ঢাকা ১২:৫৯ অপরাহ্ন, বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় ৭৭ জন আটক

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০১:৩২:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১
  • / 146
চট্টগ্রামের জেএমসেন হলের পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ৭৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার দিবাগত রাতে নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে তাদেরকে আটক করা হয়। শনিবার এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত (দুপুর আড়াইটা) আটক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চৌধুরী রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘গতকাল বিকেল থেকে অদ্যাবদি অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ৭৭ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত ব্যক্তিদের যাচাই-বাচাই চলছে। তাদের আদালতে পাঠানো হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জেএমসেন হলের পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা ও বাধা দেয়ার অপরাধের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। গতকালের হামলার ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে অভিযুক্তদের আটক করা হচ্ছে।’

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) বিজয় বসাক বলেন, ‘জেএমসেন হলে হামলার ঘটনায় সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ৭৭ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযান চলমান রয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল বলেন, গতকাল সরকারি নির্দেশনা মেনে নামাজের পর বেলা তিনটা থেকে পূজামণ্ডপ থেকে বিসর্জনের জন্য বের হওয়ার প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু বাইরে থেকে ঢিল ছুঁড়ে হামলার চেষ্টা চালানো হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ (শনিবার) বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করবো।

উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ শেষে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ গেটে কিছু মুসল্লি কুমিল্লাকাণ্ডের প্রতিবাদে সমাবেশ করে। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে জেএমসেন হলের দিকে এগিয়ে যায়। মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের বেষ্টনী দেয়া থাকলেও তারা তা ভেঙে এগিয়ে যেতে থাকে। জেএমসেন হল প্রাঙ্গণের প্রধান ফটক আগে থেকে বন্ধ থাকায় তারা গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় তারা ভেতরে ঢিল ছোঁড়ে এবং পূজার জন্য সড়কে এবং আশপাশের দেয়ালে টাঙানো বিভিন্ন ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে।

জেএমসেন হলের পূজামণ্ডপে তখন বিভিন্ন বয়সী নারীরা পান, তেল ও সিঁদুর দিয়ে দেবী বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বাইরে হট্টগোল শুরু হলে তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা এ সময় টিয়ারশেল ছুঁড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। হামলাকারীরা এ সময় পালিয়ে যায়।

পরে জেএমসেন হলে হামলার পর পূজা কমিটির নেতাকর্মীরা সড়কে এসে অবস্থান নিলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ৩টার দিকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত জেএমসেন হলে মোড়ে এসে পূজা উদযাপন পরিষদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এ সময় শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের হরতালের ডাক দেন। যদিও তা প্রশাসনের আশ্বাসে স্থগিত করার কথা জানায় পূজা উদযাপন পরিষদ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

চট্টগ্রামে পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় ৭৭ জন আটক

আপডেট : ০১:৩২:১২ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৬ অক্টোবর ২০২১
চট্টগ্রামের জেএমসেন হলের পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ ঘটনায় ৭৭ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

শুক্রবার দিবাগত রাতে নগরের বিভিন্ন স্থান থেকে ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে তাদেরকে আটক করা হয়। শনিবার এ রির্পোট লেখা পর্যন্ত (দুপুর আড়াইটা) আটক অভিযান অব্যাহত রয়েছে।

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কোতোয়ালী থানার পরিদর্শক (তদন্ত) চৌধুরী রেজাউল করিম। তিনি বলেন, ‘গতকাল বিকেল থেকে অদ্যাবদি অভিযান চালিয়ে এ পর্যন্ত ৭৭ জনকে আটক করা হয়েছে। আটককৃত ব্যক্তিদের যাচাই-বাচাই চলছে। তাদের আদালতে পাঠানো হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘জেএমসেন হলের পূজামণ্ডপে হামলার ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলা ও বাধা দেয়ার অপরাধের ঘটনায় তাদের বিরুদ্ধে মামলা দেয়া হয়েছে। গতকালের হামলার ঘটনায় ভিডিও ফুটেজ দেখে দেখে অভিযুক্তদের আটক করা হচ্ছে।’

নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) বিজয় বসাক বলেন, ‘জেএমসেন হলে হামলার ঘটনায় সন্ধ্যা পর্যন্ত অন্তত ৭৭ জনকে আটক করা হয়েছে। অভিযান চলমান রয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিল্লোল সেন উজ্জ্বল বলেন, গতকাল সরকারি নির্দেশনা মেনে নামাজের পর বেলা তিনটা থেকে পূজামণ্ডপ থেকে বিসর্জনের জন্য বের হওয়ার প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু বাইরে থেকে ঢিল ছুঁড়ে হামলার চেষ্টা চালানো হয়। এ ঘটনার প্রতিবাদে আজ (শনিবার) বিকাল ৪টায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে প্রতিবাদ সমাবেশ করবো।

উল্লেখ্য, শুক্রবার দুপুরে জুমার নামাজ শেষে আন্দরকিল্লা শাহী জামে মসজিদ গেটে কিছু মুসল্লি কুমিল্লাকাণ্ডের প্রতিবাদে সমাবেশ করে। সেখান থেকে তারা মিছিল নিয়ে জেএমসেন হলের দিকে এগিয়ে যায়। মোড়ে ট্রাফিক পুলিশের বেষ্টনী দেয়া থাকলেও তারা তা ভেঙে এগিয়ে যেতে থাকে। জেএমসেন হল প্রাঙ্গণের প্রধান ফটক আগে থেকে বন্ধ থাকায় তারা গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় তারা ভেতরে ঢিল ছোঁড়ে এবং পূজার জন্য সড়কে এবং আশপাশের দেয়ালে টাঙানো বিভিন্ন ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে।

জেএমসেন হলের পূজামণ্ডপে তখন বিভিন্ন বয়সী নারীরা পান, তেল ও সিঁদুর দিয়ে দেবী বিদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। বাইরে হট্টগোল শুরু হলে তাদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। সেখানে দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যরা এ সময় টিয়ারশেল ছুঁড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। হামলাকারীরা এ সময় পালিয়ে যায়।

পরে জেএমসেন হলে হামলার পর পূজা কমিটির নেতাকর্মীরা সড়কে এসে অবস্থান নিলে যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। বেলা ৩টার দিকে বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত জেএমসেন হলে মোড়ে এসে পূজা উদযাপন পরিষদের দাবির সাথে একাত্মতা প্রকাশ করেন। এ সময় শনিবার বেলা ১২টা পর্যন্ত চট্টগ্রামের হরতালের ডাক দেন। যদিও তা প্রশাসনের আশ্বাসে স্থগিত করার কথা জানায় পূজা উদযাপন পরিষদ।