অবিলম্বে ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান সৌদি যুবরাজের

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
  • আপডেট : ০২:৫৯:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
  • / 10

সৌদি যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান | সংগৃহীত ছবি

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এবং লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এ সময় তিনি বলেন, ইসরায়েল অবশ্যই ইরানের ভূখণ্ডে হামলা চালাতে পারবে না। এমনকি ইরানের সার্বভৌমত্বের প্রতি ইসরায়েলকে সম্মান দেখাতে হবে। খবর এএফপি, আল জাজিরা।

সোমবার (১১ নভেম্বর) রিয়াদে অনুষ্ঠিত আরব লিগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) যৌথ শীর্ষ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন সৌদি যুবরাজ। ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা লেবানন ও ইরানে যে সংকট দেখা দিয়েছে, তার সুরাহা করতেই এই সম্মেলন ডাকা হয়েছে।

আরব লীগ ও ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের আগে দেওয়া ভাষণে ‘ফিলিস্তিনি এবং লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার’ নিন্দা জানিয়েছেন সৌদি যুবরাজ। উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি বাহিনী ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গাজা ও লেবাননে আমাদের ভাইদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যে তৎপরতা চালাচ্ছে, তা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে।

এ সময় ইসরায়েলকে আর কোনও আগ্রাসন না চালাতে এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

গাজা এবং লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়ে আরব দেশগুলোর জোট আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল ঘেইত বলেছেন, কোনও কথার মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশা প্রকাশ করা যায় না। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের নেওয়া সব পদক্ষেপ দীর্ঘস্থায়ী শান্তি অর্জনের প্রচেষ্টায় বাধা তৈরি করছে। ন্যায়বিচারের মাধ্যমে আমরা স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারব।

মহাসচিব আরও বলেছেন, ইসরায়েলের চালানো সহিংসতায় বিশ্ব চোখ বন্ধ করে রাখতে পারে না।

এদিকে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) বলেছে, গাজা এবং লেবাননে ইসরায়েলের আগ্রাসন আরব ও ইসলামিক বিশ্বের নেতাদের জরুরি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে। সম্মেলনের মূল অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে এই অঞ্চলে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ, বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা, ফিলিস্তিনি ও লেবাননের জনগণকে সহায়তা, চলমান হামলা বন্ধ এবং স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর চাপ প্রয়োগ করা।

সম্মেলনে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা তিনুবু, লেবাননের প্রেসিডেন্ট নাজিব মিকাতিসহ আরব লিগ ও ওআইসির সদস্যদেশগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

তবে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। যুবরাজ সালমানকে ফোনকলে তিনি জানিয়েছেন, সম্মেলনে ইরানের প্রতিনিধিত্ব করবেন দেশটির প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। ওই হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ২০০ জনের বেশি নিহত হন। পরে সেদিনই গাজায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। তখন থেকে ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনে ৪৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।

একই সঙ্গে লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকেও লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটিতে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে শুরু করা ইসরায়েলের যুদ্ধে গত এক বছরে ৩ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

অবিলম্বে ইসরায়েলের আগ্রাসন বন্ধের আহ্বান সৌদি যুবরাজের

আপডেট : ০২:৫৯:৫৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় এবং লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক আগ্রাসন অবিলম্বে বন্ধের আহ্বান জানিয়েছেন সৌদি আরবের যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান। এ সময় তিনি বলেন, ইসরায়েল অবশ্যই ইরানের ভূখণ্ডে হামলা চালাতে পারবে না। এমনকি ইরানের সার্বভৌমত্বের প্রতি ইসরায়েলকে সম্মান দেখাতে হবে। খবর এএফপি, আল জাজিরা।

সোমবার (১১ নভেম্বর) রিয়াদে অনুষ্ঠিত আরব লিগ ও ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) যৌথ শীর্ষ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন সৌদি যুবরাজ। ইসরায়েলের হামলায় ফিলিস্তিনের গাজা লেবানন ও ইরানে যে সংকট দেখা দিয়েছে, তার সুরাহা করতেই এই সম্মেলন ডাকা হয়েছে।

