জিডিপির অনুপাতে কর আদায়ের পরিমাণ কম
- আপডেট : ১১:৫৯:৪০ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ ডিসেম্বর ২০২১
- / 129
সম্প্রতি গবেষণা প্রতিবেদনটি জাতীয় আয়কর দিবস উপলক্ষে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় উপস্থাপন করেন রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (আয়কর নীতি) সামসুদ্দীন আহমেদ। কম আহরণের কারণ হিসেবে করের ভিত্তি সংকুচিত হওয়াকে অন্যতম প্রধান কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয় প্রতিবেদনে।
এনবিআরের প্রতিবেদনে বলা হয়, শিল্পায়ন, বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্টকরণ এবং জনগুরুত্বপূর্ণ বিশেষ খাতগুলোকে স্বল্প কর হার সুবিধা, কর অব্যাহতি এবং কর অবকাশ সুবিধা দেয়ায় কর ভিত্তি সংকুচিত হয়েছে। এসব খাতে সুবিধা বাতিল করা হলে , কর আদায় বর্তমানের চেয়ে বাড়বে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।
সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, আয়কর আদয়ের পরিমাণ প্রায় ৮৫ হাজার কোটি টাকা। এটি এনবিআরের মাধ্যমে সংগৃহীত রাজস্বের শতকরা ৩৫ ভাগ।
রাজস্ব বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আমাদের অর্থনীতির যে আকার তার সঙ্গে কর আদায়ের সামাঞ্জস্য নেই। এর মূল কারণ প্রতি বছর বিপুল পরিমাণ আয়ের তথ্য গোপন করে কর ফাঁকি দেয়া হয়।
জিডিপির হিসাবে বছরে কত পরিমাণ কর ফাঁকি হয়, তার কোনো গবেষণালব্ধ তথ্য এনবিআরের কাছে নেই। তবে রাজস্ব বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, আদায়যোগ্য করের কমপক্ষে ৪০ থেকে ৫০ ভাগ কম আদায় হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, আয়কর সংগ্রহে ধারাবাহিক প্রবৃদ্ধি অর্জিত হলেও আমাদের কর জিডিপি অনুপাত এখনও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারেনি।
এক দশক আগে ২০১১-১২ অর্থবছরে আয়কর আদায়ে প্রবৃদ্ধির হার ছিল প্রায় ১১ শতাংশ। গত অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৩ শতাংশের বেশি।
এক দশক আগে জিডিপির বিপরীতে কর সংগ্রহ ছিল ১০ শতাংশ। এক দশক পর গত অর্থবছরে তা সামান্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ১২ শতাংশ।
আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সাবেক কর্মকর্তা ও গবেষণা সংস্থা পিআরআই-এর নিবার্হী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘বাংলাদেশের কর ব্যবস্থার যথেষ্ঠ দুর্বলতা আছে। এখানে বড় ধরনের সংস্কার দরকার।’
কর অব্যাহতি সুবিধা পাচ্ছে যেসব খাত:
এনবিআরের প্রতিবেদন অনুযায়ী যেসব খাতে কর অব্যাহতি সুবিধা দেয়া হয়েছে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে- ভৌত অবকাঠামো, তথ্য প্রযুক্তি, রপ্তানিমুখী পোশাক ও বস্ত্র, হস্তজাত, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ও কৃষি খাত। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও পরিবহনসহ সরকার এ পর্যন্ত ১৮টি ভৌত অবকাঠামো খাতে কর অব্যাহতি সুবিধা দিয়েছে।
বর্তমানে ২২টি তথ্যপ্রযুক্তি খাত শতভাগ কর অব্যাহতি সুবিধা পাচ্ছে। বিশ্ব প্রতিযোগিতার সক্ষমতা অর্জনে তৈরি পোশাক খাতকে কম হারে (১২ শতাংশ) কর সুবিধা দেয়া হয়েছে।
হস্তজাত, কুটির শিল্প ও মাঝারি শিল্প যাদের বছরে লেনদেন বা টার্নওভার ৫০ লাখ টাকা, তাদের কর মওকুফ করে দেয়া হয়েছে। কম উন্নত এলাকায় শিল্প স্থাপন উৎসাহিত করতে ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে কর রেয়াত দেয়া হয়েছে।
কৃষিজাত উৎপাদন থেকে অর্জিত আয়ের ওপর ১০ বছর পর্যন্ত করমুক্ত সুবিধা পাওয়া যায়।