ঢাকা ০৭:৪৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

মিতু হত্যাকাণ্ড: বাবুলের মামলা পুনঃতদন্তের নির্দেশ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১১:০৫:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ নভেম্বর ২০২১
  • / 91
চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যাকাণ্ডে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের করা মামলা পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি আবেদন না মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাবুলের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।

তিনি বলেন, আদালত নারাজি আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। পাশাপাশি আমরা পুনঃতদন্তের জন্য আবেদন করেছিলাম। আদালত মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য দিয়েছে। এছাড়া বাবুল আক্তারের করা মামলায় আদালতে জমা দেয়া প্রতিবেদন গ্রহণ করেনি আদালত।

এর আগে, ২৭ অক্টোবর নারাজি আবেদনের শুনানিতে বাবুল আক্তার উপস্থিতিতে হয়েছেন। শুনানি শেষে আজকে আদেশ দেয়ার কথা বলেছিলেন আদালত।

জানা যায়, মিতু হত্যাকাণ্ডে দুটি মামলা হয়। প্রথম মামলার বাদি তার স্বামী বাবুল আক্তার। পরে মামলার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে বাদি বাবুলের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই মামলায় গত ১২ মে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। ওইদিনই পাঁচলাইশ থানায় মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদি হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দ্বিতীয় মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাবুল আক্তারকে। তিনি সে মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে করে তিন দুর্বৃত্ত মিতুকে ঘিরে ধরে। প্রথমে তারা তাকে গুলি করে। এরপর কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। ওই সময় মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।

এ ঘটনায় নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন বাবুল আক্তার। মামলাটি চট্টগ্রামের নগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ৩ বছর ১১ মাস তদন্তে থাকার পর গত বছরের মে মাসে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।

তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এরপর মিতু হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে গত ১২ মে মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় এজাহার দায়ের করেন।

এজাহারে সাবেক এসপি মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার, কিলিং স্কোয়াডের সদস্য মো. কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা, মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু ওরফে কসাই কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার ওরফে সাকু মাইজ্যা ও শাহজাহান মিয়াকে আসামি করা হয়েছে। যদিও এদের মধ্যে ২ জন পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন এবং বর্তমানে জেলে আছেন ২ জন।

পুলিশের তথ্যমতে, কিলিং স্কোয়াডের নেতৃত্বদানকারী মুসা পলাতক রয়েছেন।

এছাড়া স্ত্রী হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। ২৯ মে থেকে বাবুল আক্তার ফেনী কারাগারে আছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

মিতু হত্যাকাণ্ড: বাবুলের মামলা পুনঃতদন্তের নির্দেশ

আপডেট : ১১:০৫:১৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৩ নভেম্বর ২০২১
চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর মিতু হত্যাকাণ্ডে সাবেক পুলিশ সুপার বাবুল আক্তারের করা মামলা পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) দেয়া চূড়ান্ত প্রতিবেদনের ওপর নারাজি আবেদন না মঞ্জুর করেছেন আদালত।

বুধবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ রহমানের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দিয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করে বাবুলের আইনজীবী শেখ ইফতেখার সাইমুল চৌধুরী।

তিনি বলেন, আদালত নারাজি আবেদন খারিজ করে দিয়েছে। পাশাপাশি আমরা পুনঃতদন্তের জন্য আবেদন করেছিলাম। আদালত মামলাটি পুনঃতদন্তের জন্য দিয়েছে। এছাড়া বাবুল আক্তারের করা মামলায় আদালতে জমা দেয়া প্রতিবেদন গ্রহণ করেনি আদালত।

এর আগে, ২৭ অক্টোবর নারাজি আবেদনের শুনানিতে বাবুল আক্তার উপস্থিতিতে হয়েছেন। শুনানি শেষে আজকে আদেশ দেয়ার কথা বলেছিলেন আদালত।

জানা যায়, মিতু হত্যাকাণ্ডে দুটি মামলা হয়। প্রথম মামলার বাদি তার স্বামী বাবুল আক্তার। পরে মামলার তদন্তে হত্যাকাণ্ডে বাদি বাবুলের সম্পৃক্ততা পায় পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। ওই মামলায় গত ১২ মে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। ওইদিনই পাঁচলাইশ থানায় মিতুর বাবা মোশাররফ হোসেন বাদি হয়ে আরেকটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। দ্বিতীয় মামলায় প্রধান আসামি করা হয় বাবুল আক্তারকে। তিনি সে মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে বর্তমানে কারাগারে আছেন।

উল্লেখ্য, ২০১৬ সালের ৫ জুন চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার সময় মোটরসাইকেলে করে তিন দুর্বৃত্ত মিতুকে ঘিরে ধরে। প্রথমে তারা তাকে গুলি করে। এরপর কুপিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে পালিয়ে যায়। ওই সময় মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার পুলিশ সুপার পদে পদোন্নতি পেয়ে পুলিশ সদর দপ্তরে যোগ দিয়ে ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।

এ ঘটনায় নগরীর পাঁচলাইশ থানায় অজ্ঞাতদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন বাবুল আক্তার। মামলাটি চট্টগ্রামের নগর গোয়েন্দা পুলিশের কাছে ৩ বছর ১১ মাস তদন্তে থাকার পর গত বছরের মে মাসে মামলাটি পুলিশ ব্যুরো ইনভেস্টিগেশনে (পিবিআই) হস্তান্তর করা হয়। মামলাটির তদন্তকারী কর্মকর্তা হলেন পরিদর্শক সন্তোষ কুমার চাকমা।

তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে বাবুল আক্তারকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই। এরপর মিতু হত্যাকাণ্ডে বাবুল আক্তারকে প্রধান আসামি করে মোট ৮ জনের বিরুদ্ধে গত ১২ মে মিতুর বাবা মোশারফ হোসেন পাঁচলাইশ থানায় এজাহার দায়ের করেন।

এজাহারে সাবেক এসপি মিতুর স্বামী বাবুল আক্তার, কিলিং স্কোয়াডের সদস্য মো. কামরুল ইসলাম সিকদার ওরফে মুসা, এহতেশামুল হক ওরফে ভোলা, মো. মোতালেব মিয়া ওরফে ওয়াসিম, মো. আনোয়ার হোসেন, মো. খায়রুল ইসলাম ওরফে কালু ওরফে কসাই কালু, মো. সাইদুল ইসলাম সিকদার ওরফে সাকু মাইজ্যা ও শাহজাহান মিয়াকে আসামি করা হয়েছে। যদিও এদের মধ্যে ২ জন পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ ইতোমধ্যে প্রাণ হারিয়েছেন এবং বর্তমানে জেলে আছেন ২ জন।

পুলিশের তথ্যমতে, কিলিং স্কোয়াডের নেতৃত্বদানকারী মুসা পলাতক রয়েছেন।

এছাড়া স্ত্রী হত্যা মামলার প্রধান আসামি বাবুল আক্তারকে পাঁচ দিনের রিমান্ড নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পিবিআই। রিমান্ড শেষে প্রথমে আদালতে জবানবন্দি দেয়ার কথা থাকলেও পরে জবানবন্দি দেননি বাবুল। ২৯ মে থেকে বাবুল আক্তার ফেনী কারাগারে আছেন।