নওগাঁর বদলগাছীতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নারী উদ্যোক্তাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

নওগাঁ প্রতিনিধি
  • আপডেট : ০৪:৩৫:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২
  • / 245

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যানের মাসুদ রানার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন একই ইউনিয়নে কর্মরত ডিজিটাল সেন্টারের নারী উদ্যোক্তা জাকিয়া সুলতানা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই নারী উদ্যোক্তা। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাসুদ রানা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জীবনযুদ্ধে লড়াইকরা ওই নারী উদ্যোক্তা। ওই নারী জানান, গত সোমবার নওগাঁ জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসানের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের অনুলিপি দিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপরিচালক উত্তম কুমার রায় এবং বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিন বরাবর।

অভিযোগে ওই নারী উল্লেখ করেছেন যে, ‘সরকার দলীয় প্রভাবশালী চেয়ারম্যান মাসুদ রানা গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পূর্ব থেকে আমাকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসতেছেন।

তিনি মুঠোফোনে এবং বেশকিছু চিঠির মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ আমাকে বিভিন্নপ্রকার কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছেন যার যাবতীয় প্রমান আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।

তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার কাছ থেকে আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এবং তিনি তার কিছু গোপন তথ্য ডিলিট করে দেন। পরবর্তীতে লোক মারফত মোবাইল ফোনটি তিনি ফেরত দেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করেছেন, কিছুদিন আগে গনটিকা চলাকালীন সময়ে আমার কাছে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা হিসেবে দাবী করেন। আমি সেই চাঁদার টাকা দিতে না পারায় তিনি আমাকে আমার সকল কাজে বাধা সৃষ্টি করেন এবং ডিজিটাল সেন্টারের সকল সেবা সচিব এবং হিসাব সহকারীকে প্রদানের জন্য নির্দেশ দেন।

আমি একজন বিবাহিত নারী এবং আমার দুটি জমজ কন্যা সন্তান আছে। বর্তমানে চেয়ারম্যানের এমন কু-প্রস্তাবের ফলে আমার কর্মক্ষেত্রে যেমন অসুবিধা হচ্ছে ঠিক একই ভাবে সাংসারিক কলহের সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে আমার বিবাহ বিচ্ছেদও ঘটেছে।

এমতাবস্থায় আমার ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কাজ এবং সামাজিক চলাচলে বিষদ বাধার সৃষ্টি হয়েছে, যার পরিমান দিন-দিন বৃদ্ধি পাইতেছে এবং প্রতিনিয়ত আমার সম্মানহানি ঘটছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন ওই নারী।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় ইউনিয়ন পরিষদের ২য় তলায় ডিজিটাল সেন্টার নারী উদ্যোক্তা রুমের পাশের একটি কক্ষে তার অবৈধ কাজ করার জন্য একটি খাঠে তোষক , বালিশ, কোল বালিশ, নতুন বিছানার চাদর বিছানো। এই রুম বিগত দিনে বিটপুলিশিংয়ের রুম হিসাবে ব্যবহার হতো।

ওই নারী উদ্যোক্তার যৌন হয়রানির বিষয়টি নিয়ে মুঠোফোনে প্রশ্ন করা হলে ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা বলেন, ‘আপনারা এখন কোথায় আছেন? মোবইলে এসব কথা যাবেনা। আমি আপনাদের সাথে সাক্ষাত কথা বলতে চাই।’ তবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তার সঙ্গে নাকি তার মনোমালিন্য আছে। তবে কি নিয়ে মনোমালিন্য এ বিষয়ে কোনো সদোত্তোর দিতে পারেননি তিনি।

নওগাঁ জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান পিএএ বলেন, এবিষয়ে একটি লিখিত পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

 

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নওগাঁর বদলগাছীতে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে নারী উদ্যোক্তাকে যৌন হয়রানির অভিযোগ

