ঢাকা ০৬:১১ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পাঞ্জশিরে তালেবান পতাকা, প্রতিরোধের ডাক বিরোধীদের

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ১১:৪৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 110

পাঞ্জশিরে তালেবানের পতাকা। ছবি: বিবিসি

আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা সর্বশেষ প্রদেশ পাঞ্জশির দখলের লড়াইয়ে নিজেদের বিজয় ঘোষণা করেছে তালেবান। অনলাইনে তালেবান একটি ভিডিও পোস্ট করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, তাদের যোদ্ধারা শহরে তালেবানের পতাকা উত্তোলন করছে। মঙ্গলবার বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

তবে বিদ্রোহী যোদ্ধারা দাবি করেছেন যে, তারা এখনো গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় অবস্থান নিয়ে রয়েছেন এবং তাদের লড়াই অব্যাহত আছে। এ পরিস্থিতিতে তালেবানের বিরুদ্ধে পুরো আফগানিস্তানে সবাইকে জেগে ওঠার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তাদের নেতা।

সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা একটি অডিও বার্তায় ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট অফ আফগানিস্তান (এনআরএফ) অভিযোগ করেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তালেবানকে বৈধতা দিচ্ছে; তাদের সামরিক ও রাজনৈতিক আস্থা তৈরিতে সহায়তা করছে।

তিনি বলেন, ‘আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, দেশের ভেতরে অথবা বাইরে, আপনাদের সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি দেশের মর্যাদা, স্বাধীনতা এবং সমৃদ্ধির জন্য জেগে উঠুন।’

তিন সপ্তাহ আগে সারা দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। পশ্চিমা দেশগুলো সমর্থিত সরকারের পতন ঘটিয়ে গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল দখল কওে নেয় সংগঠনটি। ফলে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর ২০ বছরের অভিযানের সমাপ্তি ঘটে।

রুক্ষ পাহাড়ি উপত্যকা পাঞ্জশিরে দেড় লাখ থেকে দুই লাখ মানুষের বসবাস রয়েছে। ৮০’র দশকে সোভিয়েত অভিযান এবং ১৯৯৬-২০০১ তালেবান শাসনের সময়েও এই এলাকা বিদ্রোহের কেন্দ্রভূমি ছিল।

তালেবানের দাবি নাকচ করে দিয়ে এনআরএফের মুখপাত্র আলি মাইসাম বিবিসিকে বলেন, ‘তালেবান পাঞ্জশির দখল করতে পারেনি।’ তাদের টুইটার একাউন্টে একটি পোস্টে বলা হয়েছে, ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতা না পাওয়া পর্যন্ত তালেবান এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে।’

তবে তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই বিজয়ের মাধ্যমে আমাদের দেশকে পুরোপুরি কদর্য যুদ্ধ থেকে বের করে আনা হলো।’

তালেবানবিরোধী সংগঠন এনআরএফের সদস্যরা। ছবি: বিবিসি

বিবিসির সংবাদদাতা লিস ডুসেট বলছেন, পাঞ্জশির যদিও আফগানিস্তানের ছোট একটি প্রদেশ, কিন্তু এই এলাকার কিংবদন্তি রয়েছে। রুক্ষ পাহাড়ি এই এলাকা সোভিয়েতরা নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি, তালেবানও তাদের আগের মেয়াদে ব্যর্থ হয়েছে।

হয়তো তালেবান পাঞ্জশিরের গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এলাকাগুলো দখল করতে পারে, কিন্তু পাহাড়ি অনেক স্থান শুধু এখানকার বাসিন্দাদেরই চেনা। সেখানে হয়তো তারা বিদ্রোহী যোদ্ধাদের আশ্রয় দিচ্ছে।

তবে তালেবান যেভাবে অগ্রগতি করে যাচ্ছে, তাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পাঞ্জশির দখল হবে তাদের নতুন ইসলামিক আমিরাতের মুকুটে একটা হিরের মতো। কিন্তু বিদ্রোহী নেতা আহমাদ মাসুদ এবং তালেবান সমালোচক আমরুল্লাহ সালেহও এত সহজে হয়তো ছেড়ে দেবেন না।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পাঞ্জশিরে তালেবান পতাকা, প্রতিরোধের ডাক বিরোধীদের

