কুতুবপুর নির্বাচন : রাত হলেই হুমকি!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০২:০১:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২১
  • / 285

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে ভোটের আমেজ। গত ২৭ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে গেছেন প্রার্থীরা। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই কুতুবপুর ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেম্বার প্রার্থী ওতাদের সমর্থকরা।

পাড়া-মহল্লায় মিছিলে মিছিলে উৎসবমূখর পরিবেশ তৈরী হয়েছে। প্রার্থীরা বিশাল বিশাল শো-ডাউনের মধ্যদিয়ে নিজেদের শক্তির জানান দিচ্ছেন। যদিও নির্বাচনী আচারণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনী প্রচারণা করতে দেখা গেছে কিছু প্রার্থীর। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ১১ নভেম্বর কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

এদিকে, গত কয়েকদিন আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে মনিরুল আলম সেন্টু নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মাঠজুড়ে একমাত্র ওয়ার্ড মেম্বার পদপ্রার্থীদেরা প্রচারণা বেড়েছে। চিন্তা একটাই কিভাবে জনগণের মন জয় করা যায়। এই উদ্দেশ্য নিয়েই প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গায় মিটিং করছেন প্রার্থীরা। মাইকিং একই সঙ্গে ভোটারদের সঙ্গে আলিঙ্গন সবই চলছে সমান তালে।

জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতি করে এমন অনেক মেম্বার প্রার্থী আছে। তারা রাতের আধারে বিভিন্ন সন্ত্রাসী দিয়ে অন্যান্য প্রার্থীদের এবং তাদের সমর্থক কর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত প্রার্থীরা এসব অভিযোগকে বানোয়াট বলে অস্বীকার করেছেন।

তাদের দাবি, বিগতসালে যারা মেম্বার ছিলেন তারা তেমন কাজ করেনি। তাই পরিবর্তনের জন্য মুখিয়ে আছেন এলাকাবাসী। এমন জনসমর্থন থাকায় তারা বিপাকে পড়ে এসব উদ্ভট অভিযোগ করছেন।

এ নিয়ে কথা এলাকার বেশ কয়েকজন প্রবীন রাজনীতিবিদের সঙ্গে। নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে তারা জানান, আসলে নির্বাচন মানেই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার খেলা। তাই নির্বাচনের সময়ে প্রার্থীর দোষ গুণ সব বিষয় আলোচনায় ওঠে। অতীতেও এমন অভিযোগ দেখা গেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।

তারা জানান, বর্তমান সরকার স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বিরাট পদক্ষেপ নিয়েছে। স্থানীয় সাংসদ সদস্য (এমপি) চাচ্ছেন নির্বাচন অবাধ একই সঙ্গে নিরেপেক্ষ হোক। জনপ্রিয় ব্যাক্তিরাই জন প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হন। তাই তিনি প্রতিনিয়ত খোঁজ রাখছেন। সব ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়ায় স্থানীয় এমপির কামনা। বর্তমানে যারাই মেম্বার প্রার্থী হয়েছেন সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে পাশ করে আসে।

এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুতুবপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড মেম্বার পদপ্রার্থী বলেন, ‘ভাই আমি কোন দল করি না। তবে করোনার সময় মানুষ দেখতে পেরেছে আমি কিভাবে মানুষের পাশে ছিলাম। নির্বাচনের মাঠে নেমেছি কারণ একটাই মানুষদের সেবা করতে চাই। রাতের আধারে আমি কোন দল করি না বলে আমার কর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকিদেওয়া হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। কারা এই হুমকী দিচ্ছেন সে বিষয়ে তিনি মুখ খুলতে চাননি।’

এই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘নির্বাচনে কোন প্রকার সহিংসতা না হয় সেজন্য কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা পুলিশ। যদি কেউ সহিংসতার চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে। নির্বাচনে কেউ প্রভাব দেখাতে না পারে সেবিষয়ে পুলিশ সজাগ রয়েছে। তিনি বলেন নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু করতে আমরা প্রস্তুত।’

এই বিষয়ে কথা হয় স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে। নিজেদের নাম গোপন রাখার শর্তে তারা বলেন, ‘করোনার কারনে আমরা সবাইকে ঠিকমতই চিনেছি। কে আমাদের আপন, আর কে পর সেট্রি আমরা বুঝতে পেরেছি। অতিতে আমাদের যারা খোঁজ-খবর নিয়েছেন তাদেরকেই আমরা ভোট দেব। এক্ষেত্রে কোন দল দেখবো না। যারা প্রার্থী হয়েছেন কেউ না কেউ আমাদের পছন্দের আছেন সেটা আমরা ভোট কেন্দ্রে যেয়েই দেখিয়ে দেব। তবে আমরা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভোট প্রত্যাশা করছি।’

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

কুতুবপুর নির্বাচন : রাত হলেই হুমকি!

