ঢাকা ১২:৫৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাবনায় রিকশাচালক মামুন হত্যা: তিন আসামি গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার

পাবনা প্রতিনিধি
  • আপডেট : ০৪:৩৬:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৩
  • / 108
পাবনার ঈশ্বরদীতে রিকাশাচালক মামুনকে গুলি করে হত্যা মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আনোয়ার উদ্দিন, ইব্রাহিম হোসেন ও সাকিবুর রহমান।

আনোয়ার হোসেন ঈশ্বরদী উপজেলার শৈলপাড়া (বার কোয়ার্টার) মহল্লার মৃত নুর উদ্দিনের ছেলে, ইব্রাহিম একই মহল্লার কাঠমিস্ত্রি আকরাম হোসেনের ছেলে আর সাকিবুর ইসলাম সাকিব একই মহল্লার শহিদুল ইসলামের ছেলে। শনিবার দুপুরে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয় চত্বরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী।

পুলিশ সুপার বলেন, ৪ জানুয়ারি ঈশ্বরদীর পশ্চিম টেংরি এলাকায় ইঞ্জিনচালিত ভটভটি ও পিকআপের সংঘর্ষে পিকআপের সামনের গ্লাস ভেঙে যায়। তার ক্ষতিপূরণ আদায় করা নিয়ে স্থানীয়দের সাথে আনোয়ারের শ্যালক সুজনের কথা কাটাকাটি হয়। সুজন ফোনে তার দুলাভাই আনোয়ার উদ্দিনকে জানালে তিনি তার লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় আনোয়ারের গুলিতে রিকশাচালক মামুন মারা যান।

গত ৫ জানুয়ারি নিহত মামুনের মা লিপি আক্তার বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ঈশ্বরদী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি কামাল হোসেন এবং তার ভাই আনোয়ার হোসেনসহ চারজনকে আসামি করা হয়। এছাড়া ৩ থেকে ৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার বলেন, মামলা দায়েরের পর তিনদিনের মধ্যে ঈশ্বরদীর আরামবাড়িয়া থেকে আনোয়ার, পাকশী থেকে ইব্রাহিম ও রাজশাহীর চারঘাট থেকে সাকিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি। গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ারের বিরুদ্ধে ঈশ্বরদী থানায় চুরি, মাদক ও মারামারির চারটি মামলা রয়েছে। এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত ইব্রাহিম এ হত্যাকাণ্ডে নিজের দোষ স্বীকার করে আদালকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, বুধবার (৪ জানুয়ারি) রাতে ঈশ্বরদী ইপিজেড সড়কে একটি ভটভটি ও লেগুনা গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। লেগুনার গাড়িচালক জরিমানা দাবি করেন ভটভটি চালকের কাছে। এ নিয়ে দুই গাড়ির চালক ও যাত্রীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। এর কিছুক্ষণ পর ১নং ওয়ার্ড পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন ও তার ভাই আনোয়ার হোসেন সহযোগীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভটভটি চালকের কাছ থেকে জরিমানা নিতে বাধা দেয়া হলো কেন এমন প্রশ্ন তুলে স্থানীয়দের ওপর চড়াও হন। তাদের মধ্যে হাতাহাতির এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেন তার কোমরে থাকা পিস্তল বের করে মামুন ও রকিকে গুলি করেন। এছাড়া সঙ্গে থাকা আনোয়ারের সঙ্গীরা সুমনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিকশাচালক মামুনকে মৃত ঘোষণা করেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পাবনায় রিকশাচালক মামুন হত্যা: তিন আসামি গ্রেপ্তার, অস্ত্র উদ্ধার

আপডেট : ০৪:৩৬:২৭ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৩
পাবনার ঈশ্বরদীতে রিকাশাচালক মামুনকে গুলি করে হত্যা মামলার তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার করা হয়েছে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত একটি পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন আনোয়ার উদ্দিন, ইব্রাহিম হোসেন ও সাকিবুর রহমান।