আরব লীগ ও ওআইসি শীর্ষ সম্মেলনের আগে দেওয়া ভাষণে ‘ফিলিস্তিনি এবং লেবাননের জনগণের বিরুদ্ধে সংঘটিত গণহত্যার’ নিন্দা জানিয়েছেন সৌদি যুবরাজ। উপত্যকাটিতে ইসরায়েলি বাহিনী ‘গণহত্যা’ চালাচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, গাজা ও লেবাননে আমাদের ভাইদের বিরুদ্ধে ইসরায়েল যে তৎপরতা চালাচ্ছে, তা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে হবে।

এ সময় ইসরায়েলকে আর কোনও আগ্রাসন না চালাতে এবং ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেয়ার জন্য বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।

গাজা এবং লেবাননে ইসরায়েলের সামরিক অভিযানের নিন্দা জানিয়ে আরব দেশগুলোর জোট আরব লীগের মহাসচিব আহমেদ আবুল ঘেইত বলেছেন, কোনও কথার মাধ্যমে ফিলিস্তিনি জনগণের দুর্দশা প্রকাশ করা যায় না। ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলের নেওয়া সব পদক্ষেপ দীর্ঘস্থায়ী শান্তি অর্জনের প্রচেষ্টায় বাধা তৈরি করছে। ন্যায়বিচারের মাধ্যমে আমরা স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করতে পারব।

মহাসচিব আরও বলেছেন, ইসরায়েলের চালানো সহিংসতায় বিশ্ব চোখ বন্ধ করে রাখতে পারে না।

এদিকে সৌদি আরবের রাষ্ট্রায়ত্ত বার্তা সংস্থা সৌদি প্রেস এজেন্সি (এসপিএ) বলেছে, গাজা এবং লেবাননে ইসরায়েলের আগ্রাসন আরব ও ইসলামিক বিশ্বের নেতাদের জরুরি পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করেছে। সম্মেলনের মূল অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে এই অঞ্চলে ইসরায়েলি আগ্রাসন বন্ধ, বেসামরিক নাগরিকদের রক্ষা, ফিলিস্তিনি ও লেবাননের জনগণকে সহায়তা, চলমান হামলা বন্ধ এবং স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা প্রতিষ্ঠার জন্য চূড়ান্ত পদক্ষেপ নিতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের ওপর চাপ প্রয়োগ করা।

সম্মেলনে ফিলিস্তিনের প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস, তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোয়ান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ, নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট বোলা তিনুবু, লেবাননের প্রেসিডেন্ট নাজিব মিকাতিসহ আরব লিগ ও ওআইসির সদস্যদেশগুলোর শীর্ষস্থানীয় নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

তবে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন না ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসুদ পেজেশকিয়ান। যুবরাজ সালমানকে ফোনকলে তিনি জানিয়েছেন, সম্মেলনে ইরানের প্রতিনিধিত্ব করবেন দেশটির প্রথম ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ রেজা আরেফ।

গত বছরের ৭ অক্টোবর ইসরায়েলে নজিরবিহীন হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী গোষ্ঠী হামাস। ওই হামলায় ইসরায়েলে এক হাজার ২০০ জনের বেশি নিহত হন। পরে সেদিনই গাজায় যুদ্ধ শুরু করে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। তখন থেকে ইসরায়েলি হামলায় ফিলিস্তিনে ৪৩ হাজার ৬০০ জনেরও বেশি মানুষের প্রাণহানি ঘটেছে; যাদের বেশিরভাগই বেসামরিক।

একই সঙ্গে লেবাননের ইরান-সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকেও লক্ষ্যবস্তু বানিয়েছে ইসরায়েল। দেশটিতে হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে শুরু করা ইসরায়েলের যুদ্ধে গত এক বছরে ৩ হাজার ১০০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছেন।