গাড়ি চুরির পর যা করতো তারা
- আপডেট : ১২:৩৯:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ অগাস্ট ২০২১
- / 193
র্যাব বলছে, মুহূর্তেই যেকোনো গাড়ির লক (তালা) ভাঙা কিংবা বিকল্প চাবি ব্যবহার করে গাড়ি স্টার্ট (চালু) দিয়ে চুরি করে নিয়ে যেত এই চক্রটি। পরে গাড়ির রঙসহ নামও পরিবর্তন করতো তারা। কেনাবেচার সঙ্গে ধোলাইখালের ১৫ থেকে ২০টি দোকান জড়িত।
আটকরা হলেন- আজিম উদ্দিন (৩৮), রফিক উল্লাহ (২৬), সেলিম (৫০), কামরুল হাসান (২৬) ওমর ফারুক (৩৫)। এসময় তাদের কাছ থেকে মোবাইল, চাকু, দেশীয় অস্ত্র ও পিস্তলসহ বেশ কয়েকটি চোরাই গাড়ি উদ্ধার করা হয়েছে।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে কারওয়ান বাজার র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে বাহিনীটির আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এসব তথ্য জানান।
খন্দকার আল মঈন বলেন, চক্রটি দেশের বিভিন্ন জায়গায় গাড়ি চুরির সাথে জড়িত। তাদের দলে ১৫ থেকে ২০ জন সদস্য রয়েছে। গ্রেপ্তার আজিম উদ্দিন গাড়ি চোরাইচক্রের মূলহোতা। এর আগে গাড়ি চোর চক্রের বেশ কয়েকজনকে গ্রেপ্তারের পর তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় দেশের বিভিন্ন জায়গায় সক্রিয় এই চক্রটি।
তিনি বলেন, গত চার-পাঁচ বছর ধরে এই চক্রটি প্রায় ২০ থেকে ২৫টি জায়গায় গাড়ি চুরির ঘটনা ঘটিয়েছে। চক্রটি এখন পর্যন্ত প্রায় শতাধিক গাড়ি চুরি করেছে। চোরাই বিভিন্ন গাড়ি ও যন্ত্রাংশ রাজধানীর ধোলাইখালে বেশ কয়েকটি দোকানে বিক্রি করতো।
গাড়ি বিক্রি ছাড়াও বিভিন্ন স্থানে চুরি করে মালিকদের কাছ থেকেও প্রায় কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে চক্রটি। মূলত ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডে গাড়ি চুরি করে চক্রটি। এছাড়া কেরানীগঞ্জ ও গাজীপুরেও এই চক্রটি সক্রিয় বলেও জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।
র্যাব বলছে, চক্রের মূলহোতা আজিমের তিনজন ঘনিষ্ট রয়েছেন, যারা চোরাই গাড়ির নকল কাগজপত্র তৈরি, ভূয়া নম্বর প্লেট তৈরি, চোরাই গাড়ি মালিকদের সাথে দাবিকৃত অর্থ আদায়ের সমন্বয় করার দায়িত্ব পালন করেন। এই আজিমের বিরুদ্ধে দেশের বিভিন্ন জায়গায় মামলা রয়েছে।
গাড়ি চুরির কৌশল সম্পর্কে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিরে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, চক্রের একটি দল বিভিন্ন স্থানে গাড়ির তথ্য নিয়ে পার্কিং, গাড়ির মালিক সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ করে। এর পর গাড়ির মুভমেন্ট সম্পর্কেও তথ্য সংগ্রহ করে। চক্রটির একটি দল এসব তথ্য সংগ্রহের সাথে জড়িত। প্রথম দিকে তারা লক্ষ্যে থাকা পিকআপ-সিএনজির চালকদের তথ্য সংগ্রহ করে তাদের সঙ্গে সখ্যতা গড়ে তোলেন। সম্ভভ না হলে প্রলোভন দেখানো হয়। অনেক সময় তাদের চেতনানাশক ঔষধ খাইয়ে অজ্ঞান করে গাড়ি নিয়ে চম্পট দেয় চক্রটি।
গ্রেপ্তার গাজী মেকানিক হওয়ায় তিনি গাড়ির লক খোলা এবং গাড়ি স্টার্ট দিতে সক্ষম।
র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মঈন আরও জানায়, চক্রের অন্য একটি গ্রুপ চুরি হওয়া গাড়ির মালিকের মোবাইল নম্বর সংগ্রহ করে সঙ্গে অনিবন্ধিত মোবাইল সিম দিয়ে মালিকদের সাথে যোগাযোগ করে চোরাই ট্রাক, পিকআপ কিংবা সিএনজি ফিরিয়ে দেয়ার কথা বলে টাকা দাবি করেন। মোবাইল ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে তারা টাকা সংগ্রহ করেন।
দাবি অনুযায়ী টাকা পেলে চোরাই গাড়িটি কোনও এক জায়গায় ফেলে রেখে সেখানকার তথ্য দেয় গাড়িটি নিয়ে যাওয়ার জন্য। গ্রেপ্তারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন বলে জানান র্যাবের এই কর্মকর্তা।