আপডেট : ০২:০১:৪৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ৩০ অক্টোবর ২০২১

ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে ঘিরে জমে উঠেছে ভোটের আমেজ। গত ২৭ অক্টোবর প্রতীক বরাদ্দের পর নির্বাচনী প্রচারণায় নেমে গেছেন প্রার্থীরা। প্রতীক বরাদ্দের পর থেকেই কুতুবপুর ইউনিয়নের প্রতিটি ওয়ার্ডে সকাল থেকে রাত পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত সময় পার করছেন মেম্বার প্রার্থী ওতাদের সমর্থকরা।

পাড়া-মহল্লায় মিছিলে মিছিলে উৎসবমূখর পরিবেশ তৈরী হয়েছে। প্রার্থীরা বিশাল বিশাল শো-ডাউনের মধ্যদিয়ে নিজেদের শক্তির জানান দিচ্ছেন। যদিও নির্বাচনী আচারণবিধি লঙ্ঘন করে নির্বাচনী প্রচারণা করতে দেখা গেছে কিছু প্রার্থীর। আসন্ন নির্বাচনকে সামনে রেখে আগামী ১১ নভেম্বর কুতুবপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।

এদিকে, গত কয়েকদিন আগে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় চেয়ারম্যান পদে মনিরুল আলম সেন্টু নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে মাঠজুড়ে একমাত্র ওয়ার্ড মেম্বার পদপ্রার্থীদেরা প্রচারণা বেড়েছে। চিন্তা একটাই কিভাবে জনগণের মন জয় করা যায়। এই উদ্দেশ্য নিয়েই প্রতিদিনই বিভিন্ন জায়গায় মিটিং করছেন প্রার্থীরা। মাইকিং একই সঙ্গে ভোটারদের সঙ্গে আলিঙ্গন সবই চলছে সমান তালে।

জানা গেছে, ক্ষমতাসীন দলের রাজনীতি করে এমন অনেক মেম্বার প্রার্থী আছে। তারা রাতের আধারে বিভিন্ন সন্ত্রাসী দিয়ে অন্যান্য প্রার্থীদের এবং তাদের সমর্থক কর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি দিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। তবে ক্ষমতাসীন দল সমর্থিত প্রার্থীরা এসব অভিযোগকে বানোয়াট বলে অস্বীকার করেছেন।

তাদের দাবি, বিগতসালে যারা মেম্বার ছিলেন তারা তেমন কাজ করেনি। তাই পরিবর্তনের জন্য মুখিয়ে আছেন এলাকাবাসী। এমন জনসমর্থন থাকায় তারা বিপাকে পড়ে এসব উদ্ভট অভিযোগ করছেন।

এ নিয়ে কথা এলাকার বেশ কয়েকজন প্রবীন রাজনীতিবিদের সঙ্গে। নিজেদের পরিচয় গোপন রেখে তারা জানান, আসলে নির্বাচন মানেই প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার খেলা। তাই নির্বাচনের সময়ে প্রার্থীর দোষ গুণ সব বিষয় আলোচনায় ওঠে। অতীতেও এমন অভিযোগ দেখা গেছে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়।

তারা জানান, বর্তমান সরকার স্থানীয় পর্যায়ে নির্বাচন সুষ্ঠু করতে বিরাট পদক্ষেপ নিয়েছে। স্থানীয় সাংসদ সদস্য (এমপি) চাচ্ছেন নির্বাচন অবাধ একই সঙ্গে নিরেপেক্ষ হোক। জনপ্রিয় ব্যাক্তিরাই জন প্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হন। তাই তিনি প্রতিনিয়ত খোঁজ রাখছেন। সব ধরনের বিশৃঙ্খলা এড়িয়ে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দেওয়ায় স্থানীয় এমপির কামনা। বর্তমানে যারাই মেম্বার প্রার্থী হয়েছেন সুষ্ঠু ভাবে নির্বাচনের মাধ্যমে পাশ করে আসে।

এই বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুতুবপুর ইউনিয়নের ৪ নং ওয়ার্ড মেম্বার পদপ্রার্থী বলেন, ‘ভাই আমি কোন দল করি না। তবে করোনার সময় মানুষ দেখতে পেরেছে আমি কিভাবে মানুষের পাশে ছিলাম। নির্বাচনের মাঠে নেমেছি কারণ একটাই মানুষদের সেবা করতে চাই। রাতের আধারে আমি কোন দল করি না বলে আমার কর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকিদেওয়া হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। কারা এই হুমকী দিচ্ছেন সে বিষয়ে তিনি মুখ খুলতে চাননি।’

এই বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার জায়েদুল আলম এ প্রতিবেদককে বলেন, ‘নির্বাচনে কোন প্রকার সহিংসতা না হয় সেজন্য কঠোর অবস্থানে রয়েছে জেলা পুলিশ। যদি কেউ সহিংসতার চেষ্টা করে তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। নির্বাচনী এলাকার প্রতিটি ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে পুলিশ নিয়মিত টহল দিচ্ছে। নির্বাচনে কেউ প্রভাব দেখাতে না পারে সেবিষয়ে পুলিশ সজাগ রয়েছে। তিনি বলেন নির্বাচন শতভাগ সুষ্ঠু করতে আমরা প্রস্তুত।’

এই বিষয়ে কথা হয় স্থানীয় ভোটারদের সঙ্গে। নিজেদের নাম গোপন রাখার শর্তে তারা বলেন, ‘করোনার কারনে আমরা সবাইকে ঠিকমতই চিনেছি। কে আমাদের আপন, আর কে পর সেট্রি আমরা বুঝতে পেরেছি। অতিতে আমাদের যারা খোঁজ-খবর নিয়েছেন তাদেরকেই আমরা ভোট দেব। এক্ষেত্রে কোন দল দেখবো না। যারা প্রার্থী হয়েছেন কেউ না কেউ আমাদের পছন্দের আছেন সেটা আমরা ভোট কেন্দ্রে যেয়েই দেখিয়ে দেব। তবে আমরা সুষ্ঠু এবং নিরপেক্ষ ভোট প্রত্যাশা করছি।’