ঢাকা ১১:১৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নাকাল সাতক্ষীরাবাসী

সাতক্ষীরা প্রতিনিধি
  • আপডেট : ০৮:০৭:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২
  • / 136
সাতক্ষীরায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নাকাল হয়ে পড়েছে জেলার অনন্ত ২২ লক্ষ মানুষ। সন্ধ্যার পর গ্রামাঅঞ্চল থেকে শুরু করে সাতক্ষীরা ভুতুড়ে শহরে পরিনত হচ্ছে।

জ্বালানি সাশ্রয়ে সারা দেশের মতো বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময়সূচি (রুটিন) অনুযায়ী সাতক্ষীরায় চলতে পারছে না বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রতিষ্ঠান ওজোপাটিকো (পিডিবি) এবং সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

দুই ঘণ্টা লোডশেডিং দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু দিনে রাতে মিলিয়ে ১৫/১৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আর বাকী ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। এ কারণে প্রচন্ড গরমে মানুষের দুর্ভোগ সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।

অতিমাত্রায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে জেলার শিল্প কলকারখানাগুলো প্রায় অচলাবস্থা। বরফ কলগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে চিংড়ি ও মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায়। জেলার বিদ্যুৎ নির্ভর হিমাগারগুলোর একই অবস্থা। যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে কৃষি জাত পণ্য সংরক্ষণে।

বিদ্যুৎ না থাকায় এসএসসি ও দাখিল পরিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে হারিকেন ও মোমবাতি জালিয়ে লেখাপড়া করছে।

এদিকে পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বলছে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি বেড়ে গেছে। চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ পাওয়ায় রুটিনের বাইরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে করতে বাধ্য হচ্ছে প্রতিষ্ঠান দুটি।

সাতক্ষীরা (ওজোপাটিকো) পিডিবি’র সহকারি প্রকৌশলী মতিউর রহমান জানান, সাতক্ষীরা শহরে পিডিবি’র ৪৯ হাজার বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে। চাহিদা রয়েছে দৈনিক ১৮ থেকে ১৯ মেগাওয়াট। আমরা পাচ্ছি ১৩ থেকে ১৪ মেগাওয়াট।

তিনি বলেন, সুষ্ঠু বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার জন্য শহরকে ৭টি ফিডারে ভাগ করা হয়েছে। সময়সূচিতে প্রতি ফিডারে ২ ঘন্টা করে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

পিডিবি’র বিদ্যুৎ গ্রাহকরা জানান, ভোর, সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা ও রাতে সমান তালে বিদ্যুৎ লোডশেডিং থাকছে। কখনো কখনো দিনে ও রাতে মিলে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকছে। আর পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা বলছে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ পাচ্ছে তারা।

সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউর রহমান জানান, জেলায় পল্লী বিদ্যুতের ৫ লাখ ৯৫ হাজার গ্রাহক রয়েছে। চাহিদা রয়েছে দৈনিক ১২২ মেগাওয়াট। জাতীয় গ্রিড থেকে প্রতিদিন ১৫ শতাংশ বিদ্যুৎ কম সরবরাহ করছে। যখন যেমন বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে তার উপর ভিত্তি করে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এর মাধ্যমে গ্রাহকের মাঝে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরা আঞ্চলিক হ্যাচারি মালিক সমিতির সভাপতি ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ বাবলা জানান, বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বিপর্যস্ত জনজীবন। মিল-কলকারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ নির্ভর সাতক্ষীরার ১৫ থেকে ২০টি বাঁগদা হ্যাচারি, ৪৯টি মৎস্য হ্যাচারি, ৯৫টি মৎস্য নার্সারি ও ১৯টি মৎস্য প্রদর্শনী খামার রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটে কারণে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলোর।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নাকাল সাতক্ষীরাবাসী

আপডেট : ০৮:০৭:২৩ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৩ জুলাই ২০২২
সাতক্ষীরায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটে নাকাল হয়ে পড়েছে জেলার অনন্ত ২২ লক্ষ মানুষ। সন্ধ্যার পর গ্রামাঅঞ্চল থেকে শুরু করে সাতক্ষীরা ভুতুড়ে শহরে পরিনত হচ্ছে।

