পুনরুদ্ধার প্রকল্পের অগ্রগতি

দিনাজপুরে বিআইডব্লিউটিএ’র পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই, পুনর্ভবা নদীর নাব্যতা উন্নয়ন

নিজস্ব প্রতিবেদক
  • আপডেট : ০৫:১৪:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৩
  • / 198

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এ দেশের পরিবহন সেক্টরে নৌপরিবহন ব্যবস্থা একটি সাশ্রয়ী, আরামদায়ক ও পরিবেশ বান্ধব যোগাযোগ মাধ্যম। কিন্তু নাব্যতা সংকটের কারণে ধীরে ধীরে আমাদের এই অমূল্য ঐতিহ্যবাহী নৌপথ হারিয়ে যাচ্ছে। নৌ পথের নাব্যতা ফিরিয়ে এনে দেশের আবহমান ঐতিহ্য পুনঃরুদ্ধার সহসার্বিক আর্থ- সামাজিক উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। ১৯৬৩ সালে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪০০০ কি.মি.।

১৯৮৯ সালে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল ৬০০০ কি.মি. (বর্ষাকালে) এবং ৩৮০০ কি.মি. (শুষ্ক মৌসুমে)। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ড্রেজিং করে ৩৫০০ কি. মি. নৌপথ নাব্য করায় বর্তমানে বর্ষাকালে নৌপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৫০০ কি.মি. এবং শুষ্ক মৌসুমে নৌপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০০০ কি.মি. হয়েছে। নদীর পানি কমে যাওয়ায় একদিকে মাছের উৎপাদন ও সেচ কার্যক্রম ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।

অপরদিকে বন্যার পানি প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টির ফলে দেশের সার্বিক অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নৌ-পথের নাব্যতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ড্রেজিং করা অপরিহার্য হয়ে দেখা দিয়েছে।বর্তমান সরকার ১০০০০ (দশ হাজার) কি.মি. নৌপথ ড্রেজিং এর মাধ্যমে নাব্যতা পুনরুদ্ধারের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

সে আলোকে “পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই এবং পুনর্ভবা নদীর নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধার ”শীর্ষক প্রকল্পটি ০৪-১০-১৮ তারিখের একনেক সভায় অনুমোদন হয়।

প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
১। প্রকল্পের নাম : পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই এবং পুনর্ভবা নদীর নাব্যতাউন্নয়ন ও পুনরুদ্ধার।
২। উদ্যোগী মন্ত্রণালয়: নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
৩। বাস্তবায়ন কারী সংস্থা : বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ।
৪। বাস্তবায়ন কাল:  সেপ্টেম্বর ২০১৮ হতে জুন ২০২৪ পর্যন্ত।
৫। প্রকল্পের প্রাক্কলিত মূল্য:  ৪৩৭১০০.০০ লক্ষ টাকা।
৬। পরামর্শ কপ্রতিষ্ঠান : পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম)। প্রকল্পের উদ্দেশ্য গুরুত্বপূর্ণ ৪টি নদী যথাμমে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই এবং পুনর্ভবা নদী সারা বৎসরের জন্য নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধার। বৎসরব্যাপী পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান সমূহ নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা। ক্স নির্দিষ্ট নদীগুলোতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধিসহ কৃষি ও মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে সহায়তা করা।

খনন পরবর্তী সুবিধাদি
পানি ধারণ ক্ষমতাবৃদ্ধি পাবে ফলে ভুগর্ভস্থ পানির স্তর স্বাভাবিক থাকবে, নিম্নমূখী হওয়া রোধ করবে। অব্যাহত পলি অবক্ষেপণ হওয়ার কারণে নদীর গভীরতা কমার সাথে সাথে নদী প্রশস্ততা হারাচ্ছে। যে কারণে বন্যার সময় নদী তীরবর্তী ফসলি জমি ও স্থাপনা ভাঙ্গন কবলিত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

নদী হতে বিদ্যমান চর ও পলি পরিকল্পিতভাবে অপসারণ করা হলে নদীতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। নদীতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধির ফলে নদী হতে পূর্বের ন্যায় পরিবেশগত ও প্রকৃতিগত সুবিধা লাভে সহায়ক হবে এবং বন্যাকালীন নদী তীরবর্তী ফসলী জমি ও স্থাপনা ভাঙ্গন কবলিত হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পাবে।

নদী খননের ফলে মৎস্য সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সেচ সুবিধাদি বৃদ্ধি পাবে। ফলে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।সুতরাং প্রকল্পটি নারী ও শিশুদের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বৃহত্তর এলাকা জুড়ে নৌ-যোগাযোগ সহজতর হবে যা এতদঞ্চলের আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণে সহায়ক হবে।

প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি
ব্রহ্মপুত্র নদের বর্তমান দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৩ কি.মি. এবংপ্রস্থ ২০০ মি.। ব্রহ্মপুত্র নদে ১৬৯৪ লক্ষ ঘনমিটার খননের মাধ্যমে ২২০ কিলোমিটার নাব্য করার জন্য খনন কাজ শুরু করা হয়েছে যার প্রাক্কলিত ব্যয় ২৮৯৭.৪০ কোটি টাকা।
প্রথম পর্যায়ে গাজীপুরের কাপাসিয়া টোক থেকে জামালপুর পর্যন্ত ১৯১ কিঃমিঃ ২০টি লটের খনন কাজ চলমান রয়েছে। খনন অগ্রগতি ৩৪০ লক্ষ ঘনমিটার এবং ব্যয় ৫৭৩ কোটি টাকা। অবশিষ্ট নৌপথের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ধরলা নদী খনন

নদীটির বর্তমান দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০ কি.মি.। ধরলা নদীর খননের জন্য ০৭ টিলটের ঠিকাদারের সাথে চুক্তি স¤পন্ন হয়েছে। নদীটির মোট খননের পরিমাণ ১৩৫ লক্ষ ঘনমিটার। শীঘ্রই খনন কাজ শুরু করা হবে।

তুলাই নদী খনন
তুলাই নদীর ৬৮.০০ কি.মি. দৈর্ঘ্যের নাব্যতা পুনরুদ্ধারের জন্য পাঁচটি লটের মাধ্যমে নভেম্বর’২০২০ হতে খনন কাজ শুরু করা হয় যা ইতোমধ্যে ৯৫% ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ২৬.২৫ লক্ষ ঘনমিটার খনন করা হয়েছে এবং ব্যয় ৪২.৬১ কোটি টাকা। নদীটি সর্বনিম্ন ২০ মিটার হতে সর্বোচ্চ ৩০ মিটার প্রস্থে এবং ২.০৫ হতে ৩.০০ মিটার গভীরতায় খনন করা হয়েছে। তুলাই নদীর খননকৃত অংশে পানি ধরে রাখতে দুটি রাবারড্যাম ও একটি ওয়্যার নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে।

পুনর্ভবা নদী খনন
পুনর্ভবা নদীর ৭৮.০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নাব্যতা পুনরুদ্ধারে ১৪৫.৫৭ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সাতটি প্যাকেজের মাধ্যমে ৮৯.১৯ লক্ষ ঘনমিটার খননের লক্ষ্যে ফেব্রুয়ারি ২০২২ হতে খনন কাজ শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬৯.৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪২.২৯ লক্ষ ঘনমিটার খননের মাধ্যমে পুনর্ভবা নদীর ৪৭.১৩ কিলোমিটার অংশ নাব্য করা হয়েছে।

নদীটি সর্বনিম্ন ৮ মিটার হতে সর্বোচ্চ ৯০ মিটার প্রস্থে এবং ১.০৫ হতে ৩.০০ মিটার গভীরতায় খনন করা হচ্ছে। আগামী জুন ২০২৪ এ খনন কাজটি সমাপ্ত হবে বলে আশা করা যায়। পুনর্ভবা নদীর খননকৃত অংশে পানি ধরে রাখতে একটি রাবারড্যাম/ওয়্যার এবং কাঞ্চন সেতু এলাকায় নদীর দুপাশে জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে।

অফিস ভবন নির্মাণ
রংপুর বিভাগের নদীগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলায় বিআইডব্লিউটিএ’র অফিস ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।

ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন
১। কাজের নাম: চারতলা বিশিষ্ট অফিস ভবন ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নাম ঃ খান এ্যান্ড কেটি জেভি চুক্তিমূল্য: ৮৮৮.৬৭ লক্ষ টাকা ।
২। কাজের নাম : তুলাই নদীতে দুইটি রাবারড্যাম, একটি ওয়্যার ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নামঃ কেবিআই-আরসিসিএল-এটিসি জেবি চুক্তিমূল্যঃ ৩৬০১.৯৯ লক্ষ টাকা ।
৩। কাজের নাম : পুনর্ভবা নদীর তীর বরাবর ওয়াকওয়ে নির্মাণ।

নিউজটি শেয়ার করুন

ট্যাগস :

পুনরুদ্ধার প্রকল্পের অগ্রগতি

দিনাজপুরে বিআইডব্লিউটিএ’র পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই, পুনর্ভবা নদীর নাব্যতা উন্নয়ন

আপডেট : ০৫:১৪:০৩ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৪ অগাস্ট ২০২৩

বাংলাদেশ নদীমাতৃক দেশ। এ দেশের পরিবহন সেক্টরে নৌপরিবহন ব্যবস্থা একটি সাশ্রয়ী, আরামদায়ক ও পরিবেশ বান্ধব যোগাযোগ মাধ্যম। কিন্তু নাব্যতা সংকটের কারণে ধীরে ধীরে আমাদের এই অমূল্য ঐতিহ্যবাহী নৌপথ হারিয়ে যাচ্ছে। নৌ পথের নাব্যতা ফিরিয়ে এনে দেশের আবহমান ঐতিহ্য পুনঃরুদ্ধার সহসার্বিক আর্থ- সামাজিক উন্নয়ন ঘটানো সম্ভব। ১৯৬৩ সালে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল ২৪০০০ কি.মি.।

১৯৮৯ সালে নৌপথের দৈর্ঘ্য ছিল ৬০০০ কি.মি. (বর্ষাকালে) এবং ৩৮০০ কি.মি. (শুষ্ক মৌসুমে)। বিভিন্ন প্রকল্পের মাধ্যমে ড্রেজিং করে ৩৫০০ কি. মি. নৌপথ নাব্য করায় বর্তমানে বর্ষাকালে নৌপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৭৫০০ কি.মি. এবং শুষ্ক মৌসুমে নৌপথের দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০০০ কি.মি. হয়েছে। নদীর পানি কমে যাওয়ায় একদিকে মাছের উৎপাদন ও সেচ কার্যক্রম ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।

অপরদিকে বন্যার পানি প্রবাহে বাঁধা সৃষ্টির ফলে দেশের সার্বিক অর্থনীতির ওপর বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হচ্ছে। এ প্রেক্ষিতে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে নৌ-পথের নাব্যতা উন্নয়নের লক্ষ্যে ড্রেজিং করা অপরিহার্য হয়ে দেখা দিয়েছে।বর্তমান সরকার ১০০০০ (দশ হাজার) কি.মি. নৌপথ ড্রেজিং এর মাধ্যমে নাব্যতা পুনরুদ্ধারের মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।

সে আলোকে “পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই এবং পুনর্ভবা নদীর নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধার ”শীর্ষক প্রকল্পটি ০৪-১০-১৮ তারিখের একনেক সভায় অনুমোদন হয়।

প্রকল্পের সংক্ষিপ্ত বিবরণ
১। প্রকল্পের নাম : পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই এবং পুনর্ভবা নদীর নাব্যতাউন্নয়ন ও পুনরুদ্ধার।
২। উদ্যোগী মন্ত্রণালয়: নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়।
৩। বাস্তবায়ন কারী সংস্থা : বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ।
৪। বাস্তবায়ন কাল:  সেপ্টেম্বর ২০১৮ হতে জুন ২০২৪ পর্যন্ত।
৫। প্রকল্পের প্রাক্কলিত মূল্য:  ৪৩৭১০০.০০ লক্ষ টাকা।
৬। পরামর্শ কপ্রতিষ্ঠান : পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠান ইনস্টিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং (আইডব্লিউএম)। প্রকল্পের উদ্দেশ্য গুরুত্বপূর্ণ ৪টি নদী যথাμমে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তুলাই এবং পুনর্ভবা নদী সারা বৎসরের জন্য নাব্যতা উন্নয়ন ও পুনরুদ্ধার। বৎসরব্যাপী পণ্য ও যাত্রীবাহী নৌযান সমূহ নির্বিঘ্ন ও নিরাপদ চলাচল নিশ্চিত করা। ক্স নির্দিষ্ট নদীগুলোতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধিসহ কৃষি ও মৎস্য সম্পদ উন্নয়নে সহায়তা করা।

খনন পরবর্তী সুবিধাদি
পানি ধারণ ক্ষমতাবৃদ্ধি পাবে ফলে ভুগর্ভস্থ পানির স্তর স্বাভাবিক থাকবে, নিম্নমূখী হওয়া রোধ করবে। অব্যাহত পলি অবক্ষেপণ হওয়ার কারণে নদীর গভীরতা কমার সাথে সাথে নদী প্রশস্ততা হারাচ্ছে। যে কারণে বন্যার সময় নদী তীরবর্তী ফসলি জমি ও স্থাপনা ভাঙ্গন কবলিত হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।

নদী হতে বিদ্যমান চর ও পলি পরিকল্পিতভাবে অপসারণ করা হলে নদীতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে। নদীতে পানি প্রবাহ বৃদ্ধির ফলে নদী হতে পূর্বের ন্যায় পরিবেশগত ও প্রকৃতিগত সুবিধা লাভে সহায়ক হবে এবং বন্যাকালীন নদী তীরবর্তী ফসলী জমি ও স্থাপনা ভাঙ্গন কবলিত হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস পাবে।

নদী খননের ফলে মৎস্য সম্পদের উৎপাদন বৃদ্ধি এবং সেচ সুবিধাদি বৃদ্ধি পাবে। ফলে নারীদের কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি পাবে।সুতরাং প্রকল্পটি নারী ও শিশুদের জন্য ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে। প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে বৃহত্তর এলাকা জুড়ে নৌ-যোগাযোগ সহজতর হবে যা এতদঞ্চলের আঞ্চলিক বৈষম্য দূরীকরণে সহায়ক হবে।

প্রকল্পের বাস্তব অগ্রগতি
ব্রহ্মপুত্র নদের বর্তমান দৈর্ঘ্য প্রায় ২৮৩ কি.মি. এবংপ্রস্থ ২০০ মি.। ব্রহ্মপুত্র নদে ১৬৯৪ লক্ষ ঘনমিটার খননের মাধ্যমে ২২০ কিলোমিটার নাব্য করার জন্য খনন কাজ শুরু করা হয়েছে যার প্রাক্কলিত ব্যয় ২৮৯৭.৪০ কোটি টাকা।
প্রথম পর্যায়ে গাজীপুরের কাপাসিয়া টোক থেকে জামালপুর পর্যন্ত ১৯১ কিঃমিঃ ২০টি লটের খনন কাজ চলমান রয়েছে। খনন অগ্রগতি ৩৪০ লক্ষ ঘনমিটার এবং ব্যয় ৫৭৩ কোটি টাকা। অবশিষ্ট নৌপথের দরপত্র প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

ধরলা নদী খনন

নদীটির বর্তমান দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০ কি.মি.। ধরলা নদীর খননের জন্য ০৭ টিলটের ঠিকাদারের সাথে চুক্তি স¤পন্ন হয়েছে। নদীটির মোট খননের পরিমাণ ১৩৫ লক্ষ ঘনমিটার। শীঘ্রই খনন কাজ শুরু করা হবে।

তুলাই নদী খনন
তুলাই নদীর ৬৮.০০ কি.মি. দৈর্ঘ্যের নাব্যতা পুনরুদ্ধারের জন্য পাঁচটি লটের মাধ্যমে নভেম্বর’২০২০ হতে খনন কাজ শুরু করা হয় যা ইতোমধ্যে ৯৫% ভাগ সম্পন্ন হয়েছে। ২৬.২৫ লক্ষ ঘনমিটার খনন করা হয়েছে এবং ব্যয় ৪২.৬১ কোটি টাকা। নদীটি সর্বনিম্ন ২০ মিটার হতে সর্বোচ্চ ৩০ মিটার প্রস্থে এবং ২.০৫ হতে ৩.০০ মিটার গভীরতায় খনন করা হয়েছে। তুলাই নদীর খননকৃত অংশে পানি ধরে রাখতে দুটি রাবারড্যাম ও একটি ওয়্যার নির্মাণের কাজ শুরু হচ্ছে।

পুনর্ভবা নদী খনন
পুনর্ভবা নদীর ৭৮.০০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের নাব্যতা পুনরুদ্ধারে ১৪৫.৫৭ কোটি টাকা প্রাক্কলিত ব্যয়ে সাতটি প্যাকেজের মাধ্যমে ৮৯.১৯ লক্ষ ঘনমিটার খননের লক্ষ্যে ফেব্রুয়ারি ২০২২ হতে খনন কাজ শুরু করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৬৯.৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে ৪২.২৯ লক্ষ ঘনমিটার খননের মাধ্যমে পুনর্ভবা নদীর ৪৭.১৩ কিলোমিটার অংশ নাব্য করা হয়েছে।

নদীটি সর্বনিম্ন ৮ মিটার হতে সর্বোচ্চ ৯০ মিটার প্রস্থে এবং ১.০৫ হতে ৩.০০ মিটার গভীরতায় খনন করা হচ্ছে। আগামী জুন ২০২৪ এ খনন কাজটি সমাপ্ত হবে বলে আশা করা যায়। পুনর্ভবা নদীর খননকৃত অংশে পানি ধরে রাখতে একটি রাবারড্যাম/ওয়্যার এবং কাঞ্চন সেতু এলাকায় নদীর দুপাশে জনগণের চলাচলের সুবিধার্থে ওয়াকওয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে।

অফিস ভবন নির্মাণ
রংপুর বিভাগের নদীগুলোর রক্ষণাবেক্ষণ কার্যক্রম ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে দিনাজপুর জেলার বিরল উপজেলায় বিআইডব্লিউটিএ’র অফিস ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে।

ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন
১। কাজের নাম: চারতলা বিশিষ্ট অফিস ভবন ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নাম ঃ খান এ্যান্ড কেটি জেভি চুক্তিমূল্য: ৮৮৮.৬৭ লক্ষ টাকা ।
২। কাজের নাম : তুলাই নদীতে দুইটি রাবারড্যাম, একটি ওয়্যার ও আনুষঙ্গিক সুবিধাদি নির্মাণ। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের নামঃ কেবিআই-আরসিসিএল-এটিসি জেবি চুক্তিমূল্যঃ ৩৬০১.৯৯ লক্ষ টাকা ।
৩। কাজের নাম : পুনর্ভবা নদীর তীর বরাবর ওয়াকওয়ে নির্মাণ।