আপডেট : ০৪:৩৫:০৮ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৩ জুন ২০২২

নওগাঁর বদলগাছী উপজেলার মথুরাপুর ইউপি চেয়ারম্যানের মাসুদ রানার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেছেন একই ইউনিয়নে কর্মরত ডিজিটাল সেন্টারের নারী উদ্যোক্তা জাকিয়া সুলতানা। এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন ওই নারী উদ্যোক্তা। ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মাসুদ রানা উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং দলীয় মনোনীত প্রার্থী হিসেবে নির্বাচিত হয়েছেন।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন জীবনযুদ্ধে লড়াইকরা ওই নারী উদ্যোক্তা। ওই নারী জানান, গত সোমবার নওগাঁ জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসানের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযোগের অনুলিপি দিয়েছেন স্থানীয় সরকার বিভাগের উপরিচালক উত্তম কুমার রায় এবং বদলগাছী উপজেলা নির্বাহী অফিসার আলপনা ইয়াসমিন বরাবর।

অভিযোগে ওই নারী উল্লেখ করেছেন যে, ‘সরকার দলীয় প্রভাবশালী চেয়ারম্যান মাসুদ রানা গত ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনের পূর্ব থেকে আমাকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসতেছেন।

তিনি মুঠোফোনে এবং বেশকিছু চিঠির মাধ্যমে দীর্ঘদিন যাবৎ আমাকে বিভিন্নপ্রকার কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছেন যার যাবতীয় প্রমান আমার কাছে সংরক্ষিত আছে।

তার কুপ্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে আমার কাছ থেকে আমার ব্যবহৃত মোবাইল ফোন কেড়ে নেন এবং তিনি তার কিছু গোপন তথ্য ডিলিট করে দেন। পরবর্তীতে লোক মারফত মোবাইল ফোনটি তিনি ফেরত দেন।

অভিযোগে আরও উল্লেখ করেছেন, কিছুদিন আগে গনটিকা চলাকালীন সময়ে আমার কাছে দুই লক্ষ টাকা চাঁদা হিসেবে দাবী করেন। আমি সেই চাঁদার টাকা দিতে না পারায় তিনি আমাকে আমার সকল কাজে বাধা সৃষ্টি করেন এবং ডিজিটাল সেন্টারের সকল সেবা সচিব এবং হিসাব সহকারীকে প্রদানের জন্য নির্দেশ দেন।

আমি একজন বিবাহিত নারী এবং আমার দুটি জমজ কন্যা সন্তান আছে। বর্তমানে চেয়ারম্যানের এমন কু-প্রস্তাবের ফলে আমার কর্মক্ষেত্রে যেমন অসুবিধা হচ্ছে ঠিক একই ভাবে সাংসারিক কলহের সৃষ্টি হয়েছে, যার ফলে আমার বিবাহ বিচ্ছেদও ঘটেছে।

এমতাবস্থায় আমার ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টারে কাজ এবং সামাজিক চলাচলে বিষদ বাধার সৃষ্টি হয়েছে, যার পরিমান দিন-দিন বৃদ্ধি পাইতেছে এবং প্রতিনিয়ত আমার সম্মানহানি ঘটছে। এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার দাবি করেছেন ওই নারী।

সরজমিনে গিয়ে দেখা যায় ইউনিয়ন পরিষদের ২য় তলায় ডিজিটাল সেন্টার নারী উদ্যোক্তা রুমের পাশের একটি কক্ষে তার অবৈধ কাজ করার জন্য একটি খাঠে তোষক , বালিশ, কোল বালিশ, নতুন বিছানার চাদর বিছানো। এই রুম বিগত দিনে বিটপুলিশিংয়ের রুম হিসাবে ব্যবহার হতো।

ওই নারী উদ্যোক্তার যৌন হয়রানির বিষয়টি নিয়ে মুঠোফোনে প্রশ্ন করা হলে ইউপি চেয়ারম্যান মাসুদ রানা বলেন, ‘আপনারা এখন কোথায় আছেন? মোবইলে এসব কথা যাবেনা। আমি আপনাদের সাথে সাক্ষাত কথা বলতে চাই।’ তবে দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকেই তার সঙ্গে নাকি তার মনোমালিন্য আছে। তবে কি নিয়ে মনোমালিন্য এ বিষয়ে কোনো সদোত্তোর দিতে পারেননি তিনি।

নওগাঁ জেলা প্রশাসক খালিদ মেহেদী হাসান পিএএ বলেন, এবিষয়ে একটি লিখিত পেয়েছি। দ্রুত তদন্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।