ঢাকা ০২:৪৭ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউএনও’র রুমের পাশে দুই চেয়ারম্যানের মারামারি!

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১২:৩৫:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর ২০২১
  • / 126
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) অফিসকক্ষের পাশে দুই ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও দাশপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এএনএম জাহাঙ্গির হোসেন উপজেলা পরিষদ ভবনের দোতালায় নির্বাহী অফিসারের অফিসকক্ষের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন নির্বাহী অফিসারের অফিসকক্ষের পশ্চিম পাশে ২০৮ নম্বর কক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বসা ছিলেন।

এ সময় চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির হোসেনকে দেখে বলেন, ‘কিরে শালা কই যাও?’ প্রতিউত্তরে জাহাঙ্গির বলেন, ‘দুলাভাই সামনে যাই।’ এরপর হঠাৎ করে শাহিন চেয়ার থেকে উঠে জাহাঙ্গিরের দিকে তেড়ে গিয়ে বলেন, ‘তুই আমার কিসের দুলাইভাই?’ এই বলে তার দুই গালে সজোড়ে দুইটি চড় মারেন। এ সময় দুইজনের মধ্যে ধাক্কা ধাক্কি ও মারামারি হয়।

এক পর্যায়ে ডাক-চিৎকার শুনে ইউএনও মো. আল আমিন তার কক্ষ থেকে বেড় হয়ে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং দুই চেয়ারম্যানকে দুই দিকে সরিয়ে দেন। এ নিয়ে কিছু সময়ের জন্য উপজেলা পরিষদ চত্বর এলাকায় দুই চেয়ারম্যানের অনুসারিদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ‘চেয়ারম্যান শাহিন আমার ওপর হামলা করেছেন। যা পরিষদের কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা আছে। ঘটনাটি আমি মৌখিকভাবে বাউফল থানার ওসিকে জানিয়েছি। তাকে লিখিতভাবেও জানাবো। এছাড়াও ইউএনও স্যারের মাধ্যমে লিখিতভাবে বিষয়টি ডিসি স্যারকে জানাবো।’

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘আমি একটি পে-আর্ডার আনার জন্য উপজেলা পরিষদে যাই। তখন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আমাকে দেখে রাসেল নামের তার এক অনুসারিকে বলেন, ‘ওই গুন্ডা যায়।’ আমিও তখন তাকে মন্দ কথা বলি। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির বলেন ‘ধর শালাকে।’ এরপর তার অনুসারি রাসেল চাকু বেড় করে আমাকে আঘাত করার চেষ্টা করলে আমি কিছুটা সরে যাই। এ সময় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির পিস্তল বেড় করলে আমি ডাকচিৎকার দেই। পরে ইউএনও স্যার এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। সব ঘটনা সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড আছে।’

বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, ‘দুই চেয়ারম্যানই মৌখিকভাবে ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছেন। এ ছাড়াও ইউএনও কার্যালয় থেকে আমাকে ঘটনাটি জানানোর পর আমি পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে লিখিতভাবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল আমিন বলেন, ‘ডাকচিৎকার শুনে প্রথমে আমি মনে করেছি অফিসের বাইরে হয়তো কোনো ঘটনা ঘটেছে। পরে যখন বুঝলাম আমার অফিসকক্ষের কাছে ডাকাডাকি হচ্ছে, তখন আমি গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি এবং দুই চেয়ারম্যানকে দুই দিকে সরিয়ে দেই। এ ঘটনাটি সত্যিই দুঃখজনক। জনপ্রতিনিধি হিসাবে তাদের এ আচরণ কাম্য ছিল না। ঘটনাটি আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানিয়েছি।’

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ইউএনও’র রুমের পাশে দুই চেয়ারম্যানের মারামারি!

