উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমের জন্য আজ মঙ্গলবার থেকে আর কোনো কারিগরি সহায়তা দেবে না মাইক্রোসফট। এতে সফটওয়্যার হালনাগাদ ও নিরাপত্তা সংশোধনীর মতো সুবিধাগুলো পাবেন না ব্যবহারকারীরা। এর ফলে উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমে চলা কম্পিউটার সাইবার হামলার ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ঝুঁকি এড়াতে দ্রুত উইন্ডোজ ১১ অপারেটিং সিস্টেমে শিফট করার পরামর্শও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
মাইক্রোসফট জানিয়েছে, ব্যক্তিগত ব্যবহারকারীরা চাইলে উইন্ডোজ ১০ অপারেটিং সিস্টেমে চলা কম্পিউটারে বিনা মূল্যে উইন্ডোজ ১১ ব্যবহার করতে পারবেন। তবে সব পুরোনো মডেলের কম্পিউটারে উইন্ডোজ ১১ ব্যবহার করা যাবে না।
ইউরোপের ইউজারদের জন্য প্রতিষ্ঠানটির বার্তা, ইউরোপে বসবাসকারী উইন্ডোজ ১০ ব্যবহারকারীরা চাইলে এক্সটেন্ডেড সিকিউরিটি আপডেট সুবিধা নিতে পারবেন। এর মাধ্যমে তারা ২০২৬ সালের অক্টোবর পর্যন্ত নিরাপত্তা পেলেও নতুন সুবিধা বা প্রযুক্তিগত কোনো সহায়তা পাবেন না।
আর ইউরোপের বাইরের গ্রাহকদের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠানটি জানায়, অন্য অঞ্চলের ব্যবহারকারীদের এ সুবিধা পেতে হলে কম্পিউটারে সর্বশেষ সংস্করণের উইন্ডোজ ১০ থাকার পাশাপাশি মাইক্রোসফট অ্যাকাউন্ট এবং ব্যাকআপ সম্পন্ন থাকতে হবে। অন্যথায় প্রতি কম্পিউটারের জন্য ৩০ ডলার খরচ করতে হবে। বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের জন্য এই খরচ প্রতি কম্পিউটারের জন্য ৬১ ডলার নির্ধারণ করা হয়েছে। অঞ্চলভেদে এ পরিমাণ কিছুটা ভিন্ন হতে পারে।
মাইক্রোসফটের তথ্য বলছে, বর্তমানে বিশ্বজুড়ে ১৪০ কোটি কম্পিউটারে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করা হয়, যার মধ্যে প্রায় ৪৩ শতাংশই চলে উইন্ডোজ ১০–এ। শুধু যুক্তরাজ্যে এখনো দুই কোটির বেশি মানুষ উইন্ডোজ ১০ ব্যবহার করছেন।
ব্রিটিশ ভোক্তা নির্দেশিকা সংস্থা উইচের সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, ব্যবহারকারীদের প্রায় এক–চতুর্থাংশ মাইক্রোসফটের সহায়তা বন্ধ হওয়ার পরও পুরোনো সংস্করণটি ব্যবহার চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছেন। অন্যদিকে প্রতি সাতজনের একজন জানিয়েছেন, তাঁরা নতুন কম্পিউটার কেনার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।
মাইক্রোসফটের এ সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে ভোক্তা সংগঠনগুলো। তাদের দাবি, মাইক্রোসফটের এই সিদ্ধান্তের ফলে অপ্রয়োজনীয় ব্যয় ও প্রযুক্তি বর্জ্যের পরিমাণ আরও বাড়বে। পুরোনো কিন্তু সচল কম্পিউটারগুলোকে অচল করে দেওয়ার এ প্রক্রিয়া পরিবেশের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।
এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ভোক্তা অধিকার সংস্থা পিআইআরজির জ্যেষ্ঠ পরিচালক নাথান প্রোক্টর বলেন, উইন্ডোজ ১০–এর সহায়তা বন্ধ করা ভোক্তা ও পরিবেশ দুয়ের জন্যই একটি বিপর্যয়। বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত কম্পিউটার অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ। আমাদের এমন প্রযুক্তি প্রয়োজন, যা টেকসই ও দীর্ঘমেয়াদি।
সূত্র: বিবিসি