ঢাকা ১২:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

লরি ধূলিস্যাত করে দিল মিশু রাণী দেবীর ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন

এম আনোয়ার হোসেন, মিরসরাই
  • আপডেট : ০৪:৩৪:০৫ অপরাহ্ন, সোমাবার, ৮ অগাস্ট ২০২২
  • / 374

‘আমার মেয়ে কই। তোমরা আমার মেয়েকে এনে দাও। আমার অনেক আদরের বড় মেয়েকে তোমরা এনে দাও। আমি আর কিছু চাই না। আমার কত আশা ছিল আমার মেয়েকে নিয়ে।’ এভাবে মেয়ের লাশের পাশে বসে আহাজারি করছেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই উপজেলার নিজামপুর সরকারি কলেজের সামনে লরি চাপায় নিহত নিজামপুর সরকারি কলেজ ছাত্রী মিশু রাণী দেবীর পিতা সূর্য্য মোহন দেবনাথ।

সূর্য্য মোহন বলেন, ‘আমার মেয়ে ব্যাংকার হতে চেয়েছিল আর আমি চেয়েছিলাম বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ে সে শিক্ষক হবে। কিন্তু আমার সেই আশা আর কোনদিনও পূরণ হবে না।’ সূর্য্য মোহন দেবনাথ পেশায় কৃষক। নিত্যদিন জীবনের সাথে যুদ্ধ করে ৩ ছেলেমেয়েকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। বড় মেয়েকে নিয়ে দেখা তার সেই স্বপ্ন দ্রুতগামী লরি চাপায় ধূলিস্যাত হয়ে যায়।

‘আমার মেয়েকে এনে দাও, আমার মেয়েকে এনে দাও। আমি আমার মেয়েকে কোথায় পাবো। আমার মেয়ে যেখানে আমাকেও সেখানে নিয়ে যাও।’-বাড়ির উঠোনে মেয়ের লাশের পাশে বসে এভাবে বারবার বিলাপ করছেন কলেজ ছাত্রী মিশু রাণী দেবীর মা মীরা রাণী দেবী।

জানা যায়, মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকাল ৭ টার দিকে প্রাইভেট পড়তে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পারাপারের সময় ঢাকামুখী লরি চাপায় মারা যায় নিজামপুর সরকারি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ছাত্রী মিশু রাণী দেবী (১৮)। সে উপজেলার ১২ নং খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মির্জাপড়া গ্রামের শচীন্দ্র কুমার নাথ বাড়ীর সূর্য্য মোহন দেবনাথের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সবার বড়।

বিকালে নিজ গ্রামে মিশুর সৎকার সম্পন্ন করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ লরিসহ চালক ও চালকের সহকারিকে আটক করেছে। আটককৃত চালকের নাম শাহজাহান শেখ (৪৯)। সে ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের মাতুয়াইল যাত্রাবাড়ি এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র। চালকের সহকারি লিমন ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানার দক্ষিন তারাঘনিয়া এলাকার শহিদ হাওলাদারের পুত্র।

নিহত মিশুর সহপাঠী তিশা সরকার ও মাহবুবা ইসরাত জানান, প্রতিদিন আমরা একসাথে নিজামপুরে বাবলু স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে যাই। কিন্তু আজকে আমাদের রেখে মিশু সবার আগে চলে যায়। তবে তার এই যাওয়া যে শেষ যাওয়া হবে তা আমরা কোনভাবে বিশ্বাস করতে পারছি না। আমরা পরে নিজামপুর গিয়ে দেখি মহাসড়কের উপর মিশুর রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে আছে। প্রথমে নিজেদের স্থির রাখতে পারিনি। এরপর একটি সিএনজি অটোরিক্সাযোগে তার লাশ বাড়ি নিয়ে আসি।

নিজামপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম আরিয়ান জানান, মিশু রানী দেবীর মতো যাতে করে আর কোনো শিক্ষার্থীর প্রাণ অকালে না ঝরে সেজন্য কলেজ কতৃপক্ষকে নিজামপুর সরকারি কলেজ থেকে শুরু করে সরকারহাট প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত মহাসড়কের ডিভাইডারে লোহার নেট দেওয়ার দাবী জানিয়েছি নিজামপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে।

সেইলক্ষ্যে একটি বৈঠকও হয়েছে। আমরা পূর্বেও জনসাধারণ এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে মাইকিং এবং বুঝিয়ে ফুটওভারব্রীজ ব্যবহারের জন্য সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করি, তবে কোন সুফল পাইনি। কেউ কেউ ব্যবহার করতে চাইলেও অন্যদের দেখাদেখি তারাও ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার হয়।

তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে মঙ্গলবার বিকেলে মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন, হাইওয়ে পুলিশ, মিরসরাই থানা পুলিশ, কলেজ প্রশাসন, ১৫ নং ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল হাসান টিপু, সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল কবির ফিরোজ, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আশরাফুল কামাল মিঠু, ইউপি সদস্যসহ ছাত্রনেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে নিজামপুর সরকারি কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে আমাদের আশ্বস্থ করছেন খুব শীঘ্রই দুর্ঘটনারোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরিয়ান আরো জানান, নিজামপুর সরকারি কলেজ এলাকায় একটি ফুটওভারব্রীজ রয়েছে সেটি ব্যবহার করে না স্থানীয়রা। সবাই ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পার হয় প্রতিনিয়ত। নিজামপুর সরকারি কলেজ, সরকারহাট নজর আলী রুপজান উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারহাট প্রাথমিক বিদ্যালয় সবমিলিয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু তারা মহাসড়ক পার হতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। যদি মহাসড়কের ডিভাইডারের ফাঁকা জায়গাগুলো বন্ধ করে লোহার নেট দেওয়া যায় তবে ফুটওভারব্রীজ ব্যবহার হবে এবং ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার বন্ধ করা সম্ভব হবে।

নিজামপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোহাম্মদ কোহিনুর জানান, মঙ্গলবার সকালে নিজামপুর সরকারি কলেজ বাজারে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী লরির ধাক্কায় কলেজ ছাত্রী মিশু রাণী দেবী ঘটনাস্থলে মারা যায়। আমরা লরির চালক ও চালকের সহকারিকে আটক করতে সক্ষম হই।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নিজামপুর সরকারি কলেজ অংশের দায়িত্বে থাকা কুমিরা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্ল্যাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিজামপুর কলেজের সামনে লরি চাপায় কলেজ ছাত্রী নিহতের ঘটনায় আমরা লরিসহ চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করেছি। তবে আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে পরিবারের লোকজন লাশ নিয়ে গেছে। এই ঘটনায় হাইওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোজাম্মেল বাদী হয়ে লরি চালক শাহজাহান শেখ ও চালকের সহকারী লিমনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

লরি ধূলিস্যাত করে দিল মিশু রাণী দেবীর ব্যাংকার হওয়ার স্বপ্ন

আপডেট : ০৪:৩৪:০৫ অপরাহ্ন, সোমাবার, ৮ অগাস্ট ২০২২

‘আমার মেয়ে কই। তোমরা আমার মেয়েকে এনে দাও। আমার অনেক আদরের বড় মেয়েকে তোমরা এনে দাও। আমি আর কিছু চাই না। আমার কত আশা ছিল আমার মেয়েকে নিয়ে।’ এভাবে মেয়ের লাশের পাশে বসে আহাজারি করছেন ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের মিরসরাই উপজেলার নিজামপুর সরকারি কলেজের সামনে লরি চাপায় নিহত নিজামপুর সরকারি কলেজ ছাত্রী মিশু রাণী দেবীর পিতা সূর্য্য মোহন দেবনাথ।

সূর্য্য মোহন বলেন, ‘আমার মেয়ে ব্যাংকার হতে চেয়েছিল আর আমি চেয়েছিলাম বিশ^বিদ্যালয়ে পড়ে সে শিক্ষক হবে। কিন্তু আমার সেই আশা আর কোনদিনও পূরণ হবে না।’ সূর্য্য মোহন দেবনাথ পেশায় কৃষক। নিত্যদিন জীবনের সাথে যুদ্ধ করে ৩ ছেলেমেয়েকে পড়াশোনা করাচ্ছেন। বড় মেয়েকে নিয়ে দেখা তার সেই স্বপ্ন দ্রুতগামী লরি চাপায় ধূলিস্যাত হয়ে যায়।

‘আমার মেয়েকে এনে দাও, আমার মেয়েকে এনে দাও। আমি আমার মেয়েকে কোথায় পাবো। আমার মেয়ে যেখানে আমাকেও সেখানে নিয়ে যাও।’-বাড়ির উঠোনে মেয়ের লাশের পাশে বসে এভাবে বারবার বিলাপ করছেন কলেজ ছাত্রী মিশু রাণী দেবীর মা মীরা রাণী দেবী।

জানা যায়, মঙ্গলবার (২ আগস্ট) সকাল ৭ টার দিকে প্রাইভেট পড়তে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক পারাপারের সময় ঢাকামুখী লরি চাপায় মারা যায় নিজামপুর সরকারি কলেজের এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের ব্যবসায় শিক্ষা শাখার ছাত্রী মিশু রাণী দেবী (১৮)। সে উপজেলার ১২ নং খৈয়াছড়া ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের মির্জাপড়া গ্রামের শচীন্দ্র কুমার নাথ বাড়ীর সূর্য্য মোহন দেবনাথের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে সবার বড়।

বিকালে নিজ গ্রামে মিশুর সৎকার সম্পন্ন করা হয়। এই ঘটনায় পুলিশ লরিসহ চালক ও চালকের সহকারিকে আটক করেছে। আটককৃত চালকের নাম শাহজাহান শেখ (৪৯)। সে ঢাকা দক্ষিন সিটি করপোরেশনের মাতুয়াইল যাত্রাবাড়ি এলাকার মৃত নুরুল ইসলামের পুত্র। চালকের সহকারি লিমন ঝালকাঠি জেলার রাজাপুর থানার দক্ষিন তারাঘনিয়া এলাকার শহিদ হাওলাদারের পুত্র।

নিহত মিশুর সহপাঠী তিশা সরকার ও মাহবুবা ইসরাত জানান, প্রতিদিন আমরা একসাথে নিজামপুরে বাবলু স্যারের কাছে প্রাইভেট পড়তে যাই। কিন্তু আজকে আমাদের রেখে মিশু সবার আগে চলে যায়। তবে তার এই যাওয়া যে শেষ যাওয়া হবে তা আমরা কোনভাবে বিশ্বাস করতে পারছি না। আমরা পরে নিজামপুর গিয়ে দেখি মহাসড়কের উপর মিশুর রক্তাক্ত নিথর দেহ পড়ে আছে। প্রথমে নিজেদের স্থির রাখতে পারিনি। এরপর একটি সিএনজি অটোরিক্সাযোগে তার লাশ বাড়ি নিয়ে আসি।

নিজামপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তাজুল ইসলাম আরিয়ান জানান, মিশু রানী দেবীর মতো যাতে করে আর কোনো শিক্ষার্থীর প্রাণ অকালে না ঝরে সেজন্য কলেজ কতৃপক্ষকে নিজামপুর সরকারি কলেজ থেকে শুরু করে সরকারহাট প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত মহাসড়কের ডিভাইডারে লোহার নেট দেওয়ার দাবী জানিয়েছি নিজামপুর সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের পক্ষ থেকে।

সেইলক্ষ্যে একটি বৈঠকও হয়েছে। আমরা পূর্বেও জনসাধারণ এবং শিক্ষার্থীদের মাঝে মাইকিং এবং বুঝিয়ে ফুটওভারব্রীজ ব্যবহারের জন্য সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করি, তবে কোন সুফল পাইনি। কেউ কেউ ব্যবহার করতে চাইলেও অন্যদের দেখাদেখি তারাও ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার হয়।

তিনি আরো জানান, ইতিমধ্যে মঙ্গলবার বিকেলে মিরসরাই উপজেলা প্রশাসন, হাইওয়ে পুলিশ, মিরসরাই থানা পুলিশ, কলেজ প্রশাসন, ১৫ নং ওয়াহেদপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ফরিদুল হাসান টিপু, সম্পাদক ও ইউপি চেয়ারম্যান ফজলুল কবির ফিরোজ, উপজেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি আশরাফুল কামাল মিঠু, ইউপি সদস্যসহ ছাত্রনেতৃবৃন্দের উপস্থিতিতে নিজামপুর সরকারি কলেজ অধ্যক্ষের কক্ষে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বৈঠকে আমাদের আশ্বস্থ করছেন খুব শীঘ্রই দুর্ঘটনারোধে বিশেষ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

আরিয়ান আরো জানান, নিজামপুর সরকারি কলেজ এলাকায় একটি ফুটওভারব্রীজ রয়েছে সেটি ব্যবহার করে না স্থানীয়রা। সবাই ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পার হয় প্রতিনিয়ত। নিজামপুর সরকারি কলেজ, সরকারহাট নজর আলী রুপজান উচ্চ বিদ্যালয়, সরকারহাট প্রাথমিক বিদ্যালয় সবমিলিয়ে হাজার হাজার শিক্ষার্থী রয়েছে। কিন্তু তারা মহাসড়ক পার হতে গিয়ে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হতে হয়। যদি মহাসড়কের ডিভাইডারের ফাঁকা জায়গাগুলো বন্ধ করে লোহার নেট দেওয়া যায় তবে ফুটওভারব্রীজ ব্যবহার হবে এবং ঝুঁকি নিয়ে মহাসড়ক পারাপার বন্ধ করা সম্ভব হবে।

নিজামপুর পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ মোহাম্মদ কোহিনুর জানান, মঙ্গলবার সকালে নিজামপুর সরকারি কলেজ বাজারে মহাসড়ক পার হওয়ার সময় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী লরির ধাক্কায় কলেজ ছাত্রী মিশু রাণী দেবী ঘটনাস্থলে মারা যায়। আমরা লরির চালক ও চালকের সহকারিকে আটক করতে সক্ষম হই।

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নিজামপুর সরকারি কলেজ অংশের দায়িত্বে থাকা কুমিরা হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আব্দুল্ল্যাহ বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, নিজামপুর কলেজের সামনে লরি চাপায় কলেজ ছাত্রী নিহতের ঘটনায় আমরা লরিসহ চালক ও চালকের সহকারীকে আটক করেছি। তবে আমরা ঘটনাস্থলে যাওয়ার আগে পরিবারের লোকজন লাশ নিয়ে গেছে। এই ঘটনায় হাইওয়ে পুলিশের উপ-পরিদর্শক মোজাম্মেল বাদী হয়ে লরি চালক শাহজাহান শেখ ও চালকের সহকারী লিমনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছেন।