একদিকে দাম সমন্বয়ের প্রস্তাব, অন্যদিকে হস্তক্ষেপ বন্ধের দাবি
- আপডেট : ০৫:০৭:১৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২
- / 182
বুধবার দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইর ডাকে ভোজ্য তেল নিয়ে এক মতবিনিয়ম সভায় এসে এসব কথা বলেন তারা।
এফবিসিসিআই সভাপতি বলেন, বিশ্ববাজারে প্রতিদিন সয়াবিন তেলের দাম ওঠানামা করছে। আর দেশে এক–দেড় মাস পরপর দাম সমন্বয় করা হয়। তাই বর্তমান প্রেক্ষাপটে ১৫ দিন পরপর সয়াবিনের দাম সমন্বয় করতে হবে। বিশ্ববাজারে দাম কমলে কমাতে হবে। আর দাম বাড়লে বাড়াতে হবে।
এ ছাড়া সয়াবিনের আমদানি পর্যায়ে ৫ শতাংশ ভ্যাট প্রত্যাহারের প্রস্তাব করেন জসিম উদ্দিন। একই সঙ্গে আগামী কোরবানি পর্যন্ত বাণিজ্যিকভাবে পরিশোধিত বোতলজাত ও খোলা সয়াবিন তেল আমদানি উন্মুক্ত করা এবং সান ফ্লাওয়ার, ক্যানোলাসহ সব ধরনের ভোজ্যতেল আমদানিতে শুল্ক ও কর প্রত্যাহারের বিষয়টি বিবেচনার সুপারিশ করেন তিনি।
এদিকে ভোজ্য তেল আমদানিকারক এই ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বাজারে সরকারের হস্তক্ষেপ পরিস্থিতি জটিল করে তুলছে। বরং বাজারকে বাজারের উপর ছেড়ে দিলেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে আসবে।
সভায় অংশ নেয়া টি কে গ্রুপের পরিচালক আতহার তাসলিম বলেন, এই মার্কেট যদি স্থিতিশীল রাখতে হয়, তাহলে প্রথমেই মার্কেটকে মার্কেটের মতো প্লে করতে দিতে হবে। আজকের এই পরিস্থিতির জন্য আমরা মিলমালিক, পাইকার ও খুচরা ব্যবসায়ী একে অন্যকে ব্লেইম করছি (দোষ চাপাচ্ছি), এটা মার্কেটের ডিস্ট্রিবিউশন চ্যানেলটাকে টুডে অর টুমরো ধংস করে দিবে। এটা ব্যবসার জন্য একটা অশনি সংকেত।
মিল মালিক প্রতিনিধিদের মধ্যে এস আলম গ্রুপের কাজী সালাহ উদ্দিন আহমদ মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বাজারে হস্তক্ষেপ বন্ধের পক্ষে মত দেন।
তিনি বলেন, প্রত্যেক বছর রমজানের আগে সরকার ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বৈঠক করে পণ্যের দাম কমানোর নির্দেশনা দেন। এই নির্দেশনার কারণে বাজারে অস্থিরতা তৈরি হয়। ২০০৯-১০ সালেও এরকম একটা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল। এর আগে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলেও এরকম হয়েছিল। কিন্তু পরে বিষয়টি ব্যবসায়ীদের উপর ছেড়ে দেওয়ায় বাজার ঠিকই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।
সিটি গ্রুপের উপদেষ্টা অমিতাভ চক্রবর্তী বলেন, ব্যবসাকে তার নিজের মতো চলতে দিতে হবে। সে তার ধারা অনুযায়ী চলবে। তাকে বাধা দিলে অস্থিরতা তৈরি হবে। বিশ্ববাজারে তেলের দাম বেড়েছে বলেই দেশের বাজারে বেড়েছে। এটা বাজারের উপর ছেড়ে দিতে হবে। বাজারে আস্তে আস্তে বাজার নিয়ন্ত্রণে চলে আসবে।
এসময় তিনি বলেন, সরকার যদি মনে করে ব্যবসায়ীরা বেশি লাভ করছে, তাহলে টিসিবির মাধ্যমে তেল আমদানি করুক। আমরা সহযোগিতা করব। এরপর সরকারই বাজারজাত করুক।
মৌলভীবাজার ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি গোলাম মাওলা বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে ৭৫০ ডলারের তেল এখন ১৯০০ ডলার ছাড়িয়ে গেছে। এই পরিস্থিতিতে সরকারের উচিৎ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে বসে আলোচনা করে বাজার পরিচালনা করা।
কিন্তু চাপাচাপি করলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলের মতো পরিস্থিতি তৈরি হবে। তখন পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠতে পারে।