আত্মগোপনে ২৯ বছর থেকেও শেষ রক্ষা হলো না

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০২:১০:৪৩ অপরাহ্ন, সোমাবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 291
উচ্চশিক্ষিত হলেও কোনো চাকরিতে যোগদান করেননি। নাম-পরিচয় পরিবর্তন করে ‘রডমিস্ত্রির’ কাজ করছিলেন। ২৯ বছর পলাতক থেকেও শেষ রক্ষা হয়নি। ধরা পড়লেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। বলছিলাম আবুল কালামের কথা। যিনি রংপুরের মিঠাপুকুরের চাঞ্চল্যকর ইব্রাহিম হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।

সোমবার ভোরে ঢাকা মিরপুরের পাইকপাড়া এলাকা থেকে তাকে আটক করে র‌্যাব। পরে দুপুরে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের পূর্ব শত্রুতার জেরে ১৯৯২ সালে স্থানীয় বাজার থেকে ফেরার পথে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার গুটিবাড়ী সরকারপাড়া এলাকায় খুন হয়েছিলেন ইব্রাহিম। দুর্বৃত্তরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ওই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মফিজ উদ্দিন বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় আবুল কালামসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। পরবর্তীতে রংপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়। হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজন কারাগারে থাকলেও আবুল কালাম পলাতক ছিলেন।

মোজাম্মেল হক বলেন, সম্প্রতি আমাদের কাছে আবুল কালামের বিরুদ্ধে সাজা ওয়ারেন্টের কাগজ আসে। এরপর আবুল কালামকে শনাক্তে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। অবশেষে মিরপুরের পাইকপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আবুল কালাম উচ্চ শিক্ষিত ছিলেন। তবে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় তিনি পলাতক ছিলেন। তিনি ১৯৮৭ সালে দাখিল, ১৯৮৯ সালে আলিম এবং ১৯৯১ ফাজিল পাস করেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেও কখনও তিনি চাকরিতে যোগ দেননি। ২০০৭ সালে নিজের নাম-পরিচয় গোপন রেখে বদরগঞ্জে বিয়ে করেন। তবে ৬ মাসের মধ্যেই তাদের বিচ্ছেদ হয়।

‘বিভিন্ন সময় রংপুরে আত্মগোপনে থাকলেও ২০০১ সালে তিনি রাজধানীতে চলে আসেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ‘কনস্ট্রাকশন বিল্ডিং’-এ নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এমনকি নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রে ‘নাম’ও পরিবর্তন করে আজাদ মিয়া রাখেন।’

র‌্যাবের এই অধিনায়ক বলেন, মামলার বাদী নিহতের বড় ভাই মারা যান। তবে নিহতের স্ত্রী, এক ছেলে ও মেয়ে জীবিত ছিল। তারাই মামলা দেখভাল করত। কিন্তু হঠাৎ করে ইব্রাহিমের স্ত্রী-ছেলেও মারা যান। কিন্তু ইব্রাহিমের ছোট মেয়ে বেচে থাকলেও মামলার বিষয়ে তেমন কিছু জানতেন না। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আবুল কালামকে ধরতে অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করছিল। ২৯ বছর পালাতক থাকার পর তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

আত্মগোপনে ২৯ বছর থেকেও শেষ রক্ষা হলো না

আপডেট : ০২:১০:৪৩ অপরাহ্ন, সোমাবার, ৬ সেপ্টেম্বর ২০২১
উচ্চশিক্ষিত হলেও কোনো চাকরিতে যোগদান করেননি। নাম-পরিচয় পরিবর্তন করে ‘রডমিস্ত্রির’ কাজ করছিলেন। ২৯ বছর পলাতক থেকেও শেষ রক্ষা হয়নি। ধরা পড়লেন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে। বলছিলাম আবুল কালামের কথা। যিনি রংপুরের মিঠাপুকুরের চাঞ্চল্যকর ইব্রাহিম হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামি।

সোমবার ভোরে ঢাকা মিরপুরের পাইকপাড়া এলাকা থেকে তাকে আটক করে র‌্যাব। পরে দুপুরে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলনে এ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরেন র‌্যাব-৪ এর অধিনায়ক অতিরিক্ত ডিআইজি মোজাম্মেল হক।

তিনি বলেন, জমি নিয়ে বিরোধের পূর্ব শত্রুতার জেরে ১৯৯২ সালে স্থানীয় বাজার থেকে ফেরার পথে রংপুর জেলার মিঠাপুকুর থানার গুটিবাড়ী সরকারপাড়া এলাকায় খুন হয়েছিলেন ইব্রাহিম। দুর্বৃত্তরা দেশীয় অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে তাকে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা দ্রুত উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি। ওই ঘটনায় নিহতের বড় ভাই মফিজ উদ্দিন বাদী হয়ে মিঠাপুকুর থানায় আবুল কালামসহ ৬ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন। পরবর্তীতে রংপুরের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালত হত্যা মামলায় অভিযুক্ত ৩ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেয়। হত্যার সঙ্গে জড়িত তিনজন কারাগারে থাকলেও আবুল কালাম পলাতক ছিলেন।

মোজাম্মেল হক বলেন, সম্প্রতি আমাদের কাছে আবুল কালামের বিরুদ্ধে সাজা ওয়ারেন্টের কাগজ আসে। এরপর আবুল কালামকে শনাক্তে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায়। অবশেষে মিরপুরের পাইকপাড়া থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।

তিনি বলেন, গ্রেপ্তার আবুল কালাম উচ্চ শিক্ষিত ছিলেন। তবে হত্যা মামলায় অভিযুক্ত হওয়ায় তিনি পলাতক ছিলেন। তিনি ১৯৮৭ সালে দাখিল, ১৯৮৯ সালে আলিম এবং ১৯৯১ ফাজিল পাস করেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা থাকলেও কখনও তিনি চাকরিতে যোগ দেননি। ২০০৭ সালে নিজের নাম-পরিচয় গোপন রেখে বদরগঞ্জে বিয়ে করেন। তবে ৬ মাসের মধ্যেই তাদের বিচ্ছেদ হয়।

‘বিভিন্ন সময় রংপুরে আত্মগোপনে থাকলেও ২০০১ সালে তিনি রাজধানীতে চলে আসেন। আত্মগোপনে থাকা অবস্থায় ‘কনস্ট্রাকশন বিল্ডিং’-এ নির্মাণ শ্রমিক হিসেবে কাজ করতেন। এমনকি নিজের জাতীয় পরিচয়পত্রে ‘নাম’ও পরিবর্তন করে আজাদ মিয়া রাখেন।’

র‌্যাবের এই অধিনায়ক বলেন, মামলার বাদী নিহতের বড় ভাই মারা যান। তবে নিহতের স্ত্রী, এক ছেলে ও মেয়ে জীবিত ছিল। তারাই মামলা দেখভাল করত। কিন্তু হঠাৎ করে ইব্রাহিমের স্ত্রী-ছেলেও মারা যান। কিন্তু ইব্রাহিমের ছোট মেয়ে বেচে থাকলেও মামলার বিষয়ে তেমন কিছু জানতেন না। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী আবুল কালামকে ধরতে অনেকদিন ধরেই চেষ্টা করছিল। ২৯ বছর পালাতক থাকার পর তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।