আন্দোলনের নামে ভাঙচুর না করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১২:৫৬:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ ডিসেম্বর ২০২১
  • / 131
সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ নিহত হলে আন্দোলনের নামে ভাঙচুর না করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, একটা মানুষ মারা গেলো, আর ১৫টা গাড়িতে আগুন দিলেন, এতে যারা আহত বা নিহত হলেন, ক্ষতিগ্রস্ত হলেন; সেই দায়িত্বটা কারা নেবে। তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তো তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।

এসময় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাঙচুর ছাত্রদের কাজ নয় বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণে আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য এই সময়টি পুরোদমে পড়াশোনায় কাজে লাগাতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।

সম্প্রতি কয়েকটি দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে দায়ীদের কঠোর শাস্তি দেয়ার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। তবে দুর্ঘটনার পর বাসে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগেরও সমালোচনা করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক্সিডেন্ট হলে যে বাস ভাঙচুর করা হলো কিংবা আগুন দেওয়া হলো সেই বাসে কি যাত্রী নেই? সেই বাসে কি শিশু ও ছাত্রছাত্রী নেই?একজন মারা গেল বলে ১৫টি বাসে আগুন দেয়া হলো, এতে আহত বা নিহত হলে এর দায় কে নেবে?

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গাড়ির চালকদেরও সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাতে হবে। কারণ আমাদের দেশে অনেক জনসংখ্যা। এখানে গাড়ি চালাতে সতর্ক হতে হবে। আমরা ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের জন্য উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত ব্যবস্থা করেছি। আমাদের প্রচুর চালক দরকার। দেশ যত স্বাবলম্বী হচ্ছে গাড়ি কেনার সামর্থ্যও তত বাড়ছে। সরকারি বাসে যারা ড্রাইভিং করে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে, বেসরকারি গাড়িতেও সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

সম্প্রতি রাজধানীতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি চাপায় নটরডেম কলেজের এক ছাত্র মারা যায়। এর পরদিনই উত্তর সিটি করপোরেশনের আরেকটি ময়লার গাড়ি চাপায় সাবেক প্রেস কর্মী মারা যান। দুটি ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটার কী রহস্য, দক্ষিণে মারা গেল, পরদিন উত্তরে মারা গেল, এর কারণটা কী। এটার কারণ খুঁজে বের করতে হবে।’ ময়লার গাড়ি যারা চালায় তাদের গাড়ি চালানোর মতো দক্ষতা আছে কি না সেটা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে এক শিক্ষার্থী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী তো নিজের গাড়িতে চড়েন, গণপরিবহনে চড়েন না, এজন্য তিনি জানেন না। সেই শিক্ষার্থীর বক্তব্যের জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টিভিতে দেখলাম, এক শিক্ষার্থী বলছে আমি নাকি গণপরিবহনে চড়িনি। আমি রিকশায়, ভ্যানে, নৌকায় সব বাহনে চড়েছি। আমি বাংলাদেশটা চেনার জন্য, দেশের জন্য কাজ করতে সারাদেশ ঘুরে বেড়িয়েছি। তখন সবধরনের যানবাহনেই চড়েছি। আমরা যখন স্কুলে পড়তাম, বাসে করেই যেতাম। এমন কোনো যান নেই যাতে চড়িনি। আমি বাংলাদেশটাকে চিনতে না পারলে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি লাভ করতে পারতাম না।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আন্দোলনের নামে ভাঙচুর না করার আহ্বান প্রধানমন্ত্রীর

আপডেট : ১২:৫৬:৪৫ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ ডিসেম্বর ২০২১
সড়ক দুর্ঘটনায় কেউ নিহত হলে আন্দোলনের নামে ভাঙচুর না করার আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বুধবার বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এ কথা বলেন তিনি।

তিনি বলেন, একটা মানুষ মারা গেলো, আর ১৫টা গাড়িতে আগুন দিলেন, এতে যারা আহত বা নিহত হলেন, ক্ষতিগ্রস্ত হলেন; সেই দায়িত্বটা কারা নেবে। তাহলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে তো তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে। কেউ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না।

এসময় কোনো দুর্ঘটনা ঘটলে রাস্তায় নেমে গাড়ি ভাঙচুর ছাত্রদের কাজ নয় বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী।

করোনা ভাইরাসের কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে। করোনার নতুন ধরন ওমিক্রনের কারণে আবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এজন্য এই সময়টি পুরোদমে পড়াশোনায় কাজে লাগাতে শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান সরকারপ্রধান।

সম্প্রতি কয়েকটি দুর্ঘটনায় শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার ঘটনাকে দুঃখজনক উল্লেখ করে দায়ীদের কঠোর শাস্তি দেয়ার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। তবে দুর্ঘটনার পর বাসে ভাঙচুর এবং অগ্নিসংযোগেরও সমালোচনা করেন তিনি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক্সিডেন্ট হলে যে বাস ভাঙচুর করা হলো কিংবা আগুন দেওয়া হলো সেই বাসে কি যাত্রী নেই? সেই বাসে কি শিশু ও ছাত্রছাত্রী নেই?একজন মারা গেল বলে ১৫টি বাসে আগুন দেয়া হলো, এতে আহত বা নিহত হলে এর দায় কে নেবে?

প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গাড়ির চালকদেরও সতর্কতার সঙ্গে গাড়ি চালাতে হবে। কারণ আমাদের দেশে অনেক জনসংখ্যা। এখানে গাড়ি চালাতে সতর্ক হতে হবে। আমরা ড্রাইভিং প্রশিক্ষণের জন্য উপজেলা পর্যায় পর্যন্ত ব্যবস্থা করেছি। আমাদের প্রচুর চালক দরকার। দেশ যত স্বাবলম্বী হচ্ছে গাড়ি কেনার সামর্থ্যও তত বাড়ছে। সরকারি বাসে যারা ড্রাইভিং করে তাদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা আছে, বেসরকারি গাড়িতেও সেই ব্যবস্থা করতে হবে।

সম্প্রতি রাজধানীতে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ময়লার গাড়ি চাপায় নটরডেম কলেজের এক ছাত্র মারা যায়। এর পরদিনই উত্তর সিটি করপোরেশনের আরেকটি ময়লার গাড়ি চাপায় সাবেক প্রেস কর্মী মারা যান। দুটি ঘটনার দিকে ইঙ্গিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটার কী রহস্য, দক্ষিণে মারা গেল, পরদিন উত্তরে মারা গেল, এর কারণটা কী। এটার কারণ খুঁজে বের করতে হবে।’ ময়লার গাড়ি যারা চালায় তাদের গাড়ি চালানোর মতো দক্ষতা আছে কি না সেটা খতিয়ে দেখতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেন শেখ হাসিনা।

নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের চলমান আন্দোলনে এক শিক্ষার্থী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী তো নিজের গাড়িতে চড়েন, গণপরিবহনে চড়েন না, এজন্য তিনি জানেন না। সেই শিক্ষার্থীর বক্তব্যের জবাব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টিভিতে দেখলাম, এক শিক্ষার্থী বলছে আমি নাকি গণপরিবহনে চড়িনি। আমি রিকশায়, ভ্যানে, নৌকায় সব বাহনে চড়েছি। আমি বাংলাদেশটা চেনার জন্য, দেশের জন্য কাজ করতে সারাদেশ ঘুরে বেড়িয়েছি। তখন সবধরনের যানবাহনেই চড়েছি। আমরা যখন স্কুলে পড়তাম, বাসে করেই যেতাম। এমন কোনো যান নেই যাতে চড়িনি। আমি বাংলাদেশটাকে চিনতে না পারলে অর্থনৈতিকভাবে উন্নতি লাভ করতে পারতাম না।