ঢাকা ০১:৩৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

মাঠে নামছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : ০৬:১৭:৩৫ অপরাহ্ন, সোমাবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩
  • / 96
বেতনভাতা বাড়ানোর দাবিতে দেশব্যাপী সক্রিয় হচ্ছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা। অচিরেই তারা মাঠে নামারও ঘোষণা দিয়েছেন।

শিক্ষকরা তাদের বর্তমান গ্রেড পরিবর্তন ছাড়াও উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের কর্মকর্তাদের অধীনে প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নিতেও আপত্তি জানিয়েছেন। একইসাথে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের নবম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড দেয়ার বিষয়ে জোর দাবি জানানো হয়েছে।

শিক্ষক নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, সারা দেশের শিক্ষকদের প্রধান দাবিই হচ্ছে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন বাড়িয়ে দশম গ্রেড এবং প্রধান শিক্ষকদের নবম গ্রেড করতে হবে। বর্তমানে সহকারী শিক্ষকেরা ১৩তম গ্রেডে ও প্রধান শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, সম্প্রতি উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে (ইউআরসি) কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের ‘সহকারী ইনস্ট্রাক্টর’ পদে চলতি দায়িত্ব দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। আমরা এই প্রস্তাব অবিলম্বে বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়া অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের মতো ছুটি রেখে প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি ‘নন-ভোকেশনাল’ হিসেবে গণ্য করা, দ্রুত সময়ের মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি ও চলতি দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন এবং বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে সমন্বয় রেখে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অবিলম্বে নবম পে-স্কেল ঘোষণা করারও দাবি জানাচ্ছি।

শিক্ষক নেতৃবৃন্দ জানান, সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তবিহীন বৈষম্য বাতিল, প্রধান শিক্ষকদের টাইমস্কেল জটিলতা নিরসন, পদোন্নতিতে জটিলতা কমানোর দাবিতে আগামী ১৮ মে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেয়া হবে। এর মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে পর্যায়ক্রমে পরবর্তী কর্মসূচি দেয়া হবে।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো: আনোয়ারুল ইসলাম তোতা জানান, প্রাথমিক শিক্ষকরা আজ একটি কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি।

বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষকরা জানান, অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজারের পদধারীরা সাধারণত বিএড, এমএড ডিগ্রিধারী হয়ে থাকেন। সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী ইন্সট্রাক্টররা অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার হিসেবে প্রাথমিক স্কুলের শ্রেণি পাঠদান ও প্রাথমিক শিক্ষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ তত্ত্বাবধান করে থাকেন।

অন্য দিকে ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা অ্যাকাডেমিক পদধারী কর্মচারী না। তাই তাদের কোনোভাবেই অ্যাকাডেমিক ট্রেইনার বা সুপারভাইজারে পদে চলতি দায়িত্ব বা পদোন্নতি দেয়া যাবে না। তাদের পদোন্নতি হোক আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এ ছাড়াও একজন প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড ১১তম এবং সহকারী শিক্ষকের ১৩তম। আর ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের পদ ১৬তম গ্রেডের।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো: গাজীউল হক চৌধুরী জানান, আমরা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি সরকারের বিবেচনার জন্য লিখিত আকারে পেশ করেছি। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-

১. সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকদের ৯ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং প্রধান শিক্ষকদের টাইমস্কেল প্রাপ্তির সব জটিলতা নিরসন করা।

২. ইউআরসিতে কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের ‘সহকারী ইন্সট্রাক্টর’ পদে চলতি দায়িত্ব দেয়ার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক গত ২০ ফেব্রুয়ারি তারিখের প্রস্তাব বাতিল।

৩. প্রাথমিক স্কুলকে ভোকেশনাল ডিপার্টমেন্ট আখ্যা দিয়ে অন্যান্য শিক্ষা বিভাগের তুলনায় ছুটি কমিয়ে দেয়া বৈষম্যমূলক। অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের মতো ছুটি রেখে প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি নন- ভোকেশনাল হিসেবে গণ্য করা।

৪. পদোন্নতির সব রকম জটিলতা নিরসন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে থেকে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রদান ও চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন এবং প্রধান শিক্ষকদের সিনিয়রিটি ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদ থেকে পরিচালক পর্যন্ত পদোন্নতি দেয়া।

৫. বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে সমন্বয় রেখে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য অবিলম্বে ৯ম পে-স্কেল এবং ৯ম পে- স্কেল ঘোষণার আগেই ৫০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মাঠে নামছেন প্রাথমিক শিক্ষকরা

আপডেট : ০৬:১৭:৩৫ অপরাহ্ন, সোমাবার, ১০ এপ্রিল ২০২৩
বেতনভাতা বাড়ানোর দাবিতে দেশব্যাপী সক্রিয় হচ্ছেন প্রাথমিকের শিক্ষকরা। অচিরেই তারা মাঠে নামারও ঘোষণা দিয়েছেন।

শিক্ষকরা তাদের বর্তমান গ্রেড পরিবর্তন ছাড়াও উপজেলা রিসোর্স সেন্টারের কর্মকর্তাদের অধীনে প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশ নিতেও আপত্তি জানিয়েছেন। একইসাথে প্রাথমিকের প্রধান শিক্ষকদের নবম গ্রেড এবং সহকারী শিক্ষকদের দশম গ্রেড দেয়ার বিষয়ে জোর দাবি জানানো হয়েছে।

শিক্ষক নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, সারা দেশের শিক্ষকদের প্রধান দাবিই হচ্ছে বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকদের বেতন বাড়িয়ে দশম গ্রেড এবং প্রধান শিক্ষকদের নবম গ্রেড করতে হবে। বর্তমানে সহকারী শিক্ষকেরা ১৩তম গ্রেডে ও প্রধান শিক্ষকরা ১১তম গ্রেডে বেতন পাচ্ছেন।

বাংলাদেশ প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে বিভিন্ন দাবি প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, সম্প্রতি উপজেলা রিসোর্স সেন্টারে (ইউআরসি) কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের ‘সহকারী ইনস্ট্রাক্টর’ পদে চলতি দায়িত্ব দেয়ার প্রস্তাব করা হয়েছে। আমরা এই প্রস্তাব অবিলম্বে বাতিল করার দাবি জানাচ্ছি। এ ছাড়া অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের মতো ছুটি রেখে প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি ‘নন-ভোকেশনাল’ হিসেবে গণ্য করা, দ্রুত সময়ের মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের মধ্য থেকে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি ও চলতি দায়িত্বপ্রাপ্তদের প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন এবং বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে সমন্বয় রেখে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জন্য অবিলম্বে নবম পে-স্কেল ঘোষণা করারও দাবি জানাচ্ছি।

শিক্ষক নেতৃবৃন্দ জানান, সরাসরি নিয়োগপ্রাপ্ত, প্রশিক্ষণপ্রাপ্তবিহীন বৈষম্য বাতিল, প্রধান শিক্ষকদের টাইমস্কেল জটিলতা নিরসন, পদোন্নতিতে জটিলতা কমানোর দাবিতে আগামী ১৮ মে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্মারকলিপি দেয়া হবে। এর মধ্যে দাবি বাস্তবায়ন না হলে পর্যায়ক্রমে পরবর্তী কর্মসূচি দেয়া হবে।

শিক্ষক সমিতির সভাপতি মো: আনোয়ারুল ইসলাম তোতা জানান, প্রাথমিক শিক্ষকরা আজ একটি কঠিন বাস্তবতার মুখোমুখি।

বিভিন্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিক্ষুব্ধ শিক্ষকরা জানান, অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজারের পদধারীরা সাধারণত বিএড, এমএড ডিগ্রিধারী হয়ে থাকেন। সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ও সহকারী ইন্সট্রাক্টররা অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার হিসেবে প্রাথমিক স্কুলের শ্রেণি পাঠদান ও প্রাথমিক শিক্ষকদের বিভিন্ন প্রশিক্ষণ তত্ত্বাবধান করে থাকেন।

অন্য দিকে ডাটা এন্ট্রি অপারেটররা অ্যাকাডেমিক পদধারী কর্মচারী না। তাই তাদের কোনোভাবেই অ্যাকাডেমিক ট্রেইনার বা সুপারভাইজারে পদে চলতি দায়িত্ব বা পদোন্নতি দেয়া যাবে না। তাদের পদোন্নতি হোক আমাদের কোনো আপত্তি নেই। এ ছাড়াও একজন প্রধান শিক্ষকের বেতন গ্রেড ১১তম এবং সহকারী শিক্ষকের ১৩তম। আর ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের পদ ১৬তম গ্রেডের।

সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো: গাজীউল হক চৌধুরী জানান, আমরা প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে ৫ দফা দাবি সরকারের বিবেচনার জন্য লিখিত আকারে পেশ করেছি। দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে-

১. সহকারী শিক্ষকদের ১০ম গ্রেড ও প্রধান শিক্ষকদের ৯ম গ্রেডে বেতন নির্ধারণ এবং প্রধান শিক্ষকদের টাইমস্কেল প্রাপ্তির সব জটিলতা নিরসন করা।

২. ইউআরসিতে কর্মরত ডাটা এন্ট্রি অপারেটরদের ‘সহকারী ইন্সট্রাক্টর’ পদে চলতি দায়িত্ব দেয়ার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর কর্তৃক গত ২০ ফেব্রুয়ারি তারিখের প্রস্তাব বাতিল।

৩. প্রাথমিক স্কুলকে ভোকেশনাল ডিপার্টমেন্ট আখ্যা দিয়ে অন্যান্য শিক্ষা বিভাগের তুলনায় ছুটি কমিয়ে দেয়া বৈষম্যমূলক। অন্যান্য সরকারি কর্মচারীদের মতো ছুটি রেখে প্রাথমিক শিক্ষকদের চাকরি নন- ভোকেশনাল হিসেবে গণ্য করা।

৪. পদোন্নতির সব রকম জটিলতা নিরসন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে সহকারী শিক্ষকদের মধ্যে থেকে প্রধান শিক্ষক পদে পদোন্নতি প্রদান ও চলতি দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকদের প্রধান শিক্ষক পদে পদায়ন এবং প্রধান শিক্ষকদের সিনিয়রিটি ও যোগ্যতার ভিত্তিতে সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার পদ থেকে পরিচালক পর্যন্ত পদোন্নতি দেয়া।

৫. বর্তমান দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সাথে সমন্বয় রেখে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জীবনমান উন্নয়নের জন্য অবিলম্বে ৯ম পে-স্কেল এবং ৯ম পে- স্কেল ঘোষণার আগেই ৫০ শতাংশ মহার্ঘ্য ভাতা প্রদান করা।