তালেবানদের দখলে মাজার-ই-শরীফ

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০৭:৪৫:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২১
  • / 200

ছবি সংগৃহীত

::আন্তর্জাতিক ডেস্ক::

এবার তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানের সর্ব উত্তরের শহর মাজার-ই-শরীফ দখল করেছে। এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের সবগুলো বড় শহর এখন তালেবান যোদ্ধাদের নিজেদের কব্জায়। খবর আল জাজিরার

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর ও চতুর্থ বৃহত্তম শহর মাজার-ই-শরীফ। এটি দেশটির বালখ প্রদেশের রাজধানী। এই শহর তালেবানদের হাতে যাওয়ার ফলে গোটা উত্তরাঞ্চল থেকে একেবারেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললো আফগান সরকার।

খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার প্রায় বিনা বাধায় শহরটি দখল করে নিয়েছে তালেবান। সরকারি বাহিনীর বড় ধরনের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়নি তাদের। বালখের প্রাদেশিক আইনপ্রণেতা আব্বাস ইব্রাহিমজাদা এই তথ্য জানিয়েছেন।

আব্বাস ইব্রাহিমজাদা আল জাজিরাকে আরও বলেন, প্রদেশের জাতীয় সেনাবাহিনী প্রথমে আত্মসমর্পণ করেছে; যা সরকারপন্থী মিলিশিয়া ও অন্যান্য বাহিনীকে মনোবল হারাতে এবং হামলার মুখে হাল ছেড়ে দিতে প্ররোচিত করেছিল।

বলখ প্রাদেশিক পরিষদের প্রধান আফজাল হাদিদ বলেন, মাজার শহর ছেড়ে সমস্ত নিরাপত্তা বাহিনী চলে গেছে। যদিও শহরের কেন্দ্রের বাইরে একটি এলাকায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ চলছিল।

আফগানিস্তানের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র মাজার-ই-শরিফ। উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তানের সীমান্ত সংলগ্ন এ শহরটি গত শতকের নব্বইয়ের দশকে তালেবানের দখলে ছিল। মাজার-ই-শরিফ দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ১৯টি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ এখন তালেবানদের হাতে।

শনিবার মাজার-ই-শরিফ ছাড়াও তালেবান যোদ্ধারা দেশটির পাকতিকা ও কুনার প্রদেশের রাজধানী শহরও দখলে নেয়। এখন রাজধানী কাবুল ও জালালাবাদে সাঁড়াশি আক্রমণ পরিচালনার প্রস্তুতি শুরু করেছে তালেবান।

দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় লোগার প্রদেশের আইনপ্রণেতা হোদা আহমাদি আল জাজিরাকে জানান, তালেবান যোদ্ধারা চর আসিয়াব জেলায় পৌঁছেছেন। তারা কাবুল থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটার (৭ মাইল) দূরে অবস্থান করছেন।

এর মধ্যেই আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত শহর থেকে সাবেক মুজাহিদ নেতা ও শহরটির সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ইসমাইল খান ও কয়েকজন উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাকে আটক করেছে তালেবান। দেশটিতে চলমান সংঘাত এড়াতে কাতারে শান্তি আলোচনায় তালেবানকে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব দিয়েছে আফগান সরকার। কাতারের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে তালেবানকে এ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম।

আফগানিস্তানে তালেবানের সহিংসতা দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। তালেবানকে অবিলম্বে হামলা বন্ধ করে গৃহযুদ্ধ এড়াতে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

তালেবানদের দখলে মাজার-ই-শরীফ

আপডেট : ০৭:৪৫:৫১ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৫ অগাস্ট ২০২১
::আন্তর্জাতিক ডেস্ক::

এবার তালেবান যোদ্ধারা আফগানিস্তানের সর্ব উত্তরের শহর মাজার-ই-শরীফ দখল করেছে। এর মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের সবগুলো বড় শহর এখন তালেবান যোদ্ধাদের নিজেদের কব্জায়। খবর আল জাজিরার

আফগানিস্তানের উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় শহর ও চতুর্থ বৃহত্তম শহর মাজার-ই-শরীফ। এটি দেশটির বালখ প্রদেশের রাজধানী। এই শহর তালেবানদের হাতে যাওয়ার ফলে গোটা উত্তরাঞ্চল থেকে একেবারেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেললো আফগান সরকার।

খবরে বলা হয়েছে, স্থানীয় সময় শনিবার প্রায় বিনা বাধায় শহরটি দখল করে নিয়েছে তালেবান। সরকারি বাহিনীর বড় ধরনের প্রতিরোধের মুখে পড়তে হয়নি তাদের। বালখের প্রাদেশিক আইনপ্রণেতা আব্বাস ইব্রাহিমজাদা এই তথ্য জানিয়েছেন।

আব্বাস ইব্রাহিমজাদা আল জাজিরাকে আরও বলেন, প্রদেশের জাতীয় সেনাবাহিনী প্রথমে আত্মসমর্পণ করেছে; যা সরকারপন্থী মিলিশিয়া ও অন্যান্য বাহিনীকে মনোবল হারাতে এবং হামলার মুখে হাল ছেড়ে দিতে প্ররোচিত করেছিল।

বলখ প্রাদেশিক পরিষদের প্রধান আফজাল হাদিদ বলেন, মাজার শহর ছেড়ে সমস্ত নিরাপত্তা বাহিনী চলে গেছে। যদিও শহরের কেন্দ্রের বাইরে একটি এলাকায় বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ চলছিল।

আফগানিস্তানের অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র মাজার-ই-শরিফ। উজবেকিস্তান ও তাজিকিস্তানের সীমান্ত সংলগ্ন এ শহরটি গত শতকের নব্বইয়ের দশকে তালেবানের দখলে ছিল। মাজার-ই-শরিফ দখলের মধ্য দিয়ে আফগানিস্তানের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ১৯টি প্রাদেশিক রাজধানীর নিয়ন্ত্রণ এখন তালেবানদের হাতে।

শনিবার মাজার-ই-শরিফ ছাড়াও তালেবান যোদ্ধারা দেশটির পাকতিকা ও কুনার প্রদেশের রাজধানী শহরও দখলে নেয়। এখন রাজধানী কাবুল ও জালালাবাদে সাঁড়াশি আক্রমণ পরিচালনার প্রস্তুতি শুরু করেছে তালেবান।

দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় লোগার প্রদেশের আইনপ্রণেতা হোদা আহমাদি আল জাজিরাকে জানান, তালেবান যোদ্ধারা চর আসিয়াব জেলায় পৌঁছেছেন। তারা কাবুল থেকে মাত্র ১১ কিলোমিটার (৭ মাইল) দূরে অবস্থান করছেন।

এর মধ্যেই আফগানিস্তানের পশ্চিমাঞ্চলীয় হেরাত শহর থেকে সাবেক মুজাহিদ নেতা ও শহরটির সাবেক গভর্নর মোহাম্মদ ইসমাইল খান ও কয়েকজন উচ্চ পদস্থ সরকারি কর্মকর্তাকে আটক করেছে তালেবান। দেশটিতে চলমান সংঘাত এড়াতে কাতারে শান্তি আলোচনায় তালেবানকে ক্ষমতা ভাগাভাগির প্রস্তাব দিয়েছে আফগান সরকার। কাতারের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে তালেবানকে এ প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে গণমাধ্যম।

আফগানিস্তানে তালেবানের সহিংসতা দিন দিন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে জানিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তনিও গুতেরেস। তালেবানকে অবিলম্বে হামলা বন্ধ করে গৃহযুদ্ধ এড়াতে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।