জঙ্গিরা নির্বাচন নস্যাৎ করতে চাইলে প্রতিহত করা হবে: ডিএমপি কমিশনার

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : ০৭:০০:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩
  • / 182
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জঙ্গিদের বিভিন্ন গ্রুপ থাকতে পারে। যারা গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে চায়, গোষ্ঠী স্বার্থকে উদ্ধার কতে চায় তাদের দমন করা হবে। তাদের মধ্যে যদি জঙ্গিরা থেকে থাকে প্রতিহত করতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশের সে সক্ষমতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান।

রোববার বিকেলে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘উগ্রবাদ প্রতিরোধে সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) এই কর্মশালার আয়োজন করে।

এতে শতাধিক ক্রাইম রিপোর্টার অংশ নেন। ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমালের সভাপতিত্বে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডিএমপি কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান।

নির্বাচন ঘিরে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে অভিযান পুলিশের একটি নিয়মিত কার্যক্রম। বিশেষ বিশেষ সময়ে অস্ত্র উদ্ধারের বিরুদ্ধে অভিযান জোরালো করা হয়। আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে বিশেষ কার্যক্রম নেয়া হবে।

তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে উগ্রবাদীদের বিভিন্ন গ্রুপ যারা আছে তারা সক্রিয় হয়ে উঠলে তাদের প্রতিহত করার মতো স্বক্ষমতা বাংলাদেশ পুলিশের রয়েছে।

হাবিবুর রহমান বলেন, প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সমাজে দেখা যায়। বর্তমানে এই ধর্মীয় উগ্রবাদ দেখা যায়। উগ্রবাদ বা জঙ্গিবাদ নির্মূল সম্ভব নয় বরং নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। উগ্রবাদ নিয়ন্ত্রণে সিটিটিসি সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা জঙ্গিবাদ বিষয়ে এখন অনেকখানি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারি।

তিনি আরও বলেন, অতীতে দেখা গেছে ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ ঈদ, পূজা পার্বণ, বড়দিন, বৌদ্দ পূর্ণিমা সকল ধর্মের মানুষ মিলে-মিশে করতো। ১৯৪৭ সালে ধর্মীয় সংখ্যা গরিষ্ঠতার ভিত্তিতে দেশ ভাগ হলেও মানুষের ধর্মীয় সম্প্রীতিতে কোন প্রভাব পড়েনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও সকল ধর্মের মানুষকে নিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ গড়ে তোলেন। এই বাঙালি জাতীয়তাবাদের ওপর ভিত্তি করে একাত্তরে দেশ স্বাধীন হয়েছে, বাহাত্তরের সংবিধান হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সময় স্বার্থান্বেষী মহল তাদের স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করেছে। ধর্মীয় উগ্রবাদ উস্কে দিয়েছে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান বলেন, সাংবাদিকরা আলোকিত সমাজ গড়ার কারিগর। উগ্রবাদের বিষয়ে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনন্য হবে। সমাজে উগ্রবাদ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। একটি ইতিবাচক দিক তৈরি করে দেয়ার জন্য উগ্রবাদ প্রতিরোধে সাংবাদিকদের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা গুরুত্ব রাখবে বলে আমি মনে করি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, জঙ্গিবাদ বাংলাদেশের জন্য নতুন বিষয় নয়। ১৯৯২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উগ্রবাদের যাত্রা শুরু হয়। সেটা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাত্রা দেয়। জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। হলি আর্টিজান হামলার সময় যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তখন সাংবাদিকদের লেখনির মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। সাংবাদিকদের মাধ্যমে সুচিন্তিত মতামত নিয়ে পরবর্তী কর্মপন্থা নিয়ে থাকে সিটিটিসি।

তিনি বলেন, উগ্রবাদী তৎপরতা দেশে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে নিরাপদ দেশ। গত তিন বছরে দেশে কোন জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেনি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনেও উগ্রবাদী তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে।

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, সিটিটিসির যুগ্ম কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ, সাবেক সভাপতি ইশারফ হোসেন ইশা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান খান, আলাউদ্দিন আরিফ, ক্র্যাবের যুগ্ম সম্পাদক রুদ্র মিজান, সাংগঠনিক সম্পাদক বকুল আহমেদ, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ইমু, কার্যনির্বাহী সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন, এনামুল কবীর রূপম ও সিনিয়র সাংবাদিক জুলফিকার আলী মাণিক।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

জঙ্গিরা নির্বাচন নস্যাৎ করতে চাইলে প্রতিহত করা হবে: ডিএমপি কমিশনার

আপডেট : ০৭:০০:২৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৮ অক্টোবর ২০২৩
জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে জঙ্গিদের বিভিন্ন গ্রুপ থাকতে পারে। যারা গণতন্ত্রকে নস্যাৎ করতে চায়, গোষ্ঠী স্বার্থকে উদ্ধার কতে চায় তাদের দমন করা হবে। তাদের মধ্যে যদি জঙ্গিরা থেকে থাকে প্রতিহত করতে হবে। বাংলাদেশ পুলিশের সে সক্ষমতা রয়েছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) কমিশনার অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান।

রোববার বিকেলে রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন (ক্র্যাব) আয়োজিত ‘উগ্রবাদ প্রতিরোধে সাংবাদিকদের ভূমিকা’ শীর্ষক কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। ডিএমপির কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্স ন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট (সিটিটিসি) এই কর্মশালার আয়োজন করে।

এতে শতাধিক ক্রাইম রিপোর্টার অংশ নেন। ক্র্যাব সভাপতি মির্জা মেহেদী তমালের সভাপতিত্বে আয়োজিত কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন ডিএমপি কমিশনার মো. হাবিবুর রহমান।

নির্বাচন ঘিরে অবৈধ অস্ত্রের ব্যবহার বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপি কমিশনার বলেন, অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে অভিযান পুলিশের একটি নিয়মিত কার্যক্রম। বিশেষ বিশেষ সময়ে অস্ত্র উদ্ধারের বিরুদ্ধে অভিযান জোরালো করা হয়। আসন্ন নির্বাচন সামনে রেখে অবৈধ অস্ত্রের বিরুদ্ধে বিশেষ কার্যক্রম নেয়া হবে।

তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে উগ্রবাদীদের বিভিন্ন গ্রুপ যারা আছে তারা সক্রিয় হয়ে উঠলে তাদের প্রতিহত করার মতো স্বক্ষমতা বাংলাদেশ পুলিশের রয়েছে।

হাবিবুর রহমান বলেন, প্রাচীনকাল থেকেই বিভিন্ন গোষ্ঠী ও সমাজে দেখা যায়। বর্তমানে এই ধর্মীয় উগ্রবাদ দেখা যায়। উগ্রবাদ বা জঙ্গিবাদ নির্মূল সম্ভব নয় বরং নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব। উগ্রবাদ নিয়ন্ত্রণে সিটিটিসি সক্ষমতার পরিচয় দিয়েছে। আমরা জঙ্গিবাদ বিষয়ে এখন অনেকখানি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারি।

তিনি আরও বলেন, অতীতে দেখা গেছে ভারতীয় উপমহাদেশের মানুষ ঈদ, পূজা পার্বণ, বড়দিন, বৌদ্দ পূর্ণিমা সকল ধর্মের মানুষ মিলে-মিশে করতো। ১৯৪৭ সালে ধর্মীয় সংখ্যা গরিষ্ঠতার ভিত্তিতে দেশ ভাগ হলেও মানুষের ধর্মীয় সম্প্রীতিতে কোন প্রভাব পড়েনি। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানও সকল ধর্মের মানুষকে নিয়ে বাঙালি জাতীয়তাবাদ গড়ে তোলেন। এই বাঙালি জাতীয়তাবাদের ওপর ভিত্তি করে একাত্তরে দেশ স্বাধীন হয়েছে, বাহাত্তরের সংবিধান হয়েছে। কিন্তু বিভিন্ন সময় স্বার্থান্বেষী মহল তাদের স্বার্থে ধর্মকে ব্যবহার করেছে। ধর্মীয় উগ্রবাদ উস্কে দিয়েছে।

সাংবাদিকদের উদ্দেশে অতিরিক্ত আইজিপি হাবিবুর রহমান বলেন, সাংবাদিকরা আলোকিত সমাজ গড়ার কারিগর। উগ্রবাদের বিষয়ে সাংবাদিকদের ভূমিকা অনন্য হবে। সমাজে উগ্রবাদ শূন্যের কোঠায় নামিয়ে আনতে সাংবাদিকদের পেশাগত দায়িত্বের পাশাপাশি নৈতিক দায়িত্ব রয়েছে। একটি ইতিবাচক দিক তৈরি করে দেয়ার জন্য উগ্রবাদ প্রতিরোধে সাংবাদিকদের ভূমিকা শীর্ষক কর্মশালা গুরুত্ব রাখবে বলে আমি মনে করি। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে সিটিটিসির প্রধান মো. আসাদুজ্জামান বলেন, জঙ্গিবাদ বাংলাদেশের জন্য নতুন বিষয় নয়। ১৯৯২ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে উগ্রবাদের যাত্রা শুরু হয়। সেটা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন মাত্রা দেয়। জঙ্গিবাদ একটি বৈশ্বিক সমস্যা। হলি আর্টিজান হামলার সময় যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল তখন সাংবাদিকদের লেখনির মাধ্যমে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করে। সাংবাদিকদের মাধ্যমে সুচিন্তিত মতামত নিয়ে পরবর্তী কর্মপন্থা নিয়ে থাকে সিটিটিসি।

তিনি বলেন, উগ্রবাদী তৎপরতা দেশে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। বাংলাদেশ এখন দক্ষিণ এশিয়ার সবচেয়ে নিরাপদ দেশ। গত তিন বছরে দেশে কোন জঙ্গি হামলার ঘটনা ঘটেনি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্রতিবেদনেও উগ্রবাদী তৎপরতা নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ অনেক দূর এগিয়েছে।

কর্মশালায় উপস্থিত ছিলেন, সিটিটিসির যুগ্ম কমিশনার মো. কামরুজ্জামান, ক্র্যাবের সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশীদ, সাবেক সভাপতি ইশারফ হোসেন ইশা, সাবেক সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান খান, আলাউদ্দিন আরিফ, ক্র্যাবের যুগ্ম সম্পাদক রুদ্র মিজান, সাংগঠনিক সম্পাদক বকুল আহমেদ, প্রশিক্ষণ ও গবেষণা সম্পাদক ইসমাইল হোসেন ইমু, কার্যনির্বাহী সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন, এনামুল কবীর রূপম ও সিনিয়র সাংবাদিক জুলফিকার আলী মাণিক।