ঢাকা ০৫:২৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ছামাদ মাস্টার হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০১:৫৭:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 113
শরীয়তপুরে আলোচিত ছামাদ মাস্টার হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মনির কামাল এ রায় দেন। রায়ে আরও নয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মাহবুবুর রহমান।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, নুরুজ্জামান খান, জাহাঙ্গীর মাতবর, জুলহাস মাতবর ও চান মিয়া। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়াও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মোল্লা, আজিজুল মাতবর, ফারুক খান, আজাহার মাতবর, মীজান মীর, আকতার গাজী, জলিল মাতবর, এমদাদ মাতবর ও লাল মিয়া। যাবজ্জীবন সাজার পাশাপাশি তাদেরকেও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাস জেল দেয়া হয়েছে ।

হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না হওয়ায় আজিবর বালী, আব্দুল খন্দকার, খোকন বেপারী, আজাহার মোল্লা ও ছোরাব মোল্লাকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।

রায়ের বিবরণে বলা হয়, নির্বাচনে তৎকালীন চেয়ারম্যান হালিম মোল্লার কাছে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন আব্দুস ছামাদ আজাদ ওরফে ছামাদ মাস্টার। পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনি এলাকায় পোস্টার লাগানো শুরু করলে ক্ষুব্ধ হন হালিম মোল্লা। এর জের ধরে ২০১০ সালের ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শরীয়তপুর জেলার পালং থানাধীন সন্তোষপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রকাশ্যে ছামাদ মাস্টারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সামাদ মাস্টারকে বাঁচাতে গিয়ে রহিম পেদা, অজিত শীল, সেলিম ফকির, ইসাহাক মুন্সী ও বিশ্বজিৎ শীল গুলিবিদদ্ধ হন।

ওই ঘটনার পর নিহত ছামাদ মাস্টারের স্ত্রী তৎকালীন চেয়ারম্যান হালিম মোল্লা ও সাবেক চেয়ারম্যান আজিবর বালীসহ ৩০ জনকে আসামি করে অজ্ঞাতামানা আরও ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে পালং থানায় মামলা করেন।

ওই বছরের ১৪ অগাস্ট তদন্ত শেষে পালং থানার এসআই শহীদুল ইসলাম ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বাদী ওই প্রতিবেদনে বিরুদ্ধে আপত্তি জানালে আদালত অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ১১ মে এসআই সুলতান মাহমুদ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। পরে মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণসহ আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে বুধবার ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন বিচারক।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মামলার বাদী ফেরদৌসী আজাদ বলেন, মামলার ২ নম্বর আসামি আজিবর বালী ঘটনার প্রধান নায়ক। আদালত তাকে খালাস দেওয়ায় আমি ক্ষুব্ধ। এখন রায় যেন কার্যকর এর অপেক্ষায় আছি।

রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জানান, এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাই কোর্টে আপিল করবেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ছামাদ মাস্টার হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ড

আপডেট : ০১:৫৭:০২ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২১
শরীয়তপুরে আলোচিত ছামাদ মাস্টার হত্যা মামলায় চারজনের মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। বুধবার ঢাকার ৩ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মনির কামাল এ রায় দেন। রায়ে আরও নয়জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর মাহবুবুর রহমান।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন, নুরুজ্জামান খান, জাহাঙ্গীর মাতবর, জুলহাস মাতবর ও চান মিয়া। মৃত্যুদণ্ডের পাশাপাশি তাদের প্রত্যেককে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

এছাড়াও যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হলেন, শরীয়তপুর সদর উপজেলার চিকন্দী ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আব্দুল হালিম মোল্লা, আজিজুল মাতবর, ফারুক খান, আজাহার মাতবর, মীজান মীর, আকতার গাজী, জলিল মাতবর, এমদাদ মাতবর ও লাল মিয়া। যাবজ্জীবন সাজার পাশাপাশি তাদেরকেও ২০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে আরও ৬ মাস জেল দেয়া হয়েছে ।

হত্যাকাণ্ডে সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ না হওয়ায় আজিবর বালী, আব্দুল খন্দকার, খোকন বেপারী, আজাহার মোল্লা ও ছোরাব মোল্লাকে বেকসুর খালাস দেয়া হয়েছে।

রায়ের বিবরণে বলা হয়, নির্বাচনে তৎকালীন চেয়ারম্যান হালিম মোল্লার কাছে অল্প ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিলেন আব্দুস ছামাদ আজাদ ওরফে ছামাদ মাস্টার। পরবর্তী নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার জন্য তিনি এলাকায় পোস্টার লাগানো শুরু করলে ক্ষুব্ধ হন হালিম মোল্লা। এর জের ধরে ২০১০ সালের ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শরীয়তপুর জেলার পালং থানাধীন সন্তোষপুর বাসস্ট্যান্ড এলাকায় প্রকাশ্যে ছামাদ মাস্টারকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। সামাদ মাস্টারকে বাঁচাতে গিয়ে রহিম পেদা, অজিত শীল, সেলিম ফকির, ইসাহাক মুন্সী ও বিশ্বজিৎ শীল গুলিবিদদ্ধ হন।

ওই ঘটনার পর নিহত ছামাদ মাস্টারের স্ত্রী তৎকালীন চেয়ারম্যান হালিম মোল্লা ও সাবেক চেয়ারম্যান আজিবর বালীসহ ৩০ জনকে আসামি করে অজ্ঞাতামানা আরও ১৫/২০ জনের বিরুদ্ধে পালং থানায় মামলা করেন।

ওই বছরের ১৪ অগাস্ট তদন্ত শেষে পালং থানার এসআই শহীদুল ইসলাম ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। বাদী ওই প্রতিবেদনে বিরুদ্ধে আপত্তি জানালে আদালত অধিকতর তদন্তের নির্দেশ দেন। অধিকতর তদন্ত শেষে ২০১১ সালের ১১ মে এসআই সুলতান মাহমুদ ১৯ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন। পরে মামলাটি ঢাকার দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে পাঠানো হয়। ১৪ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য প্রমাণসহ আইনজীবীদের যুক্তিতর্ক শেষে বুধবার ১৩ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে রায় দেন বিচারক।

রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে মামলার বাদী ফেরদৌসী আজাদ বলেন, মামলার ২ নম্বর আসামি আজিবর বালী ঘটনার প্রধান নায়ক। আদালত তাকে খালাস দেওয়ায় আমি ক্ষুব্ধ। এখন রায় যেন কার্যকর এর অপেক্ষায় আছি।

রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসামি পক্ষের আইনজীবীরা জানান, এ রায়ের বিরুদ্ধে তারা হাই কোর্টে আপিল করবেন।