সিলেটে শেখ হাসিনা শিশু পার্ক ‘টেস্টিং যাত্রায়’ শুরু

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০১:১০:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 261

দীর্ঘ ১৫ বছর পর অবশেষে সিলেটে আনুষ্ঠানিক যাত্রার দিকে এগোতে শুরু করেছে ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্ক’।

শনিবার থেকে এই পার্কের ‘টেস্টিং’ (পরীক্ষামূলক) কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ ধাপে কোনো সমস্যা না হলে শিগগিরই পার্কটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। দক্ষিণ সুরমার আলমপুরে গড়ে তোলা হয়েছে এই পার্কটি।

সিসিকের জনসংযোগ শাখা জানায়, আজ দুপুরের দিকে পার্কটির পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু হয়েছে। এ ধাপে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পার্কে বসানো রাইডগুলো ‘চেক’ করে দেখবে। কিছু সংখ্যক লোককে পার্কে টিকেটের মাধ্যমে ঢুকতে দেওয়া হবে।

তাদেরকে দিয়েই মূলত রাইডগুলো চালিয়ে দেখা হবে কোনো সমস্যা হয় কিনা। এক্ষেত্রে যারা পার্কে ঢুকবেন, তাদেরকে ‘পরীক্ষামূলক’ রাইড চালুর তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে। পরীক্ষামূলক এ যাত্রায় কোনো রাইডে সমস্যা পাওয়া গেলে সেটির সমাধান করা হবে।

শেখ হাসিনা শিশু পার্কে বসানো রাইডগুলোর মধ্যে রয়েছে- রোলার কোস্টার, ম্যাজিক প্যারাস্যুট, মনোরেল, ভিজিটিং ট্রেন, রেলগাড়ি, পাইরেট শিপ, স্নিপার, সিসরাইড, বোট, টুইস্টার, বাম্পার কার, ফ্রুট ফ্লাইং চেয়ার, নাগরদোলা, ফ্যারসেল, জাম্পিং ফ্রগ প্রভৃতি। সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।

জানা গেছে, ২০০৬ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের অর্থমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাংসদ এম সাইফুর রহমানের উদ্যোগে এই পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তখন মাটি ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন স্থাপনসহ পার্কের অবকাঠামোগত কাজ শেষ হয়।

সাইফুর রহমানের নামে পার্কটির নাম রাখার সিদ্ধান্ত হয় সে সময়। কিন্তু বিএনপি সরকার বিদায় নেওয়ার পর পার্কটির কাজে স্থবিরতা নেমে আসে। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ আছে, সাইফুর রহমানের নাম থাকায় সিসিকের তৎকালীন আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র পার্কটি চালু করতে উদ্যোগ নেননি।

মধ্যখানে প্রায় ৮ বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে পার্কটি। এরপর ২০১৩ সালে বিএনপি নেতা ও সাইফুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত আরিফুল হক চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরে পার্কটি চালুর উদ্যোগ নেন। চীন থেকে আনা হয় বিভিন্ন ধরনের রাইড।

২০১৭ সালে শুরু হয় রাইড বসানো, বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনের কাজ। কিন্তু নামকরণ জটিলতায় আটকে যায় পার্ক চালুর বিষয়টি। মেয়র আরিফ পার্কটি সাইফুর রহমানের নামে করতে একটি প্রস্তাবনা পাঠান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু মন্ত্রণালয় তাতে সাড়া দেয়নি।

এরপর ‘সিলেট ন্যাচারাল পার্ক’, ‘দক্ষিণ সুরমা পার্ক’ নামে পার্কটি করতে চায় সিসিক। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এটি শেখ হাসিনার নামে করার প্রস্তাব তুলেন। সরকারের মন্ত্রণালয়ও এতে সায় দেয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর সিসিকের ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়।

এ বাজেটে ওই পার্কটির জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার কথা জানান মেয়র আরিফ। সবমিলিয়ে এ পার্কটিতে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে জানা গেছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

সিলেটে শেখ হাসিনা শিশু পার্ক ‘টেস্টিং যাত্রায়’ শুরু

আপডেট : ০১:১০:১৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০২১

দীর্ঘ ১৫ বছর পর অবশেষে সিলেটে আনুষ্ঠানিক যাত্রার দিকে এগোতে শুরু করেছে ‘জননেত্রী শেখ হাসিনা শিশু পার্ক’।

শনিবার থেকে এই পার্কের ‘টেস্টিং’ (পরীক্ষামূলক) কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এ ধাপে কোনো সমস্যা না হলে শিগগিরই পার্কটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।

