ঢাকা ০৮:৪৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

একমাস ধরে আন্দোলন করছে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির শ্রমিকরা

দিনাজপুর প্রতিনিধি
  • আপডেট : ০৫:২৮:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২
  • / 142
কর্মস্থলে যোগদানসহ করোনাকালীন বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের অধীনে কর্মরত দেশি শ্রমিকরা টানা একমাস ধরে পরিবার-পরিজন নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আবারও বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি গেট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শ্রমিকেরা। মিছিলটি কয়লা খনি বাজার প্রদক্ষিণ করে খনি গেটে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম, শ্রমিকের স্ত্রী খুকু মনি, শ্রমিক নেতা জাকির হোসেন, এরশাদ আলী ও এহছানুল হক সোহাগ প্রমুখ।

এ সময় বক্তরা বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সকল সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান পূর্বের মতোই চালু হলেও অজ্ঞাত কারণে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে আমাদের স্ব-স্ব কর্মস্থলে খনি কর্তৃপক্ষ যোগদানের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। একইসাথে খনি কর্তৃপক্ষ ঘোষিত করোনাকালীন বেতন-ভাতা না পাওয়ায় আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।

তারা আরও বলেন, প্রায় দুই বছর আগে বৈশ্বিক করোনা মহামারীর কারণে কর্মরত ১১৪৭ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে বাধ্যতামূলক ছুটি দেয়া হয়। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৪০০ জন শ্রমিককে খনির ভেতরে থেকে কাজ করার শর্তে ফেরত নেয়। বাকি ৭৪৭ জনকে কাজে যোগদানের সুযোগ না দিয়ে বেতন বন্ধ রাখা হয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের সময় খনির ভেতরে যে সকল শ্রমিক অবস্থান করছিলেন তাদেরও ছুটি দেয়া হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, ছুটি দেয়ার সময় কথা ছিল শ্রমিকদের প্রতি মাসে ৪৫০০ টাকা করে দেবে। কিন্তু গত ৯ মাস ধরে তা আর দেয়া হচ্ছে না। অবিলম্বে এসব শ্রমিকরা কাজে যোগদানসহ বকেয়া পাওনা বেতন-ভাতার দাবি জানান।

এদিকে গত ১০ মে খনির অভ্যান্তরে মনমেলা সভা কক্ষে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে খনি কর্তৃপক্ষ এক বৈঠকে বসেন। সেখানে আন্দলনকালী শ্রমিকদের মধ্য থেকে ৬০০ জনকে কাজে যোগদানের প্রস্তাব দেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শ্রমিকরা করোনাকালীন ৯ মাসের বকেয়া ভাতাসহ সকল শ্রমিকদের স্ব-স্ব কাজে যোগদানের দাবি জানিয়ে ওই আলোচনা প্রত্যাখ্যান করে চলমান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কামরুজ্জামান খান মুঠোফোনে জানান, চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের এর সাথে কথা বলে প্রথমে ৪০০ জন শ্রমিককে কাজে যোগদান এবং পরে আরও ২০০ শ্রমিকসহ মোট ৬০০ জনকে কাজে যোগদানের বিষয়ে প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু শ্রমিকরা তা প্রত্যাখ্যান করে খনি গেট উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, এসব দাবি নিয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন গত ১১ এপ্রিল খনি কর্তৃপক্ষের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। ওইদিন ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

একমাস ধরে আন্দোলন করছে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির শ্রমিকরা

আপডেট : ০৫:২৮:১৯ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১২ মে ২০২২
কর্মস্থলে যোগদানসহ করোনাকালীন বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে বড়পুকুরিয়া কয়লাখনির চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের অধীনে কর্মরত দেশি শ্রমিকরা টানা একমাস ধরে পরিবার-পরিজন নিয়ে অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন।

বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে আবারও বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি গেট থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে শ্রমিকেরা। মিছিলটি কয়লা খনি বাজার প্রদক্ষিণ করে খনি গেটে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হয়।

এ সময় সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য রাখেন বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি রবিউল ইসলাম রবি, সাধারণ সম্পাদক আবু সুফিয়ান, সাবেক সাধারণ সম্পাদক নূর ইসলাম, শ্রমিকের স্ত্রী খুকু মনি, শ্রমিক নেতা জাকির হোসেন, এরশাদ আলী ও এহছানুল হক সোহাগ প্রমুখ।

এ সময় বক্তরা বলেন, করোনা পরবর্তী সময়ে সরকারের ঘোষণা অনুযায়ী সকল সরকারি-বেসরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান পূর্বের মতোই চালু হলেও অজ্ঞাত কারণে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনিতে আমাদের স্ব-স্ব কর্মস্থলে খনি কর্তৃপক্ষ যোগদানের কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। একইসাথে খনি কর্তৃপক্ষ ঘোষিত করোনাকালীন বেতন-ভাতা না পাওয়ায় আমরা পরিবার পরিজন নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছি।

তারা আরও বলেন, প্রায় দুই বছর আগে বৈশ্বিক করোনা মহামারীর কারণে কর্মরত ১১৪৭ জন বাংলাদেশি শ্রমিককে বাধ্যতামূলক ছুটি দেয়া হয়। এরপর চলতি বছরের জানুয়ারিতে ৪০০ জন শ্রমিককে খনির ভেতরে থেকে কাজ করার শর্তে ফেরত নেয়। বাকি ৭৪৭ জনকে কাজে যোগদানের সুযোগ না দিয়ে বেতন বন্ধ রাখা হয়েছে। পবিত্র ঈদুল ফিতরের সময় খনির ভেতরে যে সকল শ্রমিক অবস্থান করছিলেন তাদেরও ছুটি দেয়া হয়েছে।

বক্তারা আরও বলেন, ছুটি দেয়ার সময় কথা ছিল শ্রমিকদের প্রতি মাসে ৪৫০০ টাকা করে দেবে। কিন্তু গত ৯ মাস ধরে তা আর দেয়া হচ্ছে না। অবিলম্বে এসব শ্রমিকরা কাজে যোগদানসহ বকেয়া পাওনা বেতন-ভাতার দাবি জানান।

এদিকে গত ১০ মে খনির অভ্যান্তরে মনমেলা সভা কক্ষে আন্দোলনকারী শ্রমিকদের ২০ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের সাথে খনি কর্তৃপক্ষ এক বৈঠকে বসেন। সেখানে আন্দলনকালী শ্রমিকদের মধ্য থেকে ৬০০ জনকে কাজে যোগদানের প্রস্তাব দেন কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শ্রমিকরা করোনাকালীন ৯ মাসের বকেয়া ভাতাসহ সকল শ্রমিকদের স্ব-স্ব কাজে যোগদানের দাবি জানিয়ে ওই আলোচনা প্রত্যাখ্যান করে চলমান কর্মসূচি অব্যাহত রেখেছেন।

বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানি লিমিটেড’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক প্রকৌশলী কামরুজ্জামান খান মুঠোফোনে জানান, চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সিএমসি-এক্সএমসি কনসোর্টিয়ামের এর সাথে কথা বলে প্রথমে ৪০০ জন শ্রমিককে কাজে যোগদান এবং পরে আরও ২০০ শ্রমিকসহ মোট ৬০০ জনকে কাজে যোগদানের বিষয়ে প্রস্তাব দেয়া হয়। কিন্তু শ্রমিকরা তা প্রত্যাখ্যান করে খনি গেট উন্মুক্ত করে দেয়ার দাবি জানান।

উল্লেখ্য, এসব দাবি নিয়ে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়ন গত ১১ এপ্রিল খনি কর্তৃপক্ষের কাছে একটি স্মারকলিপি প্রদান করেন। ওইদিন ঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী বিক্ষোভ ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করে আসছেন তারা।