দুই ঘণ্টার আন্দোলনে স্থবির ঢাকা, উপচে পড়া ভিড় মেট্রোতেও

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : ০৮:১৮:১৪ অপরাহ্ন, সোমাবার, ৮ জুলাই ২০২৪
  • / 66
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজও সড়ক অবরোধ করেছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৪টার পরেও কারওয়ানবাজার ও ফার্মগেটসহ রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।

ফলে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে ব্যস্ততম নগরীতে। যার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর মতিঝিল-পল্টনসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায়। কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরা মানুষ বাস কিংবা অন্যান্য পরিবহন ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে সব স্তরের কর্মজীবী মানুষরা এখন চলাচল করছেন মেট্রোরেলে।

যে কারণে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় পরিচালিত এ পরিবহনে উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। সোমবার (৮ জুলাই) বিকেল ৪টা থেকে মেট্রোরেলের মতিঝিল অংশ থেকে প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে। শুধু মতিঝিল স্টেশনেই নয়, যাত্রীজট দেখা যায় বাংলাদেশ সচিবালয় স্টেশনেও।

কামরুজ্জামান সোহাগ নামে এক যাত্রী জানান, বিকেল ৩টায় তিনি মতিঝিল মেট্রোরেল স্টেশনে আসেন মিরপুর-১১ নম্বরে যাবেন বলে। মেট্রোয় উঠতে পেরেছেন বিকাল সোয়া চারটায়। যে সময় উঠেছেন, সে সময় বগিগুলোয় তিল ধারণের জায়গা ছিল না। অনেক কষ্টে অন্যান্য যাত্রীদের ঠেলে ট্রেনে ওঠেন।

সচিবালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট পর্যন্ত মেট্রোরেলে ভয়াবহ রকমের যাত্রীজট ছিল। ট্রেনে এসি চললেও মানুষের শরীরের তাপে পরিবেশ গরম হয়ে উঠছিল। বিজয় সরণির পর থেকে কিছুটা যাত্রীজট কমে। মিরপুর ১১ পর্যন্ত আসার পর অল্প কয়েকজন সিটে বসতে পেরেছেন বলেও জানান তিনি।

মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা বসিকুল ইসলাম নামে এক যাত্রী জানান, তিনি সাধারণত বাসে যাতায়াত করেন। পল্টনে অবরোধের কারণে বাস চলাচল করতে পারছে না। বাধ্য হয়ে মেট্রোরেলে উঠেছেন তিনি। আগারগাঁও নেমে সেখান থেকে অন্য পরিবহনে বাসায় ফিরবেন তিনি।

এর আগে মতিঝিল স্টেশনে দেখা যায়- টিকিট কাউন্টার, টিউশন কম্পার্টমেন্টসহ প্রায় সব জায়গায় যাত্রী ঠাসা। একটি ট্রেন এলেই শ’য়ে শ’য়ে মানুষ ওঠার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। ১০ মিনিট পর পর ট্রেন এলেও রেল কম্পার্টমেন্ট থেকে যাত্রীদের স্রোত কমছে না।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, উদ্বোধনের পর কখনও দিনে এত বেশি যাত্রী তারা দেখেননি। যাত্রীদের চাপে র‌্যাপিড ও এমআরটি রিডার মেশিনগুলো হ্যাং করছে।

এদিকে রাজধানীর গুলিস্তানে জিরো পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। এতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়ের চারপাশের রাস্তায় আটকা পড়েছে শতাধিক যানবাহন। এ দিন দুপুর ৩টার পর ক্যাম্পাসের কাঁঠালতলা থেকে মিছিল নিয়ে গুলিস্তান অভিমুখে যাত্রা করেন তারা।

এ সময় তাঁতিবাজার মোড়, বংশাল ও ফুলবাড়িয়ায় হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে তিন দফায় পুলিশ তাদের বাধা দিলেও বাধা উপেক্ষা করে জিরো পয়েন্টে গিয়ে অবস্থান নেন তারা।

গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় অবরোধ করায় যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন অফিসফেরত কর্মজীবী মানুষ। বাসে থাকা অনেক যাত্রীকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে রওনা করতেও দেখা যায়।

এছাড়াও বিভিন্ন সড়ক বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হওয়া মানুষজন। গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে দেখা গেছে লোকজনকে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দুই ঘণ্টার আন্দোলনে স্থবির ঢাকা, উপচে পড়া ভিড় মেট্রোতেও

আপডেট : ০৮:১৮:১৪ অপরাহ্ন, সোমাবার, ৮ জুলাই ২০২৪
সরকারি চাকরিতে কোটা বাতিলের দাবিতে পূর্ব ঘোষিত ‘বাংলা ব্লকেড’ কর্মসূচির অংশ হিসেবে আজও সড়ক অবরোধ করেছেন দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিকেল সাড়ে ৪টার পরেও কারওয়ানবাজার ও ফার্মগেটসহ রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নেন আন্দোলনকারীরা।

ফলে প্রায় দুই ঘণ্টা যান চলাচল বন্ধ থাকে ব্যস্ততম নগরীতে। যার প্রভাব পড়েছে রাজধানীর মতিঝিল-পল্টনসহ আশপাশের বিভিন্ন এলাকায়। কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরা মানুষ বাস কিংবা অন্যান্য পরিবহন ব্যবহার করতে পারছেন না। ফলে সব স্তরের কর্মজীবী মানুষরা এখন চলাচল করছেন মেট্রোরেলে।

যে কারণে বৈদ্যুতিক ব্যবস্থায় পরিচালিত এ পরিবহনে উপচেপড়া ভিড় দেখা যাচ্ছে। সোমবার (৮ জুলাই) বিকেল ৪টা থেকে মেট্রোরেলের মতিঝিল অংশ থেকে প্রচণ্ড ভিড় দেখা গেছে। শুধু মতিঝিল স্টেশনেই নয়, যাত্রীজট দেখা যায় বাংলাদেশ সচিবালয় স্টেশনেও।

কামরুজ্জামান সোহাগ নামে এক যাত্রী জানান, বিকেল ৩টায় তিনি মতিঝিল মেট্রোরেল স্টেশনে আসেন মিরপুর-১১ নম্বরে যাবেন বলে। মেট্রোয় উঠতে পেরেছেন বিকাল সোয়া চারটায়। যে সময় উঠেছেন, সে সময় বগিগুলোয় তিল ধারণের জায়গা ছিল না। অনেক কষ্টে অন্যান্য যাত্রীদের ঠেলে ট্রেনে ওঠেন।

সচিবালয়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, ফার্মগেট পর্যন্ত মেট্রোরেলে ভয়াবহ রকমের যাত্রীজট ছিল। ট্রেনে এসি চললেও মানুষের শরীরের তাপে পরিবেশ গরম হয়ে উঠছিল। বিজয় সরণির পর থেকে কিছুটা যাত্রীজট কমে। মিরপুর ১১ পর্যন্ত আসার পর অল্প কয়েকজন সিটে বসতে পেরেছেন বলেও জানান তিনি।

মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা বসিকুল ইসলাম নামে এক যাত্রী জানান, তিনি সাধারণত বাসে যাতায়াত করেন। পল্টনে অবরোধের কারণে বাস চলাচল করতে পারছে না। বাধ্য হয়ে মেট্রোরেলে উঠেছেন তিনি। আগারগাঁও নেমে সেখান থেকে অন্য পরিবহনে বাসায় ফিরবেন তিনি।

এর আগে মতিঝিল স্টেশনে দেখা যায়- টিকিট কাউন্টার, টিউশন কম্পার্টমেন্টসহ প্রায় সব জায়গায় যাত্রী ঠাসা। একটি ট্রেন এলেই শ’য়ে শ’য়ে মানুষ ওঠার জন্য হুমড়ি খেয়ে পড়ছে। ১০ মিনিট পর পর ট্রেন এলেও রেল কম্পার্টমেন্ট থেকে যাত্রীদের স্রোত কমছে না।

সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে, উদ্বোধনের পর কখনও দিনে এত বেশি যাত্রী তারা দেখেননি। যাত্রীদের চাপে র‌্যাপিড ও এমআরটি রিডার মেশিনগুলো হ্যাং করছে।

এদিকে রাজধানীর গুলিস্তানে জিরো পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। এতে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এই মোড়ের চারপাশের রাস্তায় আটকা পড়েছে শতাধিক যানবাহন। এ দিন দুপুর ৩টার পর ক্যাম্পাসের কাঁঠালতলা থেকে মিছিল নিয়ে গুলিস্তান অভিমুখে যাত্রা করেন তারা।

এ সময় তাঁতিবাজার মোড়, বংশাল ও ফুলবাড়িয়ায় হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে তিন দফায় পুলিশ তাদের বাধা দিলেও বাধা উপেক্ষা করে জিরো পয়েন্টে গিয়ে অবস্থান নেন তারা।

গুরুত্বপূর্ণ এই মোড় অবরোধ করায় যান চলাচল বন্ধ হওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন অফিসফেরত কর্মজীবী মানুষ। বাসে থাকা অনেক যাত্রীকে নেমে হেঁটে গন্তব্যে রওনা করতেও দেখা যায়।

এছাড়াও বিভিন্ন সড়ক বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হওয়া মানুষজন। গাড়ি চলাচল বন্ধ থাকায় পায়ে হেঁটেই গন্তব্যের উদ্দেশ্যে রওনা দিতে দেখা গেছে লোকজনকে।