সিলেট সিটি করপোরেশন (সিসিক) সূত্রে জানা গেছে এসব তথ্য। দক্ষিণ সুরমার আলমপুরে গড়ে তোলা হয়েছে এই পার্কটি।

সিসিকের জনসংযোগ শাখা জানায়, আজ দুপুরের দিকে পার্কটির পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু হয়েছে। এ ধাপে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান পার্কে বসানো রাইডগুলো ‘চেক’ করে দেখবে। কিছু সংখ্যক লোককে পার্কে টিকেটের মাধ্যমে ঢুকতে দেওয়া হবে।

তাদেরকে দিয়েই মূলত রাইডগুলো চালিয়ে দেখা হবে কোনো সমস্যা হয় কিনা। এক্ষেত্রে যারা পার্কে ঢুকবেন, তাদেরকে ‘পরীক্ষামূলক’ রাইড চালুর তথ্য জানিয়ে দেওয়া হবে। পরীক্ষামূলক এ যাত্রায় কোনো রাইডে সমস্যা পাওয়া গেলে সেটির সমাধান করা হবে।

শেখ হাসিনা শিশু পার্কে বসানো রাইডগুলোর মধ্যে রয়েছে- রোলার কোস্টার, ম্যাজিক প্যারাস্যুট, মনোরেল, ভিজিটিং ট্রেন, রেলগাড়ি, পাইরেট শিপ, স্নিপার, সিসরাইড, বোট, টুইস্টার, বাম্পার কার, ফ্রুট ফ্লাইং চেয়ার, নাগরদোলা, ফ্যারসেল, জাম্পিং ফ্রগ প্রভৃতি। সিসিকের প্রধান প্রকৌশলী নুর আজিজুর রহমান জানিয়েছেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন করা হবে।

জানা গেছে, ২০০৬ সালে তৎকালীন বিএনপি সরকারের অর্থমন্ত্রী ও সিলেট-১ আসনের সাংসদ এম সাইফুর রহমানের উদ্যোগে এই পার্ক নির্মাণের কাজ শুরু হয়। তখন মাটি ভরাট, সীমানা প্রাচীর নির্মাণ, বৈদ্যুতিক সাবস্টেশন স্থাপনসহ পার্কের অবকাঠামোগত কাজ শেষ হয়।

সাইফুর রহমানের নামে পার্কটির নাম রাখার সিদ্ধান্ত হয় সে সময়। কিন্তু বিএনপি সরকার বিদায় নেওয়ার পর পার্কটির কাজে স্থবিরতা নেমে আসে। বিএনপির পক্ষ থেকে অভিযোগ আছে, সাইফুর রহমানের নাম থাকায় সিসিকের তৎকালীন আওয়ামী লীগ দলীয় মেয়র পার্কটি চালু করতে উদ্যোগ নেননি।

মধ্যখানে প্রায় ৮ বছর পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে থাকে পার্কটি। এরপর ২০১৩ সালে বিএনপি নেতা ও সাইফুর রহমানের ঘনিষ্ঠজন হিসেবে পরিচিত আরিফুল হক চৌধুরী মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পরে পার্কটি চালুর উদ্যোগ নেন। চীন থেকে আনা হয় বিভিন্ন ধরনের রাইড।

২০১৭ সালে শুরু হয় রাইড বসানো, বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপনের কাজ। কিন্তু নামকরণ জটিলতায় আটকে যায় পার্ক চালুর বিষয়টি। মেয়র আরিফ পার্কটি সাইফুর রহমানের নামে করতে একটি প্রস্তাবনা পাঠান স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ে। কিন্তু মন্ত্রণালয় তাতে সাড়া দেয়নি।

এরপর ‘সিলেট ন্যাচারাল পার্ক’, ‘দক্ষিণ সুরমা পার্ক’ নামে পার্কটি করতে চায় সিসিক। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা এটি শেখ হাসিনার নামে করার প্রস্তাব তুলেন। সরকারের মন্ত্রণালয়ও এতে সায় দেয়। গত ১৬ সেপ্টেম্বর সিসিকের ২০২১-২২ অর্থবছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়।

এ বাজেটে ওই পার্কটির জন্য অবকাঠামো উন্নয়ন খাতে ২ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার কথা জানান মেয়র আরিফ। সবমিলিয়ে এ পার্কটিতে প্রায় ৩০ কোটি টাকা ব্যয় হচ্ছে বলে জানা গেছে।