ঢাকা ০৩:১৮ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দুর্গাপূজার সময়ে পরীক্ষা পড়ায় জবি শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১১:৪৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 126

জবি

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজাকে ঘিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নানা রকম প্রস্তুতি, পরিকল্পনা, আচার-অনুষ্ঠান থাকে। পরিবারের সাথেই এক মিলনমেলায় দুর্গাপূজা উদযাপন করে সবাই৷

তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) আটকে থাকা সেমিস্টার পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে দুর্গাপূজার সূচনালগ্নে। এমনকি বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষার রুটিনে পূজার দিনেই পরীক্ষার তারিখ দেওয়া হয়েছে। আবার অনেক বিভাগ পূজা ও পরীক্ষার মাঝে নামমাত্র বিরতি দিয়েছে৷ এতে করে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।

একই সাথে তারা বিষয়টিকে বৈষম্য বলেও অভিহিত করেছেন। পাঁচদিনব্যাপী পালন করা দুর্গাপূজা শুরু হয় ষষ্ঠীর মাধ্যমে।তারপর ক্রমান্বয়ে আসে সপ্তমী,অষ্টমী ও নবমী।শারদীয় দুর্গাপূজার সমাপ্তি হয় বিজয়া দশমী পালনের মধ্য দিয়ে। এবছর নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী, ১২ অক্টোবর সপ্তমী, ১৩ অক্টোবর অষ্টমী, ১৪ অক্টোবর নবমী এবং ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী পালন করা হবে।

জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও বর্ষের শিক্ষার্থীদের আটকে পড়া সেমিস্টার পরীক্ষা আগামী ৭অক্টোবর থেকে সশরীরের শুরু হবে৷ তবে ১১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া শারদীয় দুর্গোৎসব এর ঠিক আগমুহূর্তে পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করার বিষয়টিতে হতাশ সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৩য় বর্ষের (২০১৭-১৮ সেশন) রুটিন অনুযায়ী ‘ফিজিক্যাল জিওগ্রাফি অব বাংলাদেশ’ এবং পপুলেশন জিওগ্রাফি কোর্সের পরীক্ষার তারিখ দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ১২ অক্টোবর ও ১৪ অক্টোবর। পূজার নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা দুইটি পড়েছে সপ্তমী ও নবমী’র দিনে।

অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের রুটিনে ১৪ তারিখ সকাল ৯টা-১২টা পর্যন্ত এমবিএ (২০১৯-২০ সেশন) এর এডভান্সড একাউন্টিং থিওরি পরীক্ষা এবং দুপুর ১২.৩০টা-৩.৩০টা পর্যন্ত বিবিএ (২০১৮-১৯ সেশন) এর বেসিক স্ট্যাটিস্টিক্স কোর্সের পরীক্ষার তারিখ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অনেক বিভাগের রুটিন অনুযায়ী পূজার দিনে পরীক্ষা না থাকলেও পূজা ও পরীক্ষার মাঝে নামমাত্র বিরতি রয়েছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু বিভাগ পূজোর পরেই সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একদিকে পূজার আগমুহূর্তে পরীক্ষা শুরু করা অপরদিকে পূজার দিনেও পরীক্ষার তারিখ দেওয়া এবং নামমাত্র বিরতি দেওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।

তাদের দাবি, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সময়ে সেমিস্টার পরীক্ষার তারিখ দিয়ে প্রহসন করছে প্রশাসন। এর মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে অন্যায় করা হচ্ছে। এত দিন বার বার পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করে শেষ পর্যন্ত পূজার দিনগুলোতে পরীক্ষা দেওয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী কেয়া সরকার বলেন, এবছরের শুরু থেকেই আমাদের আটকে থাকা পরীক্ষা নিয়ে গড়িমসি শুরু হয়েছে।

একাধিকবার পরীক্ষার তারিখ পিছিয়ে সর্বশেষ পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করেছে আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবথেকে বড় উৎসব দুর্গা পুজার সময়ে। পূজোর দিনগুলোতে রাখা হয়েছে পরীক্ষা! এতদিন বারবার পরীক্ষার সময় পরিবর্তন করে আমাদের পূজার মধ্যে তারিখ দেওয়ার কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছিনা আমি। বরং রীতিমত অন্যায় মনে হচ্ছে আমাদের সাথে।

সারাবছর ধরে আমরা এই উৎসবের অপেক্ষায় থাকি, পরিবার-আপনজনের সাথে উপভোগ করতে চাই। কিন্তু পূজার সময়ে পরীক্ষার তারিখ দেওয়ায় আমাদের আশার গুঁড়ে বালি ঢেলে দিলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাগর দাস হিমেল বলেন, বাংলাদেশের মতো অসাম্প্রদায়িক দেশে পূজার মধ্যে পরীক্ষার রুটিন চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগগুলোতে।

এটা সরাসরি হিন্দু ছাত্র-ছাত্রীদের উপর বৈষম্য তৈরী করা হচ্ছে।শুধু পূজা নয় একজন সনাতনী হিসেবে আমরাও চাইনা মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদের মধ্যে কোনো পরীক্ষার রুটিন দেওয়া হোক।

উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী সৌরভ দাস বলেন, সৃষ্টিলগ্ন থেকেই বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় দুই-একটি উৎসবের অন্যতম হচ্ছে দুর্গা পূজা। কিন্তু ঠিক এই সময়টাতে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার নামে প্রহসন করছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি বিভাগ।বিভাগগুলো চাইলেই পূজার পাঁচ দিন সময় বাদ দিয়ে পরীক্ষা নিতে পারতো। সংশ্লিষ্টদের প্রতি বিনীত অনুরোধ আপনারা দয়া করে পুনরায় বিষয়টি বিবেচনা করে নতুনভাবে পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করবেন।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ বাদশা শেখ বলেন, বিভিন্ন বিভাগের আটকে থাকা সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ৭ অক্টোবর থেকে। আগামী ১১-১৫ অক্টোবর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি বিভাগের এমন একটি পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করা উচিত যাতে পূজার ঠিক আগে এবং পরে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার মাঝে পর্যাপ্ত থাকে। কারণ এটি আমাদের সবার উৎসব।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামানের সাথে মুঠোফোন যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ.কে. এম মনিরুজ্জামান বলেন, পূজার ছুটি মানে সরকারি ছুটি। আর কোন সরকারি ছুটিতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা নেওয়া হয়না।

অসতর্কতাবশত পূজার দিনে একাউন্টিং বিভাগের পরীক্ষার তারিখ দেওয়া হতে পারে। আমি একাউন্টিং বিভাগের চেয়ারম্যানকে বলেছি পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করতে। দুর্গাপূজার যেহেতু হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব তাই পূজার দিনে পরীক্ষা কোনভাবেই হবেনা।

লাইফ এন্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি এই ফ্যাকল্টির ডিন। আমি আশ্বস্ত করছি পূজায় কোন পরীক্ষা হবেনা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

দুর্গাপূজার সময়ে পরীক্ষা পড়ায় জবি শিক্ষার্থীদের ক্ষোভ

আপডেট : ১১:৪৫:৪৬ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২১

হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। দুর্গাপূজাকে ঘিরে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নানা রকম প্রস্তুতি, পরিকল্পনা, আচার-অনুষ্ঠান থাকে। পরিবারের সাথেই এক মিলনমেলায় দুর্গাপূজা উদযাপন করে সবাই৷

তবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ে (জবি) আটকে থাকা সেমিস্টার পরীক্ষা নেওয়া হচ্ছে দুর্গাপূজার সূচনালগ্নে। এমনকি বিভিন্ন বিভাগের পরীক্ষার রুটিনে পূজার দিনেই পরীক্ষার তারিখ দেওয়া হয়েছে। আবার অনেক বিভাগ পূজা ও পরীক্ষার মাঝে নামমাত্র বিরতি দিয়েছে৷ এতে করে চরম ক্ষোভ ও অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।

