ঢাকা ০২:৩৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে নালায় পড়ে বারবার মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি  

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১২:৩৬:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর ২০২১
  • / 88
চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন সড়কের পাশে খোলা নালা ও খালে পড়ে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে অবশেষে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে সাত সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটিতে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করা হয়। এছাড়া সদস্য করা হয় সিএমপি কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি, সিডিএ সচিব, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী এবং চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক। এছাড়া তদন্তের প্রয়োজনে আরও দুজন সদস্যকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে এই তদন্ত কমিটির প্রধানকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে এই কমিটি বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) বৈঠক করবে। এছাড়া পরবর্তীতে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হবে।

অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আমরা প্রথমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের সাথে বসতে চাই। এরপর ঘটনাস্থলগুলো পরিদর্শন করবো। এসব ঘটনায় নিহত হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সাথে কথা বলে তাদের বক্তব্যও নেবো।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কাছে পাঠানো চিঠিতে এ ঘটনাকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করা হয় এবং এজন্য দায়ী কে বা কারা- তা তদন্ত করে প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে নগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ শেখ মুজিব সড়কে মাজারগেট এলাকায় নালায় পড়ে নিখোঁজ হন সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া (১৯)। তিনি চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর রাত ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদলের সদস্যরা নালা থেকে সাদিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করেন।

এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট থানার মাঝিরঘাট রোডের ড্রেন থেকে অজ্ঞাত (৩৫) এক পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের অভিমত, ড্রেনে পড়ে গিয়ে উঠতে না পেরে মারা গেছেন অজ্ঞাত এই পথচারী।

এছাড়া গত ২৫ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে মুরাদপুর এলাকায় রাস্তার পাশে ড্রেনে পড়ে তলিয়ে যান সালেহ আহমেদ নামে এক সবজি ব্যবসায়ী। এক মাস পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজ সালেহ আহমেদের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি এখনো।

গত ৩০ জুন বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর ২ নম্বর গেট মেয়র গলিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা খালে পড়ে নিহত হন খাতিজা বেগম (৬৫) ও সিএনজি চালক মো. সুলতান (৩৮)। তবে এ ঘটনায় অটোতে বাকি তিনজনকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। দুই নম্বর গেট মেয়র গলির টিঅ্যান্ডটি কলোনি এলাকা থেকে ডাক্তার দেখানোর জন্য সিএনজি অটোরিকশা করে মোট চারজন বের হন। এ সময় বাসা থেকে রওনা দিতেই সিএনজি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের খালের পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ড্রেনের পানিতে ডুবে মারা যান ২ জন।

একের পর এক মৃত্যুর ঘটনার দায় নিতে রাজি নয় কেউ। এজন্য সিডিএ এবং সিটি কর্পোরেশন একে অপরের প্রতি দোষারোপ করছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

চট্টগ্রামে নালায় পড়ে বারবার মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত কমিটি  

আপডেট : ১২:৩৬:৫৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ অক্টোবর ২০২১
চট্টগ্রাম নগরের বিভিন্ন সড়কের পাশে খোলা নালা ও খালে পড়ে একের পর এক মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে অবশেষে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের নির্দেশে সাত সদস্যের এ কমিটি গঠন করা হয়।

কমিটিতে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানকে প্রধান করা হয়। এছাড়া সদস্য করা হয় সিএমপি কমিশনার ও জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি, সিডিএ সচিব, পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী, চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী এবং চট্টগ্রাম শহরে জলাবদ্ধতা নিরসনকল্পে খাল পুনঃখনন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন প্রকল্পের পরিচালক। এছাড়া তদন্তের প্রয়োজনে আরও দুজন সদস্যকে কমিটিতে অন্তর্ভুক্ত করার ক্ষমতা দেয়া হয়েছে এই তদন্ত কমিটির প্রধানকে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ঘটনার কারণ অনুসন্ধানে এই কমিটি বৃহস্পতিবার (১৪ অক্টোবর) বৈঠক করবে। এছাড়া পরবর্তীতে সরেজমিনে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করা হবে।

অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, আমরা প্রথমে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিনিধিদের সাথে বসতে চাই। এরপর ঘটনাস্থলগুলো পরিদর্শন করবো। এসব ঘটনায় নিহত হওয়া ব্যক্তিদের পরিবারের সাথে কথা বলে তাদের বক্তব্যও নেবো।

প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের পক্ষ থেকে চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের কাছে পাঠানো চিঠিতে এ ঘটনাকে দুঃখজনক বলে উল্লেখ করা হয় এবং এজন্য দায়ী কে বা কারা- তা তদন্ত করে প্রতিবেদন মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠাতে বলা হয়েছে।

উল্লেখ্য, গত ২৭ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে নগরীর ডবলমুরিং থানার আগ্রাবাদ শেখ মুজিব সড়কে মাজারগেট এলাকায় নালায় পড়ে নিখোঁজ হন সেহেরীন মাহবুব সাদিয়া (১৯)। তিনি চট্টগ্রামের আন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের প্রথম বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর রাত ৩টার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদলের সদস্যরা নালা থেকে সাদিয়ার মৃতদেহ উদ্ধার করেন।

এর আগে ২৬ সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে চট্টগ্রাম নগরীর সদরঘাট থানার মাঝিরঘাট রোডের ড্রেন থেকে অজ্ঞাত (৩৫) এক পুরুষের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের অভিমত, ড্রেনে পড়ে গিয়ে উঠতে না পেরে মারা গেছেন অজ্ঞাত এই পথচারী।

এছাড়া গত ২৫ আগস্ট সকাল ১১টার দিকে মুরাদপুর এলাকায় রাস্তার পাশে ড্রেনে পড়ে তলিয়ে যান সালেহ আহমেদ নামে এক সবজি ব্যবসায়ী। এক মাস পেরিয়ে গেলেও নিখোঁজ সালেহ আহমেদের মরদেহ উদ্ধার করা সম্ভব হয়নি এখনো।

গত ৩০ জুন বুধবার বেলা সাড়ে ১২টার দিকে নগরীর ২ নম্বর গেট মেয়র গলিতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা খালে পড়ে নিহত হন খাতিজা বেগম (৬৫) ও সিএনজি চালক মো. সুলতান (৩৮)। তবে এ ঘটনায় অটোতে বাকি তিনজনকে উদ্ধার করেন স্থানীয়রা। দুই নম্বর গেট মেয়র গলির টিঅ্যান্ডটি কলোনি এলাকা থেকে ডাক্তার দেখানোর জন্য সিএনজি অটোরিকশা করে মোট চারজন বের হন। এ সময় বাসা থেকে রওনা দিতেই সিএনজি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পাশের খালের পড়ে যায়। এতে ঘটনাস্থলেই ড্রেনের পানিতে ডুবে মারা যান ২ জন।

একের পর এক মৃত্যুর ঘটনার দায় নিতে রাজি নয় কেউ। এজন্য সিডিএ এবং সিটি কর্পোরেশন একে অপরের প্রতি দোষারোপ করছে।