ঢাকা ১১:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শিশুদের জন্য করোনা টিকার ট্রায়ালে যাচ্ছে সেরাম

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০৩:৪৮:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুন ২০২১
  • / 155

ছবি: সংগ্রহীত

::যুগের কন্ঠ ডেস্ক::
ভারতের টিকা উৎপাদনকারীর প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া আগামী মাস থেকে শিশুদের জন্য করোনাভাইরাসের টিকার ট্রায়াল (পরীক্ষামূলক প্রয়োগ) শুরু করতে যাচ্ছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।

সেরাম ইনস্টিটিউটের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নোভাভ্যাক্স সংস্থার তৈরি শিশুদের কোভিড টিকা ‘কোভোভ্যাক্স’ প্রস্তুত করছে সেরাম। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ১২ থেকে ১৭ বছর এবং ২ থেকে ১১ বছর বয়সী মোট ৯২০ শিশুকে কোভোভ্যাক্স টিকা দেওয়া হবে। বয়সভিত্তিক প্রতিটি গ্রুপে থাকবে ৪৬০ শিশু।

শিশুদের পরীক্ষামূলক টিকা দেওয়ার ১০টি স্থানের মধ্যে ভারতী হাসপাতাল এবং পুনের ভাদু এলাকার কেইএম হাসপাতালের শাখাও রয়েছে। ২১ দিনের ব্যবধানে টিকার দুটি ডোজ দেওয়ার পর শিশুদের ৬ মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পরীক্ষামূলক ব্যবহারের পরিকল্পনায় প্রথমে ১২ থেকে ১৭ বছরের শিশুদের টিকা দেওয়া হবে পরে দেওয়া হবে ২ থেকে ১১ বছরের শিশুদের।

এ বিষয়ে সেরাম ইনস্টিটিউটের মালিক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনাওয়ালা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘ডিসিজিআই (ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া) এর অনুমোদন পেলে আমরা আগামী মাস থেকে ১০টি স্থানে শিশুদের জন্য পরীক্ষামূলক টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বয়সের উল্টো দিক থেকে শুরু করব। ১২ থেকে ১৭ বছরের শিশুদের আগে টিকা দেওয়া হবে এবং পরে দেওয়া হবে ২ থেকে ১১ বছরের শিশুদের।’

ভারতে এ নিয়ে শিশুদের উপর চতুর্থ কোভিড-১৯ টিকার ‘ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা’ হতে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নোভাভ্যাক্সের তৈরি প্রোটিনভিত্তিক ‘এনভিএক্স-কোভি২৩৭৩’ টিকা ভারতে কোভোভ্যাক্স নামে পরিচিত। নোভাভ্যাক্সের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া সেপ্টেম্বর থেকে প্রাপ্তবয়স্কদের এবং এ বছরের শেষ নাগাদ শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু করতে পারে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের তিন মাস সময়ের সুরক্ষার বিভিন্ন দিক এবং রোগ প্রতিরোধ বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্যগুলো উল্লেখ করে টিকার নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবে সেরাম ইনস্টিটিউট।

ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার (ডিসিজিআই) হালনাগাদ বিধি অনুযায়ী পরীক্ষাকালীন পূর্ণ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারে কোনো টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানি।

টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের প্রাথমিক লক্ষ্য সুরক্ষা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি সম্পর্কে ধারনা পাওয়া। যাদের বাবা-মা স্বেচ্ছায় সুস্থাস্থ্যের অধিকারী শিশুদের পরীক্ষামূলক টিকা দিতে চান তাদের ২১ দিনর ব্যবধানে দুটি ডোজ দেওয়া হবে।

সেরাম ছাড়াও ভারতে শিশুদের টিকা তৈরির দৌড়ে রয়েছে হায়দরাবাদের বায়োটেক এবং আমদাবাদের জাইডাস ক্যাডিলা। ভারত বায়োটেক ইতিমধ্যেই ১২-১৮ বছর বয়সিদের উপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করে দিয়েছে। তারা নেসাল কোভিড টিকারও ট্রায়াল চালাচ্ছে। জাইডাস ক্যাডিলা-ও ১২-১৮ বছর বয়সিদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাচ্ছে। এর পর তারা ৫-১২ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রেও এই ট্রায়ালের চিন্তাভাবনা শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত, শিশুদের জন্য কোভিড-১৯ টিকা তৈরির জন্য দ্রুততার সঙ্গে পরীক্ষা চালাচ্ছে টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। সেক্ষেত্রে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে শিশুদের জন্য অনুমোদন পাওয়া কোনো টিকা পাওযা যেতে পারে। এরই মধ্যে ১২ বছর বয়সী শিশুদের প্রয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের টিকা অনুমোদন পেয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

শিশুদের জন্য করোনা টিকার ট্রায়ালে যাচ্ছে সেরাম

আপডেট : ০৩:৪৮:২৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৬ জুন ২০২১
::যুগের কন্ঠ ডেস্ক::
ভারতের টিকা উৎপাদনকারীর প্রতিষ্ঠান সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া আগামী মাস থেকে শিশুদের জন্য করোনাভাইরাসের টিকার ট্রায়াল (পরীক্ষামূলক প্রয়োগ) শুরু করতে যাচ্ছে। খবর টাইমস অব ইন্ডিয়া।

সেরাম ইনস্টিটিউটের বরাত দিয়ে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, যুক্তরাষ্ট্রের নোভাভ্যাক্স সংস্থার তৈরি শিশুদের কোভিড টিকা ‘কোভোভ্যাক্স’ প্রস্তুত করছে সেরাম। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ের পরীক্ষামূলক প্রয়োগে ১২ থেকে ১৭ বছর এবং ২ থেকে ১১ বছর বয়সী মোট ৯২০ শিশুকে কোভোভ্যাক্স টিকা দেওয়া হবে। বয়সভিত্তিক প্রতিটি গ্রুপে থাকবে ৪৬০ শিশু।

শিশুদের পরীক্ষামূলক টিকা দেওয়ার ১০টি স্থানের মধ্যে ভারতী হাসপাতাল এবং পুনের ভাদু এলাকার কেইএম হাসপাতালের শাখাও রয়েছে। ২১ দিনের ব্যবধানে টিকার দুটি ডোজ দেওয়ার পর শিশুদের ৬ মাস পর্যবেক্ষণে রাখা হবে। পরীক্ষামূলক ব্যবহারের পরিকল্পনায় প্রথমে ১২ থেকে ১৭ বছরের শিশুদের টিকা দেওয়া হবে পরে দেওয়া হবে ২ থেকে ১১ বছরের শিশুদের।

এ বিষয়ে সেরাম ইনস্টিটিউটের মালিক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আদর পুনাওয়ালা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে বলেন, ‘ডিসিজিআই (ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়া) এর অনুমোদন পেলে আমরা আগামী মাস থেকে ১০টি স্থানে শিশুদের জন্য পরীক্ষামূলক টিকা দেওয়ার পরিকল্পনা করেছি।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা বয়সের উল্টো দিক থেকে শুরু করব। ১২ থেকে ১৭ বছরের শিশুদের আগে টিকা দেওয়া হবে এবং পরে দেওয়া হবে ২ থেকে ১১ বছরের শিশুদের।’

ভারতে এ নিয়ে শিশুদের উপর চতুর্থ কোভিড-১৯ টিকার ‘ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা’ হতে যাচ্ছে। যুক্তরাজ্যের জৈবপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান নোভাভ্যাক্সের তৈরি প্রোটিনভিত্তিক ‘এনভিএক্স-কোভি২৩৭৩’ টিকা ভারতে কোভোভ্যাক্স নামে পরিচিত। নোভাভ্যাক্সের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে সেরাম ইনস্টিটিউট অব ইন্ডিয়া সেপ্টেম্বর থেকে প্রাপ্তবয়স্কদের এবং এ বছরের শেষ নাগাদ শিশুদের টিকা দেওয়া শুরু করতে পারে।

টাইমস অব ইন্ডিয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়, পরীক্ষামূলক প্রয়োগের তিন মাস সময়ের সুরক্ষার বিভিন্ন দিক এবং রোগ প্রতিরোধ বিষয়ে প্রাপ্ত তথ্যগুলো উল্লেখ করে টিকার নিবন্ধনের জন্য আবেদন করবে সেরাম ইনস্টিটিউট।

ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল অব ইন্ডিয়ার (ডিসিজিআই) হালনাগাদ বিধি অনুযায়ী পরীক্ষাকালীন পূর্ণ মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নিবন্ধনের জন্য আবেদন করতে পারে কোনো টিকা উৎপাদনকারী কোম্পানি।

টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগের প্রাথমিক লক্ষ্য সুরক্ষা এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি সম্পর্কে ধারনা পাওয়া। যাদের বাবা-মা স্বেচ্ছায় সুস্থাস্থ্যের অধিকারী শিশুদের পরীক্ষামূলক টিকা দিতে চান তাদের ২১ দিনর ব্যবধানে দুটি ডোজ দেওয়া হবে।

সেরাম ছাড়াও ভারতে শিশুদের টিকা তৈরির দৌড়ে রয়েছে হায়দরাবাদের বায়োটেক এবং আমদাবাদের জাইডাস ক্যাডিলা। ভারত বায়োটেক ইতিমধ্যেই ১২-১৮ বছর বয়সিদের উপর ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল শুরু করে দিয়েছে। তারা নেসাল কোভিড টিকারও ট্রায়াল চালাচ্ছে। জাইডাস ক্যাডিলা-ও ১২-১৮ বছর বয়সিদের ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চালাচ্ছে। এর পর তারা ৫-১২ বছর বয়সিদের ক্ষেত্রেও এই ট্রায়ালের চিন্তাভাবনা শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত, শিশুদের জন্য কোভিড-১৯ টিকা তৈরির জন্য দ্রুততার সঙ্গে পরীক্ষা চালাচ্ছে টিকা উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো। সেক্ষেত্রে আগামী সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবরে শিশুদের জন্য অনুমোদন পাওয়া কোনো টিকা পাওযা যেতে পারে। এরই মধ্যে ১২ বছর বয়সী শিশুদের প্রয়োগের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের ওষুধ কোম্পানি ফাইজারের টিকা অনুমোদন পেয়েছে।