একই সাথে তারা বিষয়টিকে বৈষম্য বলেও অভিহিত করেছেন। পাঁচদিনব্যাপী পালন করা দুর্গাপূজা শুরু হয় ষষ্ঠীর মাধ্যমে।তারপর ক্রমান্বয়ে আসে সপ্তমী,অষ্টমী ও নবমী।শারদীয় দুর্গাপূজার সমাপ্তি হয় বিজয়া দশমী পালনের মধ্য দিয়ে। এবছর নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী ১১ অক্টোবর ষষ্ঠী, ১২ অক্টোবর সপ্তমী, ১৩ অক্টোবর অষ্টমী, ১৪ অক্টোবর নবমী এবং ১৫ অক্টোবর বিজয়া দশমী পালন করা হবে।

জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ ও বর্ষের শিক্ষার্থীদের আটকে পড়া সেমিস্টার পরীক্ষা আগামী ৭অক্টোবর থেকে সশরীরের শুরু হবে৷ তবে ১১ অক্টোবর থেকে শুরু হতে যাওয়া শারদীয় দুর্গোৎসব এর ঠিক আগমুহূর্তে পরীক্ষার তারিখ চূড়ান্ত করার বিষয়টিতে হতাশ সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা। পাশাপাশি ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের ৩য় বর্ষের (২০১৭-১৮ সেশন) রুটিন অনুযায়ী ‘ফিজিক্যাল জিওগ্রাফি অব বাংলাদেশ’ এবং পপুলেশন জিওগ্রাফি কোর্সের পরীক্ষার তারিখ দেওয়া হয়েছে যথাক্রমে ১২ অক্টোবর ও ১৪ অক্টোবর। পূজার নির্ধারিত সময় অনুযায়ী পরীক্ষা দুইটি পড়েছে সপ্তমী ও নবমী’র দিনে।

অপরদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাউন্টিং এন্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস বিভাগের রুটিনে ১৪ তারিখ সকাল ৯টা-১২টা পর্যন্ত এমবিএ (২০১৯-২০ সেশন) এর এডভান্সড একাউন্টিং থিওরি পরীক্ষা এবং দুপুর ১২.৩০টা-৩.৩০টা পর্যন্ত বিবিএ (২০১৮-১৯ সেশন) এর বেসিক স্ট্যাটিস্টিক্স কোর্সের পরীক্ষার তারিখ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও অনেক বিভাগের রুটিন অনুযায়ী পূজার দিনে পরীক্ষা না থাকলেও পূজা ও পরীক্ষার মাঝে নামমাত্র বিরতি রয়েছে।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু বিভাগ পূজোর পরেই সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একদিকে পূজার আগমুহূর্তে পরীক্ষা শুরু করা অপরদিকে পূজার দিনেও পরীক্ষার তারিখ দেওয়া এবং নামমাত্র বিরতি দেওয়ায় চরম ক্ষোভ প্রকাশ করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সনাতন ধর্মাবলম্বী শিক্ষার্থীরা।

তাদের দাবি, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার সময়ে সেমিস্টার পরীক্ষার তারিখ দিয়ে প্রহসন করছে প্রশাসন। এর মধ্য দিয়ে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সাথে অন্যায় করা হচ্ছে। এত দিন বার বার পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করে শেষ পর্যন্ত পূজার দিনগুলোতে পরীক্ষা দেওয়ার কোন যৌক্তিকতা নেই। গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী কেয়া সরকার বলেন, এবছরের শুরু থেকেই আমাদের আটকে থাকা পরীক্ষা নিয়ে গড়িমসি শুরু হয়েছে।

একাধিকবার পরীক্ষার তারিখ পিছিয়ে সর্বশেষ পরীক্ষার রুটিন প্রকাশ করেছে আমাদের সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবথেকে বড় উৎসব দুর্গা পুজার সময়ে। পূজোর দিনগুলোতে রাখা হয়েছে পরীক্ষা! এতদিন বারবার পরীক্ষার সময় পরিবর্তন করে আমাদের পূজার মধ্যে তারিখ দেওয়ার কোনো যুক্তি খুঁজে পাচ্ছিনা আমি। বরং রীতিমত অন্যায় মনে হচ্ছে আমাদের সাথে।

সারাবছর ধরে আমরা এই উৎসবের অপেক্ষায় থাকি, পরিবার-আপনজনের সাথে উপভোগ করতে চাই। কিন্তু পূজার সময়ে পরীক্ষার তারিখ দেওয়ায় আমাদের আশার গুঁড়ে বালি ঢেলে দিলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সাগর দাস হিমেল বলেন, বাংলাদেশের মতো অসাম্প্রদায়িক দেশে পূজার মধ্যে পরীক্ষার রুটিন চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগগুলোতে।

এটা সরাসরি হিন্দু ছাত্র-ছাত্রীদের উপর বৈষম্য তৈরী করা হচ্ছে।শুধু পূজা নয় একজন সনাতনী হিসেবে আমরাও চাইনা মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব ঈদের মধ্যে কোনো পরীক্ষার রুটিন দেওয়া হোক।

উদ্ভিদবিদ্যা বিভাগের শিক্ষার্থী সৌরভ দাস বলেন, সৃষ্টিলগ্ন থেকেই বাংলাদেশ অসাম্প্রদায়িক চেতনার দেশ। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় দুই-একটি উৎসবের অন্যতম হচ্ছে দুর্গা পূজা। কিন্তু ঠিক এই সময়টাতে সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষার নামে প্রহসন করছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকটি বিভাগ।বিভাগগুলো চাইলেই পূজার পাঁচ দিন সময় বাদ দিয়ে পরীক্ষা নিতে পারতো। সংশ্লিষ্টদের প্রতি বিনীত অনুরোধ আপনারা দয়া করে পুনরায় বিষয়টি বিবেচনা করে নতুনভাবে পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করবেন।

ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ বাদশা শেখ বলেন, বিভিন্ন বিভাগের আটকে থাকা সেমিস্টার পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ৭ অক্টোবর থেকে। আগামী ১১-১৫ অক্টোবর সনাতন ধর্মাবলম্বীদের শারদীয় দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। সেক্ষেত্রে প্রতিটি বিভাগের এমন একটি পরীক্ষার সময়সূচি নির্ধারণ করা উচিত যাতে পূজার ঠিক আগে এবং পরে অনুষ্ঠিত পরীক্ষার মাঝে পর্যাপ্ত থাকে। কারণ এটি আমাদের সবার উৎসব।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রকৌশলী মো. ওহিদুজ্জামানের সাথে মুঠোফোন যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও সাড়া পাওয়া যায়নি। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজনেস স্টাডিজ অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ.কে. এম মনিরুজ্জামান বলেন, পূজার ছুটি মানে সরকারি ছুটি। আর কোন সরকারি ছুটিতেই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পরীক্ষা নেওয়া হয়না।

অসতর্কতাবশত পূজার দিনে একাউন্টিং বিভাগের পরীক্ষার তারিখ দেওয়া হতে পারে। আমি একাউন্টিং বিভাগের চেয়ারম্যানকে বলেছি পরীক্ষার তারিখ পরিবর্তন করতে। দুর্গাপূজার যেহেতু হিন্দুধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় উৎসব তাই পূজার দিনে পরীক্ষা কোনভাবেই হবেনা।

লাইফ এন্ড আর্থ সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম এ প্রতিবেদককে বলেন, আমি এই ফ্যাকল্টির ডিন। আমি আশ্বস্ত করছি পূজায় কোন পরীক্ষা হবেনা।