সু চির দলের দুই নেতার ১৬৫ বছরের কারাদণ্ড

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১২:৪০:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১
  • / 155
মিয়ানমারের একটি আদালত দুর্নীতির দায়ে দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির রাজনৈতিক দলের দুই নেতাকে ৯০ ও ৭৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে। তাদের আইনজীবীর বরাত দিয়ে বুধবার ব্রিটেনের দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন এ খবর জানায়।

মিয়ানমারে জান্তা সরকারের হাতে এখন পর্যন্ত বহু বিরোধী নেতা আটক হয়েছেন। এদের অধিকাংশই ক্ষমতাচ্যুত অং সান সু চির এনএলডি (ন্যাশনাল ডেমোক্র্যটিক অ্যালায়েন্স) পার্টিও সদস্য। কিছু বন্দীকে মুক্তি দেয়া হলেও এখনও অনেকে কারাগারে রয়েছে।

মঙ্গলবার মিয়ারমারের আদালত এ রায় ঘোষণা করে। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- সু চি সরকারের আমলে কাইন রাজ্যের পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা থান নাইং ও রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী নান খিন হোতউই মিন্ত।

এ দুজনের আইনজীবী জো মিন হল্যাং জানান, থান নাইংকে দুর্নীতির ছয়টি অভিযোগে ৯০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। অপরদিকে হোতউই মিন্তকে দুর্নীতির পাঁচ অভিযোগে ৬৭ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। এরা দুজনই অং সান সু চির ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত।

গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থী অং সান সু চি সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। এর পর থেকেই দেশটিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ অব্যহত আছে। এসব বিক্ষোভে এ পর্যন্ত প্রাণ গেছে এক হাজারের বেশি মানুষের।

একই দিনে মিয়ানমারে আটক এক মার্কিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদ’ ও ‘রাষ্ট্রদ্রোহে’র অভিযোগ আনা হয়েছে। মিয়ানমারের এক আইনজীবীর বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

গত মে মাসে মিয়ানমার ছাড়ার সময় গ্রেপ্তার হন ড্যানি ফেনস্টার নামের ওই সাংবাদিক। বুধবার তার আইনজীবী থ্যান জো অং জানান, তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ও মিয়ানমার প্যানেল কোডে নতুন দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

বিশেষ করে ‘সন্ত্রাসী’দের ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগ আনা হয়। এতে তিন থেকে সাত বছরের কারাবাসের শাস্তি দিয়ে থাকে মিয়ানমার আদালত। অন্য অভিযোগটি মিয়ানমার প্যানেল কোডের ১২৪ (এ) ধারার। এ ধরায় সাত থেকে ২০ বছর পর্যন্ত শাস্তির বিধান রয়েছে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক ও জিম্মি সংশ্লিষ্ট আলোচনাকারী বিল রিচার্ডসন মিয়ানমারের রাজধানী নে পি দোতে দেশটির সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হল্যাংইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

এ সাক্ষাতের কয়েকদিন পরই নতুন দুটি অভিযোগ সাংবাদিক ফেনস্টারের বিরুদ্ধে আনা হলো। ফেনস্টার মিয়ানমারের রেঙ্গুনভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার’-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক।

তার বিরুদ্ধে সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে ভিন্ন মতের প্রচারণা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া অভিবাসী আইন লঙ্ঘনেরও অভিযোগ তোলা হয়েছে।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

সু চির দলের দুই নেতার ১৬৫ বছরের কারাদণ্ড

আপডেট : ১২:৪০:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১০ নভেম্বর ২০২১
মিয়ানমারের একটি আদালত দুর্নীতির দায়ে দেশটির গণতন্ত্রপন্থী নেত্রী অং সান সু চির রাজনৈতিক দলের দুই নেতাকে ৯০ ও ৭৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে। তাদের আইনজীবীর বরাত দিয়ে বুধবার ব্রিটেনের দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন এ খবর জানায়।

মিয়ানমারে জান্তা সরকারের হাতে এখন পর্যন্ত বহু বিরোধী নেতা আটক হয়েছেন। এদের অধিকাংশই ক্ষমতাচ্যুত অং সান সু চির এনএলডি (ন্যাশনাল ডেমোক্র্যটিক অ্যালায়েন্স) পার্টিও সদস্য। কিছু বন্দীকে মুক্তি দেয়া হলেও এখনও অনেকে কারাগারে রয়েছে।

মঙ্গলবার মিয়ারমারের আদালত এ রায় ঘোষণা করে। সাজাপ্রাপ্তরা হলেন- সু চি সরকারের আমলে কাইন রাজ্যের পরিকল্পনা মন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা থান নাইং ও রাজ্যটির মুখ্যমন্ত্রী নান খিন হোতউই মিন্ত।

এ দুজনের আইনজীবী জো মিন হল্যাং জানান, থান নাইংকে দুর্নীতির ছয়টি অভিযোগে ৯০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়। অপরদিকে হোতউই মিন্তকে দুর্নীতির পাঁচ অভিযোগে ৬৭ বছরের সাজা দেয়া হয়েছে। এরা দুজনই অং সান সু চির ঘনিষ্ট হিসেবে পরিচিত।

গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতন্ত্রপন্থী অং সান সু চি সরকারকে হটিয়ে ক্ষমতায় আসে মিয়ানমারের জান্তা সরকার। এর পর থেকেই দেশটিতে সরকারবিরোধী বিক্ষোভ অব্যহত আছে। এসব বিক্ষোভে এ পর্যন্ত প্রাণ গেছে এক হাজারের বেশি মানুষের।

একই দিনে মিয়ানমারে আটক এক মার্কিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদ’ ও ‘রাষ্ট্রদ্রোহে’র অভিযোগ আনা হয়েছে। মিয়ানমারের এক আইনজীবীর বরাত দিয়ে আল জাজিরা জানায়, অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে।

গত মে মাসে মিয়ানমার ছাড়ার সময় গ্রেপ্তার হন ড্যানি ফেনস্টার নামের ওই সাংবাদিক। বুধবার তার আইনজীবী থ্যান জো অং জানান, তার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবিরোধী আইন ও মিয়ানমার প্যানেল কোডে নতুন দুটি অভিযোগ আনা হয়েছে।

বিশেষ করে ‘সন্ত্রাসী’দের ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবিরোধী আইনে অভিযোগ আনা হয়। এতে তিন থেকে সাত বছরের কারাবাসের শাস্তি দিয়ে থাকে মিয়ানমার আদালত। অন্য অভিযোগটি মিয়ানমার প্যানেল কোডের ১২৪ (এ) ধারার। এ ধরায় সাত থেকে ২০ বছর পর্যন্ত শাস্তির বিধান রয়েছে।

সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের কূটনীতিক ও জিম্মি সংশ্লিষ্ট আলোচনাকারী বিল রিচার্ডসন মিয়ানমারের রাজধানী নে পি দোতে দেশটির সামরিক জান্তা প্রধান মিন অং হল্যাংইয়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন।

এ সাক্ষাতের কয়েকদিন পরই নতুন দুটি অভিযোগ সাংবাদিক ফেনস্টারের বিরুদ্ধে আনা হলো। ফেনস্টার মিয়ানমারের রেঙ্গুনভিত্তিক অনলাইন নিউজ পোর্টাল ‘ফ্রন্টিয়ার মিয়ানমার’-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক।

তার বিরুদ্ধে সামরিক জান্তা সরকারের বিরুদ্ধে ভিন্ন মতের প্রচারণা চালানোর অভিযোগ রয়েছে। এ ছাড়া অভিবাসী আইন লঙ্ঘনেরও অভিযোগ তোলা হয়েছে।