ঢাকা ০৫:১৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ভাঙনে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় প্রাথমিক বিদ্যালয়

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০১:৩০:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 80

চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের ছবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামে এ ভাঙন শুরু হয়েছে।

গত আগস্টের মাঝামাঝিতে ভাঙন দেখা দিলেও রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে ভাঙনের তীব্রতা আরো বেড়ে যায়। এক বিকেলেই পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে যায় অন্তত ১৫ শতাংশ ফসলি জমি। ভাঙনের ফলে ঝুঁকিতে পড়ে যায় ছবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৭০ সালে স্থাপিত বিদ্যালয়টি ১৯৯৭ সালে ভাঙনের মুখে পড়ে। তখন ওই জায়গা থেকে অন্তত তিন কিলোমিটার দূরে এসে বর্তমান জায়গায় ২০ শতাংশ জমির ওপর দুটি টিনের ঘরে স্কুলটির কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বিদ্যালয়ের সেই দুটি ঘরও ভাঙনের ঝুঁকির মধ্যে থাকায় চরাঞ্চলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা রয়েছেন শঙ্কায়।

ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, স্কুলটি বাড়ির পাঁশে হওয়ায় তাদের পড়াশোনা ভালোই চলতো। নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেলে দূরের কোনো স্কুলে গিয়ে তাদের পড়াশোনা কতটুকু হবে সেই ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা শঙ্কিত।

ছবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা এক শিক্ষার্থীর বাবা রাসেল বলেন, আমার ছেলে এই স্কুলে লেখাপড়া করে। স্কুলটি ভাইঙ্গা গেলে ওর পড়ালেখা বন্ধ হইয়া যাবে।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, গত আগস্ট মাস থেকে ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। তবে গত রোববারের ভাঙন ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। এখনই এ ভাঙন রোধ করা না গেলে ১৫০ জন শিক্ষার্থী ও চারজন শিক্ষক নিয়ে আমরা এক অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে যাব।

তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বিদ্যালয়টি। ভাঙনরোধে ফেলা জিও ব্যাগের প্রায় সবই গত শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না নিলে বিদ্যালয়টি রক্ষা করা সম্ভব নাও হতে পারে বলে জানান এই শিক্ষক।

ওই এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত আগস্টে ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দিলে বালুভর্তি অন্তত পাঁচ সহস্রাধিক জিও ব্যাগ ফেলা হয়। কিন্তু ১৯ সেপ্টেম্বরের ভাঙনে ওই বালির বস্তাগুলো সব বিলীন হয়ে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসী আরও জানায়, ইতিমধ্যে ওই স্কুলের কাছে পদ্মা নদীর পাড়ে পাঁচ মিটার বড় একটি ফাটল ধরেছে। ওই মাটিও ধসে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল মো. বাহাউদ্দিন বলেন, গত আগস্টে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুভর্তি বস্তা ফেলেছিল। আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা জানান, নদী ভাঙনের খবর শুনে তিনি শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে চরভদ্রাসনের নদীভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ইতোমধ্যে ছবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গীতে ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

ভাঙনে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় প্রাথমিক বিদ্যালয়

আপডেট : ০১:৩০:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২১

চরভদ্রাসন উপজেলার চর হরিরামপুর ইউনিয়নের ছবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামে এ ভাঙন শুরু হয়েছে।

গত আগস্টের মাঝামাঝিতে ভাঙন দেখা দিলেও রোববার (১৯ সেপ্টেম্বর) বিকেল থেকে ভাঙনের তীব্রতা আরো বেড়ে যায়। এক বিকেলেই পদ্মা নদীতে বিলীন হয়ে যায় অন্তত ১৫ শতাংশ ফসলি জমি। ভাঙনের ফলে ঝুঁকিতে পড়ে যায় ছবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি।

স্থানীয়রা জানান, ১৯৭০ সালে স্থাপিত বিদ্যালয়টি ১৯৯৭ সালে ভাঙনের মুখে পড়ে। তখন ওই জায়গা থেকে অন্তত তিন কিলোমিটার দূরে এসে বর্তমান জায়গায় ২০ শতাংশ জমির ওপর দুটি টিনের ঘরে স্কুলটির কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। বিদ্যালয়ের সেই দুটি ঘরও ভাঙনের ঝুঁকির মধ্যে থাকায় চরাঞ্চলের শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা রয়েছেন শঙ্কায়।

ওই বিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, স্কুলটি বাড়ির পাঁশে হওয়ায় তাদের পড়াশোনা ভালোই চলতো। নদী ভাঙনে বিলীন হয়ে গেলে দূরের কোনো স্কুলে গিয়ে তাদের পড়াশোনা কতটুকু হবে সেই ভবিষ্যৎ নিয়ে তারা শঙ্কিত।

ছবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গী গ্রামের বাসিন্দা এক শিক্ষার্থীর বাবা রাসেল বলেন, আমার ছেলে এই স্কুলে লেখাপড়া করে। স্কুলটি ভাইঙ্গা গেলে ওর পড়ালেখা বন্ধ হইয়া যাবে।

ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেন, গত আগস্ট মাস থেকে ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দেয়। তবে গত রোববারের ভাঙন ছিল সবচেয়ে ভয়াবহ। এখনই এ ভাঙন রোধ করা না গেলে ১৫০ জন শিক্ষার্থী ও চারজন শিক্ষক নিয়ে আমরা এক অনিশ্চয়তার মুখে পড়ে যাব।

তিনি আরও জানান, দীর্ঘদিন ধরেই ভাঙন ঝুঁকিতে রয়েছে বিদ্যালয়টি। ভাঙনরোধে ফেলা জিও ব্যাগের প্রায় সবই গত শুক্রবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। স্থায়ী কোনো ব্যবস্থা না নিলে বিদ্যালয়টি রক্ষা করা সম্ভব নাও হতে পারে বলে জানান এই শিক্ষক।

ওই এলাকার বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গত আগস্টে ওই এলাকায় ভাঙন দেখা দিলে বালুভর্তি অন্তত পাঁচ সহস্রাধিক জিও ব্যাগ ফেলা হয়। কিন্তু ১৯ সেপ্টেম্বরের ভাঙনে ওই বালির বস্তাগুলো সব বিলীন হয়ে এই অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসী আরও জানায়, ইতিমধ্যে ওই স্কুলের কাছে পদ্মা নদীর পাড়ে পাঁচ মিটার বড় একটি ফাটল ধরেছে। ওই মাটিও ধসে পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।

উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল মো. বাহাউদ্দিন বলেন, গত আগস্টে ভাঙন ঠেকাতে পানি উন্নয়ন বোর্ড বালুভর্তি বস্তা ফেলেছিল। আবার ভাঙন শুরু হয়েছে। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তার মাধ্যমে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে জানানো হয়েছে।

ফরিদপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পার্থ প্রতীম সাহা জানান, নদী ভাঙনের খবর শুনে তিনি শনিবার (১৮ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টার দিকে চরভদ্রাসনের নদীভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। ইতোমধ্যে ছবুল্লা শিকদারের ডাঙ্গীতে ভাঙন রোধে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের বিষয়ে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।