ভবনটির আন্ডারগ্রাউন্ড বিস্ফোরণের উৎসস্থল

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : ০৬:২১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০২৩
  • / 126
গু‌লিস্তা‌নের সিদ্দিক বাজা‌রে ভব‌নে বি‌স্ফো‌র‌ণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত (বৃহস্প‌তিবার দুপুর) পাওয়া তথ্যের বরাত দি‌য়ে পুলিশ বল‌ছে, কু্উইন্স সেনিটারি মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডই বিস্ফোরণের উৎসস্থল। বেইজমেন্টের এই আন্ডারগ্রাউন্ড স্পেসটি রাজউকের বিধান অনুসারে খোলামেলা থাকলে সেখানে কোন ত্রুটি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে নিরসন করা যেত। বায়ু গ্যাসসহ অন্যান্য সমস্যারও সমাধান করা যেত।

কিন্তু বাড়ির মালিকরা টাকার লোভে আন্ডারগ্রাউন্ডকে এক সময় রান্নাঘর হিসেবে ব্যবহার করেছেন। সেই রান্না ঘরের গ্যাসের লাইন যথাযথভাবে অপসারণ না করে তার উপরেই সম্পূর্ণ এয়ার টাইট এসি করা নির্মাণসামগ্রীর মার্কেট বানিয়ে দিয়েছেন। দোকানের মালিক বিল্ডিং কোডের বিধান না মেনে ভাড়া নিয়ে বেইজম্যান্টের ১ ইঞ্চি জায়গাকেও ফাঁকা না রেখে ডেকোরেশন করে দোকান বানিয়ে সেখানেই তার কর্মচারী ও ক্রেতা সাধাণের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন।

পু‌লিশ বল‌ছে, এতগুলো প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি ভবনের মালিক এবং দোকানদারের স্বেচ্ছাচারিতা, লোভ এবং অবহেলারই ফল। জান এবং মালের এ ব্যাপক ক্ষতির অভিযোগে ভবন মালিক ওয়াহিদর রহমান, মতিউর রহমান এবং দোকান মালিক আব্দুল মোতালেব ওর‌ফে মিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক করা হয়ে‌ছে। জিজ্ঞসাবাদ শে‌ষে তা‌দের গ্রেপ্তার দে‌খি‌য়ে আদাল‌তে পাঠা‌নো হ‌বে।

বৃহস্প‌তিবার ডিএম‌পির মি‌ডিয়া সেন্টা‌রে আ‌য়ো‌জিত সংবাদ স‌ম্মেল‌নে ডিএম‌পির অ‌তি‌রিক্ত ক‌মিশনার (‌ডি‌বি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ব‌লেন, যে ভবনটিতে বিস্ফোরণ ঘটে তার নাম কুইন সেনিটারি মার্কেট। এক সময় এটার নাম ছিল কুইন ক্যাফে। ১০ তলা ভবনের প্ল্যান করা হলেও ১৯৯২ সাল পর্যন্ত বেইজমেন্ট ও একতলা কমপ্লিট ছিল। এর বেইজমেন্টে ছিল রান্নাঘর আর একতলায় ছিল খাবারের হোটেল। এই রান্নাঘরে কমার্শিয়াল গ্যাসের বড় লাইন ছিল যা পরে লিখিতভাবে তিতাসের কাছে সারেন্ডার করা হয়। ২০০৪ সালে ভবনটির সাততলা পর্যন্ত কমপ্লিট করা হয়। বর্তমানে একটি আন্ডারগ্রাউন্ড বেইজমেন্টসহ সাততলা পর্যন্ত ভবনটি কমপ্লিট আছে। ভবনটির প্রকৃত মালিক মরহুম হাজী মোহাম্মদ রেজাউর রহমান। ২০১১ সালে তার মৃত্যুতে তার তিন ছেলে, দুই মেয়ে এবং স্ত্রী বর্তমানে ভবনটির মালিক।

পর্যবেক্ষণের পাওয়া ত‌থ্যের বরাত দি‌য়ে তি‌নি ব‌লেন, ভবনটির বেইজমেন্টে পার্কিংয়ের কথা থাকলেও সেখানে এক সময় রান্না ঘর ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশ সেনিটারি নামক একটি কমার্শিয়াল প্রতিষ্ঠানে সেনিটারি মালামাল বিক্রি করা হয় প্রায় ১৮০০ স্কয়ার ফিটের এ আন্ডারগ্রাউন্ডে যা সম্পূর্ণটাই গ্লাসে ঘেরা। বড় বড় ২টি এসিতে ঠান্ডা করা হয় এ সেনিটারি দোকান। এ আন্ডারগ্রাউন্ডে আরও আছে একটি বড় পানির ট্যাংক। সাততলা ভবনের কোথায় সুয়ারেজ সেপটিক ট্যাংক অবস্থিত তা ভবনের মালিকরা নিশ্চিত না। ধারণা করা হ‌চ্ছে, উত্তর পাশের ভবনের সাথে এ অবনের যে আড়াই থে‌কে তিন ফুট গলি আছে সেখানেই দুই ভবনের সেপটিক ট্যাংক অবস্থিত।

তি‌নি ব‌লেন, ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে পার্কিং প্লেস না রেখে সেখানে কাঁচে ঘিরে সেনিটারি ব্যবসার জন্য ভাড়া দেয়া হয়েছিল। সেখানে ভেন্টিলেশনের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ভবনের স্যাপটিক ট্যাংকও কখনো পরিষ্কার করা হয়নি। এ অবস্থায় বিস্ফোরণের দায়-দায়িত্ব ভবন মালিক বা সেখানকার ব্যবসায়ীরা এড়াতে পারেন না বলে জানান তিনি।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, সবকিছু বিবেচনায় তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত একটি মামলা দায়ের করে সে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হবে।

পু‌লিশ জানায়, বেইজমেন্টে কার পার্কিং থাকলে বাতাসের ভেন্টিলেশন থাকত। কোন গ্যাস জমা হতো না। বিস্ফোরণও হয়তো হতো না।

সাততলা ভবনের বেইজমেন্টসহ তিনটি ফ্লোরের কমার্শিয়াল লোকজন, বাসা বাড়ির লোকজনের পয়োবর্জ্য যেখানে জমা হয় দীর্ঘ সময় সেই জায়গা পরিষ্কার না করায় সেখানেও বায়োগ্যাসের সৃ‌ষ্টি হ‌তে পারে, যা বিভিন্ন কারণে বিস্ফোরিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতির সৃষ্টি করে।

একসময় এই বেইজমেন্টের রান্নাঘরে কমার্শিয়াল বড় লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হতো যা পরে বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু বাড়ির অন্যান্য ফ্লোরের ডোমেস্টিক লাইন এখনো চলমান। ফলেএই লাইন সম্পূর্ণ বন্ধ না হয়ে সেখান দিয়েও তিতাস গ্যাস লিক হতে পারে। কোনভাবে জমা গ্যাসে স্পার্কের মাধ্যমে বিস্ফোরণের হতে পারে।

ভবন মালিকদের তথ্যমতে মূল ক্ষতিগ্রস্ত ভবন এবং তার উত্তরপাশে ব্র্যাক ব্যাংকের ভবনের মাঝখানে সরু একটি গলি আছে। এ গলিতে পয়োবর্জ্য পদার্থের সেপটিক ট্যাংক, এসির আউটার ইত্যাদি অবস্থিত। বিস্ফোরণে সেপটিক ট্যাংকের পাশের দেয়ালগুলো সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পয়োবর্জ্য পদার্থের বায়ো গ্যাসের বিস্ফোরণে এমনটি হতে পারে।

ভবনটির আন্ডারগ্রাউন্ড বা বেইজম্যান্টে বড় একটি সেনেটারি দোকান, নিচ তলায় ৫টি দোকান, দো’তলাতে সেনেটারি এবং কাপড়ের ২টি দোকান ছিল যেগুলোর জন্য অনেক কাঁচ এবং ইন্টেরিয়রের কাজ করা হয় এবং পাওয়ারফুল এসি ব্যবহার করা হয়। এসিগুলোকে সময়ে সময়ে সার্ভিসিং না করালে বা ত্রুটিপূর্ণ থাকলে তা থেকেও বিস্ফোরণের কারণ হতে পারে, যেটা ২/৩ বছর আগে গুলশানে আরব আমিরাতের ভিসা সেন্টারে ঘটেছিল।

ভবনটি কোন পরিত্যক্ত পাবলিক স্পেস বা ভবন নয়। ব্যক্তি মালিকানাধীন। বিভিন্ন ব্যবসায়ীর সার্বক্ষণিক নজরদারি ও সিসি ক্যামেরার সার্ভিলেন্সে ছিল এটি। ফলে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির জন্য যে পরিমাণ বিস্ফোরক প্রয়োজন তা এখানে সবার অজান্তে জমা রাখা প্রায় অসম্ভব।

বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিস, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ঢাকা মহানগরীর সিটিটিসি’র বোম্ব ডিসপোজাল টিম আলাদা আলাদাভাবে তদন্ত করছে। বিভিন্ন দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা একটা যৌক্তিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে রিপোর্ট দিবেন তাতেই প্রকৃত কারণটি জানা যাবে।

তবে এখনো পর্যন্ত বিস্ফোরক বা সেবুট্যাজের কোন আলামত সেখানে পাওয়া যায়নি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ভবনটির আন্ডারগ্রাউন্ড বিস্ফোরণের উৎসস্থল

আপডেট : ০৬:২১:২৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০২৩
গু‌লিস্তা‌নের সিদ্দিক বাজা‌রে ভব‌নে বি‌স্ফো‌র‌ণের ঘটনায় এখন পর্যন্ত (বৃহস্প‌তিবার দুপুর) পাওয়া তথ্যের বরাত দি‌য়ে পুলিশ বল‌ছে, কু্উইন্স সেনিটারি মার্কেটের আন্ডারগ্রাউন্ডই বিস্ফোরণের উৎসস্থল। বেইজমেন্টের এই আন্ডারগ্রাউন্ড স্পেসটি রাজউকের বিধান অনুসারে খোলামেলা থাকলে সেখানে কোন ত্রুটি দেখা দিলে তাৎক্ষণিকভাবে নিরসন করা যেত। বায়ু গ্যাসসহ অন্যান্য সমস্যারও সমাধান করা যেত।

কিন্তু বাড়ির মালিকরা টাকার লোভে আন্ডারগ্রাউন্ডকে এক সময় রান্নাঘর হিসেবে ব্যবহার করেছেন। সেই রান্না ঘরের গ্যাসের লাইন যথাযথভাবে অপসারণ না করে তার উপরেই সম্পূর্ণ এয়ার টাইট এসি করা নির্মাণসামগ্রীর মার্কেট বানিয়ে দিয়েছেন। দোকানের মালিক বিল্ডিং কোডের বিধান না মেনে ভাড়া নিয়ে বেইজম্যান্টের ১ ইঞ্চি জায়গাকেও ফাঁকা না রেখে ডেকোরেশন করে দোকান বানিয়ে সেখানেই তার কর্মচারী ও ক্রেতা সাধাণের জীবনকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলেছেন।

পু‌লিশ বল‌ছে, এতগুলো প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি ভবনের মালিক এবং দোকানদারের স্বেচ্ছাচারিতা, লোভ এবং অবহেলারই ফল। জান এবং মালের এ ব্যাপক ক্ষতির অভিযোগে ভবন মালিক ওয়াহিদর রহমান, মতিউর রহমান এবং দোকান মালিক আব্দুল মোতালেব ওর‌ফে মিন্টুকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আটক করা হয়ে‌ছে। জিজ্ঞসাবাদ শে‌ষে তা‌দের গ্রেপ্তার দে‌খি‌য়ে আদাল‌তে পাঠা‌নো হ‌বে।

বৃহস্প‌তিবার ডিএম‌পির মি‌ডিয়া সেন্টা‌রে আ‌য়ো‌জিত সংবাদ স‌ম্মেল‌নে ডিএম‌পির অ‌তি‌রিক্ত ক‌মিশনার (‌ডি‌বি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ ব‌লেন, যে ভবনটিতে বিস্ফোরণ ঘটে তার নাম কুইন সেনিটারি মার্কেট। এক সময় এটার নাম ছিল কুইন ক্যাফে। ১০ তলা ভবনের প্ল্যান করা হলেও ১৯৯২ সাল পর্যন্ত বেইজমেন্ট ও একতলা কমপ্লিট ছিল। এর বেইজমেন্টে ছিল রান্নাঘর আর একতলায় ছিল খাবারের হোটেল। এই রান্নাঘরে কমার্শিয়াল গ্যাসের বড় লাইন ছিল যা পরে লিখিতভাবে তিতাসের কাছে সারেন্ডার করা হয়। ২০০৪ সালে ভবনটির সাততলা পর্যন্ত কমপ্লিট করা হয়। বর্তমানে একটি আন্ডারগ্রাউন্ড বেইজমেন্টসহ সাততলা পর্যন্ত ভবনটি কমপ্লিট আছে। ভবনটির প্রকৃত মালিক মরহুম হাজী মোহাম্মদ রেজাউর রহমান। ২০১১ সালে তার মৃত্যুতে তার তিন ছেলে, দুই মেয়ে এবং স্ত্রী বর্তমানে ভবনটির মালিক।

পর্যবেক্ষণের পাওয়া ত‌থ্যের বরাত দি‌য়ে তি‌নি ব‌লেন, ভবনটির বেইজমেন্টে পার্কিংয়ের কথা থাকলেও সেখানে এক সময় রান্না ঘর ছিল। বর্তমানে বাংলাদেশ সেনিটারি নামক একটি কমার্শিয়াল প্রতিষ্ঠানে সেনিটারি মালামাল বিক্রি করা হয় প্রায় ১৮০০ স্কয়ার ফিটের এ আন্ডারগ্রাউন্ডে যা সম্পূর্ণটাই গ্লাসে ঘেরা। বড় বড় ২টি এসিতে ঠান্ডা করা হয় এ সেনিটারি দোকান। এ আন্ডারগ্রাউন্ডে আরও আছে একটি বড় পানির ট্যাংক। সাততলা ভবনের কোথায় সুয়ারেজ সেপটিক ট্যাংক অবস্থিত তা ভবনের মালিকরা নিশ্চিত না। ধারণা করা হ‌চ্ছে, উত্তর পাশের ভবনের সাথে এ অবনের যে আড়াই থে‌কে তিন ফুট গলি আছে সেখানেই দুই ভবনের সেপটিক ট্যাংক অবস্থিত।

তি‌নি ব‌লেন, ভবনের আন্ডারগ্রাউন্ডে পার্কিং প্লেস না রেখে সেখানে কাঁচে ঘিরে সেনিটারি ব্যবসার জন্য ভাড়া দেয়া হয়েছিল। সেখানে ভেন্টিলেশনের কোনো ব্যবস্থা রাখা হয়নি। ভবনের স্যাপটিক ট্যাংকও কখনো পরিষ্কার করা হয়নি। এ অবস্থায় বিস্ফোরণের দায়-দায়িত্ব ভবন মালিক বা সেখানকার ব্যবসায়ীরা এড়াতে পারেন না বলে জানান তিনি।

হারুন অর রশীদ আরও বলেন, সবকিছু বিবেচনায় তিনজনকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে অবহেলাজনিত একটি মামলা দায়ের করে সে মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাদের আদালতে পাঠানো হবে।

পু‌লিশ জানায়, বেইজমেন্টে কার পার্কিং থাকলে বাতাসের ভেন্টিলেশন থাকত। কোন গ্যাস জমা হতো না। বিস্ফোরণও হয়তো হতো না।

সাততলা ভবনের বেইজমেন্টসহ তিনটি ফ্লোরের কমার্শিয়াল লোকজন, বাসা বাড়ির লোকজনের পয়োবর্জ্য যেখানে জমা হয় দীর্ঘ সময় সেই জায়গা পরিষ্কার না করায় সেখানেও বায়োগ্যাসের সৃ‌ষ্টি হ‌তে পারে, যা বিভিন্ন কারণে বিস্ফোরিত হয়ে ব্যাপক ক্ষতির সৃষ্টি করে।

একসময় এই বেইজমেন্টের রান্নাঘরে কমার্শিয়াল বড় লাইনে গ্যাস সরবরাহ করা হতো যা পরে বন্ধ করে দেয়া হয়। কিন্তু বাড়ির অন্যান্য ফ্লোরের ডোমেস্টিক লাইন এখনো চলমান। ফলেএই লাইন সম্পূর্ণ বন্ধ না হয়ে সেখান দিয়েও তিতাস গ্যাস লিক হতে পারে। কোনভাবে জমা গ্যাসে স্পার্কের মাধ্যমে বিস্ফোরণের হতে পারে।

ভবন মালিকদের তথ্যমতে মূল ক্ষতিগ্রস্ত ভবন এবং তার উত্তরপাশে ব্র্যাক ব্যাংকের ভবনের মাঝখানে সরু একটি গলি আছে। এ গলিতে পয়োবর্জ্য পদার্থের সেপটিক ট্যাংক, এসির আউটার ইত্যাদি অবস্থিত। বিস্ফোরণে সেপটিক ট্যাংকের পাশের দেয়ালগুলো সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পয়োবর্জ্য পদার্থের বায়ো গ্যাসের বিস্ফোরণে এমনটি হতে পারে।

ভবনটির আন্ডারগ্রাউন্ড বা বেইজম্যান্টে বড় একটি সেনেটারি দোকান, নিচ তলায় ৫টি দোকান, দো’তলাতে সেনেটারি এবং কাপড়ের ২টি দোকান ছিল যেগুলোর জন্য অনেক কাঁচ এবং ইন্টেরিয়রের কাজ করা হয় এবং পাওয়ারফুল এসি ব্যবহার করা হয়। এসিগুলোকে সময়ে সময়ে সার্ভিসিং না করালে বা ত্রুটিপূর্ণ থাকলে তা থেকেও বিস্ফোরণের কারণ হতে পারে, যেটা ২/৩ বছর আগে গুলশানে আরব আমিরাতের ভিসা সেন্টারে ঘটেছিল।

ভবনটি কোন পরিত্যক্ত পাবলিক স্পেস বা ভবন নয়। ব্যক্তি মালিকানাধীন। বিভিন্ন ব্যবসায়ীর সার্বক্ষণিক নজরদারি ও সিসি ক্যামেরার সার্ভিলেন্সে ছিল এটি। ফলে বিপুল ক্ষয়ক্ষতির জন্য যে পরিমাণ বিস্ফোরক প্রয়োজন তা এখানে সবার অজান্তে জমা রাখা প্রায় অসম্ভব।

বিস্ফোরণের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে ফায়ার সার্ভিস, বাংলাদেশ সেনাবাহিনী, ঢাকা মহানগরীর সিটিটিসি’র বোম্ব ডিসপোজাল টিম আলাদা আলাদাভাবে তদন্ত করছে। বিভিন্ন দিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে তারা একটা যৌক্তিক সিদ্ধান্তে উপনীত হয়ে রিপোর্ট দিবেন তাতেই প্রকৃত কারণটি জানা যাবে।

তবে এখনো পর্যন্ত বিস্ফোরক বা সেবুট্যাজের কোন আলামত সেখানে পাওয়া যায়নি।