রাখাইনের পর এবার পুড়ছে মিয়ানমারের চিন রাজ্য

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১১:১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমাবার, ৮ নভেম্বর ২০২১
  • / 160
থ্যাং বিয়াক থাকেন প্রতিবেশি ভারতে। সেখান থেকেই টেলিভিশনের পর্দায় তিনি দেখলেন, মিয়ানমারের চিন রাজ্যে তার বাড়িঘর পুড়ানো হচ্ছে।

ভারতের মিজোরাম সীমান্ত দিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি তিন পুত্র ও আরও কয়েকজনকে নিয়ে ছোট্ট পাহাড়ি শহর ছেড়ে পালিয়ে আসেন।

থ্যাং বিয়াক কাতারের দোহাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার কাছে মিয়ানমারে সামরিক জান্তা সরকারের দমনপীড়নের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন পালিয়ে এলাম, আমরা কিছু সঙ্গে আনতে পারলাম না। এখন আমাদের সব সম্পত্তি ধ্বংস হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘যখন আমি জানতে পারলাম যে, আমার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, আমি খুবই হতাশ হলাম; আমি খেতেও ঘুমোতে পারছিলাম না।’

গত অক্টোবরের ২৯ তারিখের দিকে চিন প্রদেশে থান্টল্যাংয়ে যে ১৬০টি ঘরবাড়ি ও গীর্জা পুড়িয়ে ফেলা হয়, তার মধ্যে রয়েছে থ্যাং বিয়াকের ঘরও।

মিয়ানমারে সক্রিয় সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে দেশটির জান্তা সরকার এসব ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করছে। আটক করা হয়েছে বহু নাগরিককে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো তাদের মুক্তি দাবি জানাচ্ছে।

মিয়ানমার সরকারের কথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’-এর অংশ হিসেবে রাখাইন রাজ্যের মতো চিন রাজ্যেও শুরু হয়েছে কঠোর দমনপীড়ন। এ অভিযানে বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ ৫০০টি সংস্থা।

আল জাজিরা জানায়, ভারতের সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পাহাড় ঘেরা চিন রাজ্যে বহু বছর ধরে লড়াই চলছে। সেখানে চিন ন্যালনাল ফ্রন্ট নামের একটি বিদ্রোহী গোষ্টি সক্রিয় রয়েছে। এ সংগঠনটি ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

২০১৫ সালে একটি শান্তি চুক্তি হয় চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের সঙ্গে। কিন্তু গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের জান্তা সরকার আবার ক্ষমতা দখলের পর সয়গঠনটি আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠে।

প্রায়ই সামরিক জান্তা সরকারের সদস্যদের সঙ্গে তাদের সংঘাত বাধে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এতে গত মে মাস থেকে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৩৭ হাজারের বেশি মানুষ। আর ভারতে পালিয়ে গেছেন ১৫ হাজারের বেশি মানুষ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

রাখাইনের পর এবার পুড়ছে মিয়ানমারের চিন রাজ্য

আপডেট : ১১:১১:৩৭ পূর্বাহ্ন, সোমাবার, ৮ নভেম্বর ২০২১
থ্যাং বিয়াক থাকেন প্রতিবেশি ভারতে। সেখান থেকেই টেলিভিশনের পর্দায় তিনি দেখলেন, মিয়ানমারের চিন রাজ্যে তার বাড়িঘর পুড়ানো হচ্ছে।

ভারতের মিজোরাম সীমান্ত দিয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর তিনি তিন পুত্র ও আরও কয়েকজনকে নিয়ে ছোট্ট পাহাড়ি শহর ছেড়ে পালিয়ে আসেন।

থ্যাং বিয়াক কাতারের দোহাভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার কাছে মিয়ানমারে সামরিক জান্তা সরকারের দমনপীড়নের কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ‘আমরা যখন পালিয়ে এলাম, আমরা কিছু সঙ্গে আনতে পারলাম না। এখন আমাদের সব সম্পত্তি ধ্বংস হয়ে গেছে।’

তিনি বলেন, ‘যখন আমি জানতে পারলাম যে, আমার বাড়িঘর পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে, আমি খুবই হতাশ হলাম; আমি খেতেও ঘুমোতে পারছিলাম না।’

গত অক্টোবরের ২৯ তারিখের দিকে চিন প্রদেশে থান্টল্যাংয়ে যে ১৬০টি ঘরবাড়ি ও গীর্জা পুড়িয়ে ফেলা হয়, তার মধ্যে রয়েছে থ্যাং বিয়াকের ঘরও।

মিয়ানমারে সক্রিয় সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে অভিযানের অংশ হিসেবে দেশটির জান্তা সরকার এসব ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করছে। আটক করা হয়েছে বহু নাগরিককে। মানবাধিকার সংগঠনগুলো তাদের মুক্তি দাবি জানাচ্ছে।

মিয়ানমার সরকারের কথিত ‘সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান’-এর অংশ হিসেবে রাখাইন রাজ্যের মতো চিন রাজ্যেও শুরু হয়েছে কঠোর দমনপীড়ন। এ অভিযানে বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিতে জাতিসংঘের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে মানবাধিকার সংস্থা হিউম্যান রাইটস ওয়াচসহ ৫০০টি সংস্থা।

আল জাজিরা জানায়, ভারতের সীমান্তের কাছে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় পাহাড় ঘেরা চিন রাজ্যে বহু বছর ধরে লড়াই চলছে। সেখানে চিন ন্যালনাল ফ্রন্ট নামের একটি বিদ্রোহী গোষ্টি সক্রিয় রয়েছে। এ সংগঠনটি ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।

২০১৫ সালে একটি শান্তি চুক্তি হয় চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের সঙ্গে। কিন্তু গত ১ ফেব্রুয়ারি মিয়ানমারের জান্তা সরকার আবার ক্ষমতা দখলের পর সয়গঠনটি আবারও সক্রিয় হয়ে ওঠে।

প্রায়ই সামরিক জান্তা সরকারের সদস্যদের সঙ্গে তাদের সংঘাত বাধে। জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, এতে গত মে মাস থেকে অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন ৩৭ হাজারের বেশি মানুষ। আর ভারতে পালিয়ে গেছেন ১৫ হাজারের বেশি মানুষ।