আপডেট : ১২:৩৫:০২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৬ নভেম্বর ২০২১
পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলা নির্বাহী অফিসারের (ইউএনও) অফিসকক্ষের পাশে দুই ইউপি চেয়ারম্যানের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ ও দাশপাড়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এএনএম জাহাঙ্গির হোসেন উপজেলা পরিষদ ভবনের দোতালায় নির্বাহী অফিসারের অফিসকক্ষের দিকে যাচ্ছিলেন। তখন নির্বাহী অফিসারের অফিসকক্ষের পশ্চিম পাশে ২০৮ নম্বর কক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও কনকদিয়া ইউনিয়নের চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বসা ছিলেন।

এ সময় চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির হোসেনকে দেখে বলেন, ‘কিরে শালা কই যাও?’ প্রতিউত্তরে জাহাঙ্গির বলেন, ‘দুলাভাই সামনে যাই।’ এরপর হঠাৎ করে শাহিন চেয়ার থেকে উঠে জাহাঙ্গিরের দিকে তেড়ে গিয়ে বলেন, ‘তুই আমার কিসের দুলাইভাই?’ এই বলে তার দুই গালে সজোড়ে দুইটি চড় মারেন। এ সময় দুইজনের মধ্যে ধাক্কা ধাক্কি ও মারামারি হয়।

এক পর্যায়ে ডাক-চিৎকার শুনে ইউএনও মো. আল আমিন তার কক্ষ থেকে বেড় হয়ে এসে পরিস্থিতি শান্ত করেন এবং দুই চেয়ারম্যানকে দুই দিকে সরিয়ে দেন। এ নিয়ে কিছু সময়ের জন্য উপজেলা পরিষদ চত্বর এলাকায় দুই চেয়ারম্যানের অনুসারিদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিলে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির হোসেন বলেন, ‘চেয়ারম্যান শাহিন আমার ওপর হামলা করেছেন। যা পরিষদের কার্যালয়ের সিসি ক্যামেরায় ধারণ করা আছে। ঘটনাটি আমি মৌখিকভাবে বাউফল থানার ওসিকে জানিয়েছি। তাকে লিখিতভাবেও জানাবো। এছাড়াও ইউএনও স্যারের মাধ্যমে লিখিতভাবে বিষয়টি ডিসি স্যারকে জানাবো।’

এ ব্যাপারে চেয়ারম্যান শাহিন হাওলাদার বলেন, ‘আমি একটি পে-আর্ডার আনার জন্য উপজেলা পরিষদে যাই। তখন চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির আমাকে দেখে রাসেল নামের তার এক অনুসারিকে বলেন, ‘ওই গুন্ডা যায়।’ আমিও তখন তাকে মন্দ কথা বলি। এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির বলেন ‘ধর শালাকে।’ এরপর তার অনুসারি রাসেল চাকু বেড় করে আমাকে আঘাত করার চেষ্টা করলে আমি কিছুটা সরে যাই। এ সময় চেয়ারম্যান জাহাঙ্গির পিস্তল বেড় করলে আমি ডাকচিৎকার দেই। পরে ইউএনও স্যার এসে পরিস্থিতি শান্ত করে। সব ঘটনা সিসি ক্যামেরায় রেকর্ড আছে।’

বাউফল থানার ওসি আল মামুন বলেন, ‘দুই চেয়ারম্যানই মৌখিকভাবে ঘটনাটি আমাকে জানিয়েছেন। এ ছাড়াও ইউএনও কার্যালয় থেকে আমাকে ঘটনাটি জানানোর পর আমি পুলিশ পাঠিয়েছি। তবে লিখিতভাবে এখন পর্যন্ত কেউ কোনো অভিযোগ করেননি।’

উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আল আমিন বলেন, ‘ডাকচিৎকার শুনে প্রথমে আমি মনে করেছি অফিসের বাইরে হয়তো কোনো ঘটনা ঘটেছে। পরে যখন বুঝলাম আমার অফিসকক্ষের কাছে ডাকাডাকি হচ্ছে, তখন আমি গিয়ে পরিস্থিতি শান্ত করি এবং দুই চেয়ারম্যানকে দুই দিকে সরিয়ে দেই। এ ঘটনাটি সত্যিই দুঃখজনক। জনপ্রতিনিধি হিসাবে তাদের এ আচরণ কাম্য ছিল না। ঘটনাটি আমি জেলা প্রশাসক মহোদয়কে জানিয়েছি।’