ঢাকা ০২:১৯ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তোরণের খসড়া জাতিসংঘে গৃহীত

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১২:৪৩:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২১
  • / 136
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) ক্যাটাগরি থেকে চূড়ান্তভাবে বাংলাদেশের উত্তরণের ঐতিহাসিক খসড়া (রেজুলেশন) গৃহীত হয়েছে। খসড়াটি গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে পরবর্তী ধাপে (উন্নয়নশীল দেশে) উত্তরণের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করল। খবর বাসসের।

যুক্তরাষ্ট্র স্থানীয় সময় ২৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রেজুলেশন গৃহীত হয়। রেজুলেশনটি গৃহীত হবার পর বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। তিনি রেজুলেশনটি গ্রহণের ক্ষেত্রে ঐক্যমতে পৌঁছাতে সহায়তা করায় সব সদস্য দেশ, বিশেষ করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশিদারগণকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে রুপান্তর করার স্বপ্ন দেখেছেন। কোভিড-১৯ মহামারির ভয়াবহতম সময়েও সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তিনি বাংলাদেশের এ অদম্য অগ্রযাত্রায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ফলে আজ রূপকল্প-২০২১ পূর্ণতা পেল।’

এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে চূড়ান্তভাবে বাংলাদেশের উত্তোরণের খসড়া গৃহীত হওয়ায়, এটি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় একটি যুগান্তকারী অর্জন, যা এমন এক সময়ে অর্জন হল যখন বাংলাদেশ মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে।

স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরি থেকে উত্তোরণ কেবল সুনির্দিষ্ট একটি দেশেরই সাফল্য নয়, এটি জাতিসংঘের নেতৃত্বে বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বের শক্তির প্রমানও বটে মর্মে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘উত্তরণ কোনোভাবেই শাস্তি হতে পাওে না। এটি হতে পারে পুরস্কার।’

এ প্রসঙ্গে তিনি এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণ ও উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর জন্য প্রণোদনাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সহায়তা কাঠামো নিশ্চিত করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। উত্তরণ চ্যালেঞ্জের প্রতিটি দিক, বিশেষ করে উত্তরণ পরবর্তী আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থা, বাধাঁহীন উত্তরণ ও এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য অর্থায়ন এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপযোগি এবং লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরিরও আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

কাতারের দোহায় অনুষ্ঠেয় আসন্ন পঞ্চম জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশসমূহের সম্মেলন (এলডিসি-৫) প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, পরবর্তী দশকে এলডিসির দেশগুলোর জন্য একটি রুপান্তরধর্মী কর্মসূচি নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সম্মেলনটি উন্নয়ন সহযোগীদেরকে চমৎকার একটি সুযোগ এনে দেবে।

দোহা প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন স্বল্পোন্নত দেশসমূহের উত্তরণের বিষয়ে অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলোর একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ২০৩১ সালের মধ্যে যাতে আরও ১৫টি এলডিসিভুক্ত দেশকে উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম করে তোলা যায়, দোহা খসড়া প্রোগ্রাম অব অ্যাকশনে সে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যের সাফল্য নির্ভর করছে মূলত উন্নয়ন অংশীদারদের সংহতি ও বাড়তি সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রতির উপর।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ও কানাডার স্থায়ী প্রতিনিধি রর্বাট রে এলডিসি-৫ সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক কমিটিতে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

এলডিসি থেকে বাংলাদেশের উত্তোরণের খসড়া জাতিসংঘে গৃহীত

আপডেট : ১২:৪৩:৫০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ নভেম্বর ২০২১
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) ক্যাটাগরি থেকে চূড়ান্তভাবে বাংলাদেশের উত্তরণের ঐতিহাসিক খসড়া (রেজুলেশন) গৃহীত হয়েছে। খসড়াটি গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে পরবর্তী ধাপে (উন্নয়নশীল দেশে) উত্তরণের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করল। খবর বাসসের।

যুক্তরাষ্ট্র স্থানীয় সময় ২৪ নভেম্বর বৃহস্পতিবার রেজুলেশন গৃহীত হয়। রেজুলেশনটি গৃহীত হবার পর বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। তিনি রেজুলেশনটি গ্রহণের ক্ষেত্রে ঐক্যমতে পৌঁছাতে সহায়তা করায় সব সদস্য দেশ, বিশেষ করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশিদারগণকে ধন্যবাদ জানান।

তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে রুপান্তর করার স্বপ্ন দেখেছেন। কোভিড-১৯ মহামারির ভয়াবহতম সময়েও সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে তিনি বাংলাদেশের এ অদম্য অগ্রযাত্রায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। ফলে আজ রূপকল্প-২০২১ পূর্ণতা পেল।’

এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে চূড়ান্তভাবে বাংলাদেশের উত্তোরণের খসড়া গৃহীত হওয়ায়, এটি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় একটি যুগান্তকারী অর্জন, যা এমন এক সময়ে অর্জন হল যখন বাংলাদেশ মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদযাপন করছে।

স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরি থেকে উত্তোরণ কেবল সুনির্দিষ্ট একটি দেশেরই সাফল্য নয়, এটি জাতিসংঘের নেতৃত্বে বহুপাক্ষিক অংশীদারিত্বের শক্তির প্রমানও বটে মর্মে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘উত্তরণ কোনোভাবেই শাস্তি হতে পাওে না। এটি হতে পারে পুরস্কার।’

এ প্রসঙ্গে তিনি এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরণ ও উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর জন্য প্রণোদনাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সহায়তা কাঠামো নিশ্চিত করার গুরুত্ব তুলে ধরেন। উত্তরণ চ্যালেঞ্জের প্রতিটি দিক, বিশেষ করে উত্তরণ পরবর্তী আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থা, বাধাঁহীন উত্তরণ ও এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য অর্থায়ন এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলার উপযোগি এবং লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরিরও আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।

কাতারের দোহায় অনুষ্ঠেয় আসন্ন পঞ্চম জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশসমূহের সম্মেলন (এলডিসি-৫) প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, পরবর্তী দশকে এলডিসির দেশগুলোর জন্য একটি রুপান্তরধর্মী কর্মসূচি নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সম্মেলনটি উন্নয়ন সহযোগীদেরকে চমৎকার একটি সুযোগ এনে দেবে।

দোহা প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন স্বল্পোন্নত দেশসমূহের উত্তরণের বিষয়ে অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলোর একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ২০৩১ সালের মধ্যে যাতে আরও ১৫টি এলডিসিভুক্ত দেশকে উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম করে তোলা যায়, দোহা খসড়া প্রোগ্রাম অব অ্যাকশনে সে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এই উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যের সাফল্য নির্ভর করছে মূলত উন্নয়ন অংশীদারদের সংহতি ও বাড়তি সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রতির উপর।

প্রসঙ্গত, জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ও কানাডার স্থায়ী প্রতিনিধি রর্বাট রে এলডিসি-৫ সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক কমিটিতে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করছেন।