জ্বালানি সাশ্রয়ে সারা দেশের মতো বিদ্যুৎ বিভ্রাটের সময়সূচি (রুটিন) অনুযায়ী সাতক্ষীরায় চলতে পারছে না বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রতিষ্ঠান ওজোপাটিকো (পিডিবি) এবং সাতক্ষীরা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি।

দুই ঘণ্টা লোডশেডিং দেয়ার কথা ছিলো। কিন্তু দিনে রাতে মিলিয়ে ১৫/১৬ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকে। আর বাকী ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ থাকছে না। এ কারণে প্রচন্ড গরমে মানুষের দুর্ভোগ সীমাহীন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে।

অতিমাত্রায় বিদ্যুৎ বিভ্রাটের কারণে জেলার শিল্প কলকারখানাগুলো প্রায় অচলাবস্থা। বরফ কলগুলোতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। যার প্রভাব পড়ছে চিংড়ি ও মৎস্য প্রক্রিয়াজাতকরণ কারখানায়। জেলার বিদ্যুৎ নির্ভর হিমাগারগুলোর একই অবস্থা। যার ক্ষতিকর প্রভাব পড়ছে কৃষি জাত পণ্য সংরক্ষণে।

বিদ্যুৎ না থাকায় এসএসসি ও দাখিল পরিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে হারিকেন ও মোমবাতি জালিয়ে লেখাপড়া করছে।

এদিকে পিডিবি ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি বলছে জাতীয় গ্রীডে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ঘাটতি বেড়ে গেছে। চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ পাওয়ায় রুটিনের বাইরে বিদ্যুৎ বিভ্রাটে করতে বাধ্য হচ্ছে প্রতিষ্ঠান দুটি।

সাতক্ষীরা (ওজোপাটিকো) পিডিবি’র সহকারি প্রকৌশলী মতিউর রহমান জানান, সাতক্ষীরা শহরে পিডিবি’র ৪৯ হাজার বিদ্যুতের গ্রাহক রয়েছে। চাহিদা রয়েছে দৈনিক ১৮ থেকে ১৯ মেগাওয়াট। আমরা পাচ্ছি ১৩ থেকে ১৪ মেগাওয়াট।

তিনি বলেন, সুষ্ঠু বিদ্যুৎ ব্যবস্থাপনার জন্য শহরকে ৭টি ফিডারে ভাগ করা হয়েছে। সময়সূচিতে প্রতি ফিডারে ২ ঘন্টা করে বিদ্যুৎ বিভ্রাট দেয়ার কথা বলা হয়েছে।

পিডিবি’র বিদ্যুৎ গ্রাহকরা জানান, ভোর, সকাল, দুপুর, সন্ধ্যা ও রাতে সমান তালে বিদ্যুৎ লোডশেডিং থাকছে। কখনো কখনো দিনে ও রাতে মিলে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ থাকছে। আর পল্লী বিদ্যুতের গ্রাহকরা বলছে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা বিদ্যুৎ বন্ধ পাচ্ছে তারা।

সাতক্ষীরার পাটকেলঘাটা পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জেনারেল ম্যানেজার জিয়াউর রহমান জানান, জেলায় পল্লী বিদ্যুতের ৫ লাখ ৯৫ হাজার গ্রাহক রয়েছে। চাহিদা রয়েছে দৈনিক ১২২ মেগাওয়াট। জাতীয় গ্রিড থেকে প্রতিদিন ১৫ শতাংশ বিদ্যুৎ কম সরবরাহ করছে। যখন যেমন বিদ্যুৎ সরবরাহ করছে তার উপর ভিত্তি করে বিদ্যুৎ বিভ্রাট এর মাধ্যমে গ্রাহকের মাঝে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে।

সাতক্ষীরা আঞ্চলিক হ্যাচারি মালিক সমিতির সভাপতি ডাক্তার আবুল কালাম আজাদ বাবলা জানান, বিদ্যুৎ বিভ্রাটে বিপর্যস্ত জনজীবন। মিল-কলকারখানার উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। বিদ্যুৎ নির্ভর সাতক্ষীরার ১৫ থেকে ২০টি বাঁগদা হ্যাচারি, ৪৯টি মৎস্য হ্যাচারি, ৯৫টি মৎস্য নার্সারি ও ১৯টি মৎস্য প্রদর্শনী খামার রয়েছে। বিদ্যুৎ বিভ্রাটে কারণে প্রতিদিন কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হচ্ছে প্রতিষ্ঠানগুলোর।