমলপুর গ্রামের হাসিনা বেগম জানান, সুদে টাকা এনে তাকে ২০ হাজার টাকা দিয়েছেন। বাকি টাকার জন্য চাপ দিলে পরে বাধ্য হয়ে মহল্লাবাসীকে খবর দিয়ে তাকে আটক করেন।