আপডেট : ১১:৪৭:৩৭ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ সেপ্টেম্বর ২০২১
আফগানিস্তানে তালেবানের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকা সর্বশেষ প্রদেশ পাঞ্জশির দখলের লড়াইয়ে নিজেদের বিজয় ঘোষণা করেছে তালেবান। অনলাইনে তালেবান একটি ভিডিও পোস্ট করেছে, যেখানে দেখা যাচ্ছে যে, তাদের যোদ্ধারা শহরে তালেবানের পতাকা উত্তোলন করছে। মঙ্গলবার বিবিসি এ খবর জানিয়েছে।

তবে বিদ্রোহী যোদ্ধারা দাবি করেছেন যে, তারা এখনো গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোয় অবস্থান নিয়ে রয়েছেন এবং তাদের লড়াই অব্যাহত আছে। এ পরিস্থিতিতে তালেবানের বিরুদ্ধে পুরো আফগানিস্তানে সবাইকে জেগে ওঠার জন্য আহ্বান জানিয়েছেন তাদের নেতা।

সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা একটি অডিও বার্তায় ন্যাশনাল রেজিস্ট্যান্স ফ্রন্ট অফ আফগানিস্তান (এনআরএফ) অভিযোগ করেছে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় তালেবানকে বৈধতা দিচ্ছে; তাদের সামরিক ও রাজনৈতিক আস্থা তৈরিতে সহায়তা করছে।

তিনি বলেন, ‘আপনি যেখানেই থাকুন না কেন, দেশের ভেতরে অথবা বাইরে, আপনাদের সবাইকে আহ্বান জানাচ্ছি দেশের মর্যাদা, স্বাধীনতা এবং সমৃদ্ধির জন্য জেগে উঠুন।’

তিন সপ্তাহ আগে সারা দেশের নিয়ন্ত্রণ নিয়েছে তালেবান। পশ্চিমা দেশগুলো সমর্থিত সরকারের পতন ঘটিয়ে গত ১৫ আগস্ট রাজধানী কাবুল দখল কওে নেয় সংগঠনটি। ফলে আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর ২০ বছরের অভিযানের সমাপ্তি ঘটে।

রুক্ষ পাহাড়ি উপত্যকা পাঞ্জশিরে দেড় লাখ থেকে দুই লাখ মানুষের বসবাস রয়েছে। ৮০’র দশকে সোভিয়েত অভিযান এবং ১৯৯৬-২০০১ তালেবান শাসনের সময়েও এই এলাকা বিদ্রোহের কেন্দ্রভূমি ছিল।

তালেবানের দাবি নাকচ করে দিয়ে এনআরএফের মুখপাত্র আলি মাইসাম বিবিসিকে বলেন, ‘তালেবান পাঞ্জশির দখল করতে পারেনি।’ তাদের টুইটার একাউন্টে একটি পোস্টে বলা হয়েছে, ন্যায়বিচার এবং স্বাধীনতা না পাওয়া পর্যন্ত তালেবান এবং তাদের সহযোগীদের বিরুদ্ধে লড়াই চলবে।’

তবে তালেবানের মুখপাত্র জাবিউল্লাহ মুজাহিদ একটি বিবৃতিতে বলেছেন, ‘এই বিজয়ের মাধ্যমে আমাদের দেশকে পুরোপুরি কদর্য যুদ্ধ থেকে বের করে আনা হলো।’

তালেবানবিরোধী সংগঠন এনআরএফের সদস্যরা। ছবি: বিবিসি

বিবিসির সংবাদদাতা লিস ডুসেট বলছেন, পাঞ্জশির যদিও আফগানিস্তানের ছোট একটি প্রদেশ, কিন্তু এই এলাকার কিংবদন্তি রয়েছে। রুক্ষ পাহাড়ি এই এলাকা সোভিয়েতরা নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেনি, তালেবানও তাদের আগের মেয়াদে ব্যর্থ হয়েছে।

হয়তো তালেবান পাঞ্জশিরের গুরুত্বপূর্ণ আবাসিক এলাকাগুলো দখল করতে পারে, কিন্তু পাহাড়ি অনেক স্থান শুধু এখানকার বাসিন্দাদেরই চেনা। সেখানে হয়তো তারা বিদ্রোহী যোদ্ধাদের আশ্রয় দিচ্ছে।

তবে তালেবান যেভাবে অগ্রগতি করে যাচ্ছে, তাও বেশ গুরুত্বপূর্ণ। পাঞ্জশির দখল হবে তাদের নতুন ইসলামিক আমিরাতের মুকুটে একটা হিরের মতো। কিন্তু বিদ্রোহী নেতা আহমাদ মাসুদ এবং তালেবান সমালোচক আমরুল্লাহ সালেহও এত সহজে হয়তো ছেড়ে দেবেন না।