আনোয়ার হোসেন ঈশ্বরদী উপজেলার শৈলপাড়া (বার কোয়ার্টার) মহল্লার মৃত নুর উদ্দিনের ছেলে, ইব্রাহিম একই মহল্লার কাঠমিস্ত্রি আকরাম হোসেনের ছেলে আর সাকিবুর ইসলাম সাকিব একই মহল্লার শহিদুল ইসলামের ছেলে। শনিবার দুপুরে পাবনা পুলিশ সুপার কার্যালয় চত্বরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান পুলিশ সুপার আকবর আলী মুন্সী।

পুলিশ সুপার বলেন, ৪ জানুয়ারি ঈশ্বরদীর পশ্চিম টেংরি এলাকায় ইঞ্জিনচালিত ভটভটি ও পিকআপের সংঘর্ষে পিকআপের সামনের গ্লাস ভেঙে যায়। তার ক্ষতিপূরণ আদায় করা নিয়ে স্থানীয়দের সাথে আনোয়ারের শ্যালক সুজনের কথা কাটাকাটি হয়। সুজন ফোনে তার দুলাভাই আনোয়ার উদ্দিনকে জানালে তিনি তার লোকজন নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়েন। এ সময় আনোয়ারের গুলিতে রিকশাচালক মামুন মারা যান।

গত ৫ জানুয়ারি নিহত মামুনের মা লিপি আক্তার বাদি হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলায় ঈশ্বরদী পৌরসভার ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও ওয়ার্ড যুবলীগ সভাপতি কামাল হোসেন এবং তার ভাই আনোয়ার হোসেনসহ চারজনকে আসামি করা হয়। এছাড়া ৩ থেকে ৪ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিকে আসামি করা হয়েছে।

পুলিশ সুপার বলেন, মামলা দায়েরের পর তিনদিনের মধ্যে ঈশ্বরদীর আরামবাড়িয়া থেকে আনোয়ার, পাকশী থেকে ইব্রাহিম ও রাজশাহীর চারঘাট থেকে সাকিবকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। উদ্ধার করা হয় হত্যায় ব্যবহৃত পিস্তল ও তিন রাউন্ড গুলি। গ্রেপ্তারকৃত আনোয়ারের বিরুদ্ধে ঈশ্বরদী থানায় চুরি, মাদক ও মারামারির চারটি মামলা রয়েছে। এছাড়া গ্রেপ্তারকৃত ইব্রাহিম এ হত্যাকাণ্ডে নিজের দোষ স্বীকার করে আদালকে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

উল্লেখ্য, বুধবার (৪ জানুয়ারি) রাতে ঈশ্বরদী ইপিজেড সড়কে একটি ভটভটি ও লেগুনা গাড়ির মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে। লেগুনার গাড়িচালক জরিমানা দাবি করেন ভটভটি চালকের কাছে। এ নিয়ে দুই গাড়ির চালক ও যাত্রীদের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে স্থানীয়রা বিষয়টি মীমাংসা করে দেন। এর কিছুক্ষণ পর ১নং ওয়ার্ড পৌর কাউন্সিলর ও যুবলীগ নেতা কামাল হোসেন ও তার ভাই আনোয়ার হোসেন সহযোগীদের নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে ভটভটি চালকের কাছ থেকে জরিমানা নিতে বাধা দেয়া হলো কেন এমন প্রশ্ন তুলে স্থানীয়দের ওপর চড়াও হন। তাদের মধ্যে হাতাহাতির এক পর্যায়ে আনোয়ার হোসেন তার কোমরে থাকা পিস্তল বের করে মামুন ও রকিকে গুলি করেন। এছাড়া সঙ্গে থাকা আনোয়ারের সঙ্গীরা সুমনকে ছুরিকাঘাত করে পালিয়ে যান। স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে ঈশ্বরদী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রিকশাচালক মামুনকে মৃত ঘোষণা করেন।