ঢাকা ১০:১৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

করোনায় মানসিক চাপে জবি শিক্ষার্থীরা

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০৭:৩৪:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মে ২০২১
  • / 176

::জবি প্রতিনিধি::

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। একই পরিপ্রেক্ষিতে বন্ধ রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। দীর্ঘসময় স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন থেকে দূরে থাকার ফলে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরিবর্তন এসেছে তাদের আচার আচরণেও।

তবে শিক্ষার্থীদের এই অবসাদ কাটাতে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তাদেরকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন মনোবিজ্ঞানী ও সমাজবিজ্ঞানীরা। স্বাভাবিক অবস্থায় ক্যাম্পাসে আসা, ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেওয়া,সহপাঠীদের সাথে আড্ডা দেওয়া, রিহার্সাল, বিভিন্ন সংগঠনের মিটিং, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ, টিউশনি, এসাইনমেন্ট করা সহ নানা রকমের কর্মচঞ্চলতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সময় পার করলেও বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন হওয়ায় পাল্টে গেছে তাদের জীবন প্রক্রিয়া। মেজাজ খিটখিটে থাকা, অস্বাভাবিক আচরণ করা,হতাশাগ্রস্ত হওয়া সহ বেশ কিছু মানসিক জটিলতায় ভুগছে অধিকাংশ শিক্ষার্থী।

জানা যায়, করোনার প্রাদুর্ভাবের ফলে ঘোষিত ছুটিকে শুরুতে শিক্ষার্থীরা এক সপ্তাহ বা পনেরো দিনের ছুটি ভেবে উৎফুল্ল মনে নিজ নিজ বাড়িতে যায়। তবে সময়ের সাথে সাথে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি।অপরদিকে প্রথম এক-দুইমাস বাড়িতে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামীণ পরিবেশকে উপভোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ভালো সময় কাটালেও ছুটি বাড়ার সাথে সাথে তাদের মানসিক অবস্থা খারাপ হওয়া,একঘেয়েমি জীবন বিরক্তিকর মনে হওয়া সহ বেশকিছু কারণে ধীরে ধীরে তারা মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। অপরদিকে গ্রামে দুর্বল নেটওয়ার্ক সংযোগ, ডেটা কেনার অসামর্থ্য, ডিভাইস না থাকা সহ বেশ কিছু কারণে অনলাইন ক্লাস থেকেও পিছিয়ে পড়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী। ফলে পড়াশোনা ও অনার্স শেষ করার অনিশ্চয়তা নিয়েও তাদের মধ্যে অনেকটা হতাশা ও বিষাদ তৈরী হয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আবু হেনা মোরসালিন বলেন, গতবছর করোনার প্রকোপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হবার পর পরই গ্রামের বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে প্রথম দুই মাস পরিবার ও বন্ধুদের সাথে ভালো সময় কাটালেও ক্যাম্পাসের ছুটি বাড়ার পাশাপাশি দীর্ঘদিন বাড়িতে পড়াশোনার বাইরে থাকার ফলে একঘেয়েমি ভাব চলে আসে। ধীরে ধীরে নিজেকে মানসিকভাবে অনেকটা বিপর্যস্তবোধ করি। এক পর্যায়ে হতাশা বাড়ার পাশাপাশি মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় ৷ একজন শিক্ষার্থী হিসেবে ক্যাম্পাস জীবনই আমার কাছে স্বভাবিক জীবন। তাই সেখানে ফিরতে চাই দ্রুত।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য দেবনাথ বলেন, গতবছর যখন করোনার প্রকোপ দেখা দেয় তখন ভাবতে পারিনি মহামারি আমাদের জীবনকে বিপর্যস্ত করে দিবে৷ এক বছরেরও অধিক সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ধীরে ধীরে পড়াশোনার মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছি। ধৈর্য নিয়ে পড়ার অভ্যাসও চলে গিয়েছে। এভাবে দিনের পর দিন ঘরে বসে থাকতে থাকতে হতাশা ও অবসাদ ঘিরে ধরেছে।কবে নাগাদ স্নাতক শেষ করতে পারব তার নিশ্চিয়তা নেই। এভাবে চলতে থাকলে হতাশা আরও বাড়বে।

নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিউল আলম চৌধুরী জানায়, মনের অদূরদর্শী কল্পনায় মাত্র ১৫ দিনের ছুটি ভেবে গতবছরের ১৮ই মার্চ সামান্য জামাকাপড় নিয়ে গ্রামের বাড়ি যায় সে। শুরুর দিকে ভ্যাকেশনটি উপভোগ করলেও দিন অতিবাহিত হবার সাথে সাথে উৎকন্ঠা বেড়ে যেতে লাগলো। মানসিকভাবে শক্ত থাকতে ছোট-বড় সকলের সাথে যোগাযোগ বাড়াতে লাগলাম।কিন্তু একটা পর্যায়ে এসে লক্ষ্য করলাম নিজের আচরণ ও চলাফেরা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেই। নিজের মেজাজ সবসময় খিটখিটে হয়ে থাকতে শুরু করে।কারো স্বাভাবিক কথা ভালো লাগতো না৷ যতবারই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানোর সংবাদ পেয়েছি ততবারই হতাশা চরম সীমানায় পৌঁছে গিয়েছে। এখন দ্রুত ক্যাম্পাসে ফেরার অপেক্ষায় আছি৷

শিক্ষার্থীদের মানসিক অবসাদ সম্পর্কে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা খুবই খারাপশিক্ষার্থীদের উদ্বেগ,উৎকন্ঠা,হতাশা এখন অবশ্যই খারাপের দিকে।বিভিন্ন ডেটাও তাই বলে। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে হলে পরিবার,মনোবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার। বাসায় শিক্ষার্থীদের পরিবার তাদের দিকে সার্বক্ষণিক খেয়াল রাখতে পারে। পড়াশোনার পাশাপাশি গল্পগুজব সহ বিনোদনের ব্যবস্থা করা গেলে এসব শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সার্বিকভাবেই মানুষের মানসিক অস্থিরতা বেড়েছে। মহামারীতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাযোগের দূরত্ব সৃষ্টির ফলেও শিক্ষার্থীরা হতাশাগ্রস্ত হয়।শিক্ষার্থীদের মানসিক প্রশান্তির জন্য এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে৷ কারণ সরাসরি দেখা করার কোন সুযোগ এখন নেই।

তাই অনলাইনে শিক্ষার্থীদের সাথে নিজ নিজ বিভাগ, অ্যালামনাই এসোসিয়েশন, সংগঠন বা ছাত্রকল্যাণ থেকেও প্রতিনিয়ত যোগাযোগাযোগ করে তাদের সমস্যা ও অনুভূতি জানার মাধ্যমে তাদেরকে কাউন্সেলিং করা যেতে পারে। শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যাগুলো শেয়ার করলে অনেকটা প্রশান্তি পাবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান বলেন, দীর্ঘসময় ক্যাম্পাস থেকে দূরে থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও অবসাদ তৈরী হয়েছে।

এটাই বাস্তবতা।এক বছর দুই মাস ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবন প্রক্রিয়া পরিবর্তিত হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা ঘরের ভেতর বন্দী আছে৷ এই অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রথম ও শেষ সমাধান হলো যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীদের আবারও আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়া।তাদের সামাজিক জীবন ও ক্যাম্পাস জীবন স্বাভাবিক করতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

করোনায় মানসিক চাপে জবি শিক্ষার্থীরা

আপডেট : ০৭:৩৪:০১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ মে ২০২১

::জবি প্রতিনিধি::

করোনা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এক বছরের বেশি সময় ধরে দেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ। একই পরিপ্রেক্ষিতে বন্ধ রয়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি)। দীর্ঘসময় স্বাভাবিক শিক্ষাজীবন থেকে দূরে থাকার ফলে মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরিবর্তন এসেছে তাদের আচার আচরণেও।

তবে শিক্ষার্থীদের এই অবসাদ কাটাতে সম্মিলিত প্রচেষ্টায় তাদেরকে পূর্বের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার পরামর্শ দিয়েছেন মনোবিজ্ঞানী ও সমাজবিজ্ঞানীরা। স্বাভাবিক অবস্থায় ক্যাম্পাসে আসা, ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নেওয়া,সহপাঠীদের সাথে আড্ডা দেওয়া, রিহার্সাল, বিভিন্ন সংগঠনের মিটিং, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ, টিউশনি, এসাইনমেন্ট করা সহ নানা রকমের কর্মচঞ্চলতায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সময় পার করলেও বর্তমান প্রেক্ষাপট ভিন্ন হওয়ায় পাল্টে গেছে তাদের জীবন প্রক্রিয়া। মেজাজ খিটখিটে থাকা, অস্বাভাবিক আচরণ করা,হতাশাগ্রস্ত হওয়া সহ বেশ কিছু মানসিক জটিলতায় ভুগছে অধিকাংশ শিক্ষার্থী।

জানা যায়, করোনার প্রাদুর্ভাবের ফলে ঘোষিত ছুটিকে শুরুতে শিক্ষার্থীরা এক সপ্তাহ বা পনেরো দিনের ছুটি ভেবে উৎফুল্ল মনে নিজ নিজ বাড়িতে যায়। তবে সময়ের সাথে সাথে করোনা পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি।অপরদিকে প্রথম এক-দুইমাস বাড়িতে পরিবার, বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন ও গ্রামীণ পরিবেশকে উপভোগের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ভালো সময় কাটালেও ছুটি বাড়ার সাথে সাথে তাদের মানসিক অবস্থা খারাপ হওয়া,একঘেয়েমি জীবন বিরক্তিকর মনে হওয়া সহ বেশকিছু কারণে ধীরে ধীরে তারা মানসিকভাবে অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়ে। অপরদিকে গ্রামে দুর্বল নেটওয়ার্ক সংযোগ, ডেটা কেনার অসামর্থ্য, ডিভাইস না থাকা সহ বেশ কিছু কারণে অনলাইন ক্লাস থেকেও পিছিয়ে পড়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী। ফলে পড়াশোনা ও অনার্স শেষ করার অনিশ্চয়তা নিয়েও তাদের মধ্যে অনেকটা হতাশা ও বিষাদ তৈরী হয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজকর্ম বিভাগের শিক্ষার্থী আবু হেনা মোরসালিন বলেন, গতবছর করোনার প্রকোপে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হবার পর পরই গ্রামের বাড়ি চলে গিয়েছিলাম। গ্রামের বাড়িতে গিয়ে প্রথম দুই মাস পরিবার ও বন্ধুদের সাথে ভালো সময় কাটালেও ক্যাম্পাসের ছুটি বাড়ার পাশাপাশি দীর্ঘদিন বাড়িতে পড়াশোনার বাইরে থাকার ফলে একঘেয়েমি ভাব চলে আসে। ধীরে ধীরে নিজেকে মানসিকভাবে অনেকটা বিপর্যস্তবোধ করি। এক পর্যায়ে হতাশা বাড়ার পাশাপাশি মেজাজ খিটখিটে হয়ে যায় ৷ একজন শিক্ষার্থী হিসেবে ক্যাম্পাস জীবনই আমার কাছে স্বভাবিক জীবন। তাই সেখানে ফিরতে চাই দ্রুত।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী ঐশ্বর্য দেবনাথ বলেন, গতবছর যখন করোনার প্রকোপ দেখা দেয় তখন ভাবতে পারিনি মহামারি আমাদের জীবনকে বিপর্যস্ত করে দিবে৷ এক বছরেরও অধিক সময় ধরে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকায় ধীরে ধীরে পড়াশোনার মনোযোগ হারিয়ে ফেলেছি। ধৈর্য নিয়ে পড়ার অভ্যাসও চলে গিয়েছে। এভাবে দিনের পর দিন ঘরে বসে থাকতে থাকতে হতাশা ও অবসাদ ঘিরে ধরেছে।কবে নাগাদ স্নাতক শেষ করতে পারব তার নিশ্চিয়তা নেই। এভাবে চলতে থাকলে হতাশা আরও বাড়বে।

নাট্যকলা বিভাগের শিক্ষার্থী রাফিউল আলম চৌধুরী জানায়, মনের অদূরদর্শী কল্পনায় মাত্র ১৫ দিনের ছুটি ভেবে গতবছরের ১৮ই মার্চ সামান্য জামাকাপড় নিয়ে গ্রামের বাড়ি যায় সে। শুরুর দিকে ভ্যাকেশনটি উপভোগ করলেও দিন অতিবাহিত হবার সাথে সাথে উৎকন্ঠা বেড়ে যেতে লাগলো। মানসিকভাবে শক্ত থাকতে ছোট-বড় সকলের সাথে যোগাযোগ বাড়াতে লাগলাম।কিন্তু একটা পর্যায়ে এসে লক্ষ্য করলাম নিজের আচরণ ও চলাফেরা স্বাভাবিক পর্যায়ে নেই। নিজের মেজাজ সবসময় খিটখিটে হয়ে থাকতে শুরু করে।কারো স্বাভাবিক কথা ভালো লাগতো না৷ যতবারই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ছুটি বাড়ানোর সংবাদ পেয়েছি ততবারই হতাশা চরম সীমানায় পৌঁছে গিয়েছে। এখন দ্রুত ক্যাম্পাসে ফেরার অপেক্ষায় আছি৷

শিক্ষার্থীদের মানসিক অবসাদ সম্পর্কে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. নূর মোহাম্মদ বলেন, বর্তমান প্রেক্ষাপটে শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থা খুবই খারাপশিক্ষার্থীদের উদ্বেগ,উৎকন্ঠা,হতাশা এখন অবশ্যই খারাপের দিকে।বিভিন্ন ডেটাও তাই বলে। শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি করতে হলে পরিবার,মনোবিজ্ঞানী, সমাজবিজ্ঞানী ও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সমন্বিত প্রচেষ্টা দরকার। বাসায় শিক্ষার্থীদের পরিবার তাদের দিকে সার্বক্ষণিক খেয়াল রাখতে পারে। পড়াশোনার পাশাপাশি গল্পগুজব সহ বিনোদনের ব্যবস্থা করা গেলে এসব শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো থাকবে।

মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. শাহিনুজ্জামান বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে সার্বিকভাবেই মানুষের মানসিক অস্থিরতা বেড়েছে। মহামারীতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে যোগাযোগের দূরত্ব সৃষ্টির ফলেও শিক্ষার্থীরা হতাশাগ্রস্ত হয়।শিক্ষার্থীদের মানসিক প্রশান্তির জন্য এখন অনলাইন প্ল্যাটফর্মে বিভিন্ন উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে৷ কারণ সরাসরি দেখা করার কোন সুযোগ এখন নেই।

তাই অনলাইনে শিক্ষার্থীদের সাথে নিজ নিজ বিভাগ, অ্যালামনাই এসোসিয়েশন, সংগঠন বা ছাত্রকল্যাণ থেকেও প্রতিনিয়ত যোগাযোগাযোগ করে তাদের সমস্যা ও অনুভূতি জানার মাধ্যমে তাদেরকে কাউন্সেলিং করা যেতে পারে। শিক্ষার্থীরা তাদের সমস্যাগুলো শেয়ার করলে অনেকটা প্রশান্তি পাবে। জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান খান বলেন, দীর্ঘসময় ক্যাম্পাস থেকে দূরে থাকায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা ও অবসাদ তৈরী হয়েছে।

এটাই বাস্তবতা।এক বছর দুই মাস ধরে ক্যাম্পাস বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক জীবন প্রক্রিয়া পরিবর্তিত হয়েছে। এখন শিক্ষার্থীরা ঘরের ভেতর বন্দী আছে৷ এই অবস্থা থেকে উত্তরণে প্রথম ও শেষ সমাধান হলো যত দ্রুত সম্ভব শিক্ষার্থীদের আবারও আগের জায়গায় ফিরিয়ে নেওয়া।তাদের সামাজিক জীবন ও ক্যাম্পাস জীবন স্বাভাবিক করতে হবে।