লবণাক্ত, হাওর, পাহাড়ি জমিতে ফসল উৎপাদনে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে : কৃষিমন্ত্রী
- আপডেট : ১১:৪৫:৩০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২১
- / 117
দেশের ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর জন্য টেকসই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে উপকূলের লবণাক্ত, হাওর, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ প্রতিকূল পরিবেশে ও জমিতে ফসল উৎপাদনে সরকার এখন সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে কাজ করছে বলে জানিয়েছেন কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাক।
তিনি বলেন, বর্তমান কৃষিবান্ধব সরকারের আমলে দেশে খাদ্য নিরাপত্তা অর্জিত হয়েছে। সরকার এখন সকল মানুষের পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে নিরলস কাজ করছে। কিন্তু ক্রমহ্রাসমান চাষযোগ্য জমি, বিপরীতে ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠী ও জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তা টেকসই বা ধরে রাখা সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
রবিবার (৫ ডিসেম্বর) ঢাকায় হোটেল সোনারগাঁওয়ে বিশ্ব মৃত্তিকা দিবস উপলক্ষ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় আয়োজিত সেমিনার, শোকেসিং, সয়েল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড ও মৃত্তিকা দিবস পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এসব কথা বলেন। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট, খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), মৃত্তিকা বিজ্ঞান সমিতি এবং প্র্যাকটিক্যাল অ্যাকশন বাংলাদেশ সহযোগিতা এ অনুষ্ঠান আয়োজনে সহযোগিতা প্রদান করে।
এবারের বিশ্ব মৃত্তিকা দিবসের প্রতিপাদ্য হলো ‘লবণাক্ততা রোধ করি, মাটির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করি’। এর উপর গুরুত্ব দিয়ে কৃষিমন্ত্রী বলেন, দেশে লবণাক্ততা একটি বড় সমস্যা। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে লবণাক্ত জমির পরিমাণ আরও বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এ অবস্থায়, খাদ্য উৎপাদন ব্যবস্থা স্থিতিশীল ও টেকসই রাখতে হলে উপকূলীয় ও দক্ষিণাঞ্চলের লবণাক্ত জমিতে চাষযোগ্য জাত এবং উৎপাদন প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও ছড়িয়ে দিতে হবে।
সেজন্য, আমরা অগ্রাধিকারভিত্তিতে কাজ করে যাচ্ছি। ইতোমধ্যে আমাদের কৃষি বিজ্ঞানীরা অনেক ফসলের লবণাক্ততাসহিষ্ণু উন্নত জাত উদ্ভাবনে করতে সক্ষম হয়েছে। এসব জাত ও উৎপাদন প্রযুক্তি চাষীদের মধ্যে দ্রুত সম্প্রসারণের জন্য কাজ চলছে।
পরে কৃষিমন্ত্রী মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট প্রকাশিত ‘সয়েল অ্যাটলাস অব বাংলাদেশ’ বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন।
সেমিনারে জানান হয়, বাংলাদেশের প্রায় ২৫% এলাকা হচ্ছে উপকূলীয় এলাকা। উপকূলীয় ১৮ টি জেলার ৯৩টিরও বেশী উপজেলার ১০ লক্ষ হেক্টরেরও বেশী জমি বিভিন্ন মাত্রায় লবণাক্ততায় আক্রান্ত, যা এই এলাকার ফসলের নিবিড়তা বৃদ্ধির প্রধান অন্তরায় হিসেবে বিবেচিত।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিবেশ, বন, ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন এমপি এবং কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম। মৃত্তিকা সম্পদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক বিধান কুমার ভান্ডারের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন বিএআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান ড. শেখ মো. বখতিয়ার, এফএওর বাংলাদেশ প্রতিনিধি রবার্ট ডি সিম্পসন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব হাসানুজ্জামান কল্লোল।
পরে বিকালে কারিগরি সেশনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব মো. মেসবাহুল ইসলাম সয়েল কেয়ার অ্যাওয়ার্ড-২০২১, সয়েল অলিম্পিয়াড এবং মৃত্তিকা দিবসের পুরস্কার বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
এসময় তিনি বলেন, জনসংখ্যা যে হারে বাড়ছে, উপকূলের লবণাক্ত জমিকে কাজে লাগাতে না পারলে খাদ্য নিরাপত্তা বজায় রাখা সম্ভব হবে না। সেটিকে বিবেচনায় নিয়ে কৃষি মন্ত্রণালয় ও সংস্থাসমূহ সঠিক পথে নিরলসভাবে কাজ করছে। ফলে, আগে যেখানে বছরে একটি ফসল হতো, এখন সেখানে ২-৩টি ফসল হচ্ছে। এসব কার্যক্রমকে আরও জোরদার ও গতিশীল করতে মন্ত্রণালয় প্রচেষ্ঠা অব্যাহত রেখেছে।