ঢাকা ১০:০৮ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নিষিদ্ধ হতে পারে আফগান নারী ক্রিকেট  

প্রতিনিধির নাম
  • আপডেট : ০৩:৩৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
  • / 135

প্রতীকী ছবি

আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের শাসনে নারী ক্রিকেট নিষিদ্ধ হতে পারে। তালেবান সরকারের এক কর্মকর্তার কথায় সেই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। বুধবার ব্রিটেনের দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন এ খবর জানিয়েছে।

নতুন তালেবান সরকারের আমলে ক্রিকেট ছাড়া অন্য খেলাধুলায়ও নারীদের অংশগ্রহণ স্থগিত হয়ে পড়তে পারে। তালেবান সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক কমিশনের উপ-প্রধান আহমেদুল্লাহ ওয়াসিক অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম এসবিএসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, নারীদের খেলাধুলার না প্রয়োজন আছে, না আছে কোনো উপযোগ।

আহমেদুল্লাহ ওয়াসিক বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, নারীদের ক্রিকেট খেলতে দেয়া হবে। কারণ, নারীদের ক্রিকেট খেলার কোনো প্রয়োজন নেই।’

তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটে তারা (নারী) এমন অবস্থায় পড়বেন, যখন তাদের মুখ ও শরীরের অংশ পোশাকবিহীন হয়ে পড়বে। ইসলাম নারীকে এভাবে দেখতে চায় না।’

তালেবান নেতা বলেন, ‘এটা গণমাধ্যমের যুগ; তাদের ছবি ও ভিডিও তৈরি হবে; তারপর তা লোকজন দেখবে। ইসলাম ও আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাত নারীদের ক্রিকেট খেলতে দিতে পারে না।’

গত ১৫ আগস্ট কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। এর পরপরই তারা ঘোষণা দেয় যে, তাদের সরকার গণতান্ত্রিক হবে না; চলবে ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী। প্রায় তিন সপ্তাহ পর মঙ্গলবার আফগানিস্তানকে ‘ইসলামিক আমিরাত’ ঘোষণা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা করে তালেবান।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান সরকারে এমন ব্যক্তিও রয়েছেন, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় আছেন বা যার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নতুন তালেবান সরকারে হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা আছেন শীর্ষ নেতা হিসেবে। ২০১৬ সালের মে মাসে তালেবানের ‘সর্বোচ্চ নেতা’ হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।

তালেবান সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদে মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ। ১৯৯৪ সালে যে চারজন মিলে আফগানিস্তানে তালেবান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, মোল্লাহ মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ তাদের একজন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে রয়েছেন সিরাজুদ্দিন হাক্কানি। তিনি মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় রয়েছেন।

তালেবান সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আছেন আবদুল গনি বারাদার। তিনি তালেবানের একজন সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর অভিযানে তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি তাদের একজন প্রধান ব্যক্তিতে পরিণত হন।

বারাদার ছাড়াও এ অন্তর্বর্তী সরকারে আরও একজন উপ-প্রধানমন্ত্রী আছেন। তিনি হচ্ছেন মৌলভি আবদুল সালাম হানাফি। নতুন তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে আছেন মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব। তিনি তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লাহ ওমরের সন্তান।

তালেবানের অন্তর্বর্তী সরকারে আরও যারা রয়েছেন, তাদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আছেন মৌলভী আমির খান মুত্তাকি; অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন মোল্লাহ হিদায়াত বদ্রী, বিচারমন্ত্রী হিসেবে আছেন আবদুল হাকিম ইশাকজী ও তথ্যমন্ত্রী হয়েছেন খাইরুল্লাহ সাইদউয়ালি খয়েরখা। নতুন তালেবান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন মওলাউই নূরউল্লাহ মুনির। সরকারে কোনো নারীর অংশগ্রহণ নেই।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

নিষিদ্ধ হতে পারে আফগান নারী ক্রিকেট  

আপডেট : ০৩:৩৭:১০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০২১
আফগানিস্তানে ক্ষমতাসীন তালেবান সরকারের শাসনে নারী ক্রিকেট নিষিদ্ধ হতে পারে। তালেবান সরকারের এক কর্মকর্তার কথায় সেই ইঙ্গিত পাওয়া গেছে। বুধবার ব্রিটেনের দ্য গার্ডিয়ান অনলাইন এ খবর জানিয়েছে।

নতুন তালেবান সরকারের আমলে ক্রিকেট ছাড়া অন্য খেলাধুলায়ও নারীদের অংশগ্রহণ স্থগিত হয়ে পড়তে পারে। তালেবান সরকারের সংস্কৃতি বিষয়ক কমিশনের উপ-প্রধান আহমেদুল্লাহ ওয়াসিক অস্ট্রেলিয়ার সংবাদমাধ্যম এসবিএসকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, নারীদের খেলাধুলার না প্রয়োজন আছে, না আছে কোনো উপযোগ।

আহমেদুল্লাহ ওয়াসিক বলেন, ‘আমি মনে করি না যে, নারীদের ক্রিকেট খেলতে দেয়া হবে। কারণ, নারীদের ক্রিকেট খেলার কোনো প্রয়োজন নেই।’

তিনি বলেন, ‘ক্রিকেটে তারা (নারী) এমন অবস্থায় পড়বেন, যখন তাদের মুখ ও শরীরের অংশ পোশাকবিহীন হয়ে পড়বে। ইসলাম নারীকে এভাবে দেখতে চায় না।’

তালেবান নেতা বলেন, ‘এটা গণমাধ্যমের যুগ; তাদের ছবি ও ভিডিও তৈরি হবে; তারপর তা লোকজন দেখবে। ইসলাম ও আফগানিস্তানের ইসলামিক আমিরাত নারীদের ক্রিকেট খেলতে দিতে পারে না।’

গত ১৫ আগস্ট কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয় তালেবান। এর পরপরই তারা ঘোষণা দেয় যে, তাদের সরকার গণতান্ত্রিক হবে না; চলবে ইসলামি শরিয়াহ অনুযায়ী। প্রায় তিন সপ্তাহ পর মঙ্গলবার আফগানিস্তানকে ‘ইসলামিক আমিরাত’ ঘোষণা দিয়ে অন্তর্বর্তী সরকার ঘোষণা করে তালেবান।

বিবিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, তালেবান সরকারে এমন ব্যক্তিও রয়েছেন, যিনি যুক্তরাষ্ট্রের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় আছেন বা যার ওপর জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। নতুন তালেবান সরকারে হিবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা আছেন শীর্ষ নেতা হিসেবে। ২০১৬ সালের মে মাসে তালেবানের ‘সর্বোচ্চ নেতা’ হিসেবে নির্বাচিত হন তিনি।

তালেবান সরকারের প্রধানমন্ত্রী পদে মোল্লা মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ। ১৯৯৪ সালে যে চারজন মিলে আফগানিস্তানে তালেবান প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, মোল্লাহ মোহাম্মদ হাসান আখুন্দ তাদের একজন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পদে রয়েছেন সিরাজুদ্দিন হাক্কানি। তিনি মার্কিন তদন্ত সংস্থা এফবিআইয়ের ‘মোস্ট ওয়ান্টেড’ তালিকায় রয়েছেন।

তালেবান সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আছেন আবদুল গনি বারাদার। তিনি তালেবানের একজন সহ-প্রতিষ্ঠাতা। ২০০১ সালে যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্বাধীন জোট বাহিনীর অভিযানে তালেবান ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি তাদের একজন প্রধান ব্যক্তিতে পরিণত হন।

বারাদার ছাড়াও এ অন্তর্বর্তী সরকারে আরও একজন উপ-প্রধানমন্ত্রী আছেন। তিনি হচ্ছেন মৌলভি আবদুল সালাম হানাফি। নতুন তালেবান সরকারের প্রতিরক্ষামন্ত্রী হিসেবে আছেন মোল্লা মোহাম্মদ ইয়াকুব। তিনি তালেবানের প্রতিষ্ঠাতা মোল্লাহ ওমরের সন্তান।

তালেবানের অন্তর্বর্তী সরকারে আরও যারা রয়েছেন, তাদের মধ্যে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে আছেন মৌলভী আমির খান মুত্তাকি; অর্থমন্ত্রীর দায়িত্বে আছেন মোল্লাহ হিদায়াত বদ্রী, বিচারমন্ত্রী হিসেবে আছেন আবদুল হাকিম ইশাকজী ও তথ্যমন্ত্রী হয়েছেন খাইরুল্লাহ সাইদউয়ালি খয়েরখা। নতুন তালেবান সরকারের শিক্ষামন্ত্রী হয়েছেন মওলাউই নূরউল্লাহ মুনির। সরকারে কোনো নারীর অংশগ্রহণ নেই।