চলমান শিক্ষক আন্দোলনের দাবিগুলো দ্রুত মেনে নিয়ে তাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য প্রধান উপদেষ্টার হস্তক্ষেপ কামনা করেছে জাতীয় শিক্ষক ফোরাম। স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী এবং এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনে সংহতি প্রকাশ করে সাত দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।
সোমবার দুপুরে পুরানা পল্টনে সংগঠনের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই দাবি জানানো হয়। একইসঙ্গে দাবি আদায়ে তিন দফা কর্মসূচিও ঘোষণা করা হয়েছে।
কর্মসূচি হলো-চলমান শিক্ষক আন্দোলনের সব শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে একাত্মতা পোষণ ও অংশগ্রহণ; দাবি আদায় না হলে শনিবার সারা দেশে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন এবং ২৬ অক্টোবর জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধান উপদেষ্টা বরাবর স্মারকলিপি পেশ।
সাত দফা দাবির মধ্যে রয়েছে-এমপিভুক্ত শিক্ষকদেরকে নিঃস্বার্থভাবে ২০ শতাংশ বাড়ি ভাড়া প্রদান; দেড় হাজার টাকা চিকিৎসা ভাতা; এমপিওভুক্ত কর্মচারীদের ৭৫ শতাংশ উৎসব ভাতা প্রদান; এক হাজার ৮৯টি স্বতন্ত্র এবতেদায়ী মাদরাসার এমপিও ফাইলে প্রধান উপদেষ্টার স্বাক্ষর করে গেজেট প্রকাশ ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে অনুদানবিহীন স্বতন্ত্র ইবতেদায়ী মাদরাসাগুলো এমপিওর জন্য গণ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা; চার শতাংশ কর্তন বন্ধ এবং অবসরকালীন প্রাপ্ত অর্থ অনধিক ৬ মাসের মধ্যে প্রদান করা;
শিক্ষকদের হয়রানি ও হামলার বিচার, শিক্ষক সুরক্ষা আইন ও সুনির্দিষ্ট বেতন কাঠামো প্রণয়ন, সকল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ প্রদান, শিক্ষার সর্বস্তরে ধর্মশিক্ষা বাধ্যতামূলকরণ, সব পাবলিক, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগ চালু করা এবং সর্বোপরি শিক্ষায় বৈষম্য নিরসনে শিক্ষাব্যবস্থা জাতীয়করণ করা।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে জাতীয় শিক্ষক ফোরামের কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি মাওলানা এবিএম জাকারিয়া বলেন, শিক্ষা বর্ষের শেষ পর্যায়ে এসে শিক্ষক আন্দোলনে শিক্ষা ব্যবস্থা স্থবির হয়ে পড়েছে। সব স্কুল,কলেজ,মাদরাসা তালাবদ্ধ।
সামনে নির্বাচনি পরীক্ষা,বার্ষিক পরীক্ষা, তদুপরি এ বৎসরে পঞ্চম ও অষ্টম শ্রেণীর বৃত্তি পরীক্ষার প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে। তাই সরকারের উচিত দ্রুত দাবি মেনে নিয়ে শিক্ষকদের শ্রেণিকক্ষে পাঠানোর ব্যবস্থা করা। নতুবা শিক্ষক আন্দোলন দীর্ঘায়িত হলে দেশের শিক্ষা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়বে, তাতে শিক্ষার ক্ষতি কাটিয়ে ওঠা সম্ভব হবে না।
এই অচলাবস্থা নিরসন করে শিক্ষক- কর্মচারীদের বিদ্যালয়ে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করতে প্রধান উপদেষ্টা ড. মোহাম্মদ ইউনুসের সরাসরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপনা করে সেক্রেটারি জেনারেল প্রভাষক ডা. আব্দুস সবুর। উপস্থিত ছিলেন ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি অধ্যাপক নাসির উদ্দিন খান, কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি উপাধ্যক্ষ মাওলানা মোঃ নেছার উদ্দিন, অধ্যাপক ড. কামরুজ্জামান, জয়েন্ট সেক্রেটারি জেনারেল ইশতিয়াক আল আমীন, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক কেএম জাহিদ তিতুমীরসহ অন্যান